উজ্জ্বল সম্ভাবনায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষিপন্য
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ১০ জানুয়ারি, ২০১৭, ০৪:৪৭:১৮ বিকাল
অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কৃষিখাতে রয়েছে বিরাট সম্ভাবনা। সাধারণ কৃষকরা কোনোরূপ প্রশিক্ষণ গ্রহণ না করেই অতীত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে সৃষ্টি করেছেন রেকর্ড। গ্রামীণ অর্থনীতির প্রাণশক্তি কৃষিখাত। কৃষিপণ্য উৎপাদনে রেকর্ডের পর রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। আসছে বিরাট গতিশীলতা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী সারাদেশের মধ্যে সবজি, ফুল, রেণুপোনা, খেজুরের গুড়, সাদা সোনা চিংড়ি, মশুর, মরিচ ও মটরসহ বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। ধান, ভুট্টা উৎপাদনে রয়েছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে। শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখার প্রাণান্ত চেষ্টা চলছে। কর্মবীর কৃষকদের কোনো পেনশন নেই, নেই অবসর কিংবা ছুটিছাটা। দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন কৃষাণ-কিষাণী। কৃষি ভান্ডার হিসেবে খ্যাত অঞ্চলটি বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে বারবার। কৃষি ইনস্টিটিউটের গবেষণালব্ধ জ্ঞান ও প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়ার জোরালো পদক্ষেপ দরকার। যশোর, খুলনা, মাগুরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের (বর্তমানে যশোরের ছয়টি জেলা ও খুলনার চারটি জেলা নিয়ে গঠিত দু’টি কৃষি অঞ্চল) এই ১০ জেলায় মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৬৫ হেক্টর। প্রায় তিন কোটি জনসংখ্যার এই অঞ্চলটিতে ৭ হাজার ৮৩০ গ্রাম রয়েছে। প্রতিটি গ্রামেই গড়ে শতকরা প্রায় ৮৫ ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। ভূমিহীন, প্রান্তিক, ক্ষুদ্র, মধ্যম ও বড় চাষির সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখ। মাঠে মাঠে বিভিন্ন ফসলের সবুজের অপরূপ সৌন্দর্য তৈরি করার ধারক কৃষককূল বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে বিপ্ল¬ব ঘটিয়েছেন। এবার রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন তার বড় প্রমাণ। এ অঞ্চলে খাদ্য চাহিদা রয়েছে ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ৬০৯ মেট্রিক টন। গড় হিসাবে ধান ও গমসহ খাদ্যশস্য উৎপাদন হয় ৪১ লাখ ৮ হাজার ২৯০ মেট্রিক টন। খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকে ১০ লাখ ৩২ হাজার ৬৮১ মেট্রিক টন। কোনোক্রমেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে খাদ্য ঘাটতি স্পর্শ করে না। দুবাই, কুয়েত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা ও জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের বেগুন, শিম, লাউ, পালং শাক, আদা, লেবু, পটল, কচুর লতির গোড়ার অংশ ও কলাসহ সবজি রফতানি হয়। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উৎপাদিত কৃষিপণ্য সংরক্ষণ এবং রফতানির ক্ষেত্রে আরো গতিশীল করার উদ্যোগ নেয়া হলে অঞ্চলটি আবার স্বর্ণযুগে ফিরে যেতে পারবে। কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্যের উপযুক্ত মূল্যপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা এবং কৃষির সমস্যাদির সমাধান ঠিকমত করতে পারলে দেশের অর্থনীতিতে এই খাত ব্যাপক ভুমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
বিষয়: বিবিধ
৭৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন