অর্থনৈতিক উন্নয়নে কালো সোনা ‘কয়লা’
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২৮ নভেম্বর, ২০১৬, ০৬:১০:৫৫ সন্ধ্যা
কয়লা একটি প্রাকৃতিক সম্পদ। কয়লার সঠিক ব্যবহার দেশের সমৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাস, যা বিদ্যুত ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দ্বিতীয় প্রধান খনিজ সম্পদ কয়লা, যা এখন পর্যন্ত অব্যবহৃত। কিন্তু জ্বালানি তেল ও গ্যাস মহার্ঘ্য হয়ে ওঠায় কয়লাই এখন রীতিমতো কালো সোনা। কার্বন মৌলের অবিশুদ্ধ রূপ কয়লা। ক্রান্তীয় অঞ্চলের জলমগ্ন পরিবেশে উদ্ভিদরাজির সুদীর্ঘকাল ধরে চাপা পড়ে থাকার ফলে উৎপন্ন কালো অথবা গাঢ় বাদামী বর্ণের খনিজ পদার্থই কয়লা।এর প্রধান ব্যবহার জ্বালানি হিসেবে। রাসায়নিক শিল্পেও এর ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। দেশে এখন পর্যন্ত পাওয়া হিসাব অনুসারে কয়লার মজুদের পরিমাণ ৩ হাজার ৭২০ মিলিয়ন মেট্রিক টন। আবিষ্কৃত ৭টি কয়লাখনির মধ্যে অন্যতম বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উন্নয়নের কাজ শুরু হয় ১৯৯৬ সালে। এর উন্নয়নে ১৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এ খনিতে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় এবং খনিটি থেকে দৈনিক প্রায় ১৫০০ টন কয়লা উত্তোলিত হচ্ছে। দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির পর এবার নবাবগঞ্জের দীঘিপাড়া খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। হিসাব অনুযায়ী, সম্ভাবনাময় দীঘিপাড়া কয়লা খনিতে প্রায় ৮৬৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লা মজুদ আছে। যা উত্তোলন করা গেলে ১ হাজার ৫শ’ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুত উৎপাদন সম্ভব হবে। দীঘিপাড়া কয়লা খনিতে যে পরিমাণ কয়লা মজুদ রয়েছে তার অর্ধেক পরিমাণ কয়লা উত্তোলন করা গেলে তা দিয়ে দেশের জ্বালানি চাহিদা পুরণে বড় ভূমিকা রাখা যাবে। পেট্রোবাংলার হিসাব অনুযায়ী, দেশে এ পর্যন্ত ৫টি কয়লা খনিতে মোট ৩ হাজার ৫৬৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লা মজুদ রয়েছে। যার মধ্যে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় ৩৯০ মিলিয়ন মেট্রিক টন ও ফুলবাড়ীয়া ৫৭২ মিলিয়ন মেট্রিক টন, নবাবগঞ্জের দীঘিপাড়ায় ৮৬৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন, রংপুরের খালাসপীরে ৬৮৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন এবং জয়পুরহাটের জামালগঞ্জে ১ হাজার ৫৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লা মজুদ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২০০৫ সালে দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। বাকি ৪টি খনির মধ্যে জামালগঞ্জ কয়লা খনি থেকে গ্যাস ও দীঘিপাড়া খনি থেকে কয়লা উত্তেলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আশার খবর- ভূতাত্ত্বিক তথ্য সংগ্রহ ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানে ড্রিলিং করে নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার তাজপুরে চুনাপাথরের সন্ধান পাওয়া গেছে। যার পরিমাণ প্রায় দুই হাজার মিলিয়ন মেট্রিকটনের বেশি। সেখানে কয়লা পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যদি কয়লার খনিও পাওয়া যায়, তাহলে এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে। এলাকায় ভারি শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। লোকজনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হবে।
বিষয়: বিবিধ
৭৭৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন