নৌ রুটে নব জোয়ার
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ১২ নভেম্বর, ২০১৬, ০৪:১৯:৪৫ বিকাল
একদা বাংলাদেশের অর্থনীতির বিকাশে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতো নৌ পথ। এখনও আবহমান বাংলার গ্রামীন জনপদে নৌ পথের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু কিছু অসাধু মানুষের সীমাহীন লোভ, প্রয়োজনীয় গণ সচেতনতার অভাব আর রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সময়োপযোগী ও দূরদর্শী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সীমাবদ্ধতা ক্রমশ এই বিপুল
সম্ভাবনাময় যোগাযোগ সুবিধাকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে উপনীত করেছে। তবে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নানা ইতিবাচক উদ্যোগ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের প্রধান অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল রুট চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ করিডোরে নৌ-পরিবহন সেবা বৃদ্ধির জন্য খনন কার্য পরিচালনার পরিকল্পনা গৃহিত হয়েছে। একইসঙ্গে ঢাকার শ্মশানঘাটে নতুন একটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর এবং বরিশালে ৩টি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, পানগাঁও কার্গো টার্মিনাল, ১৪টি ল্যান্ডিং স্টেশন ও লঞ্চঘাট নির্মাণ করা হবে। এ জন্য ৩ হাজার ২শ কোটি টাকার বাংলাদেশ আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন প্রকল্প-১ অনুমোদিত হয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক)। অচিরেই দেশের নৌরুটে নব জোয়ার সূচিত হবে। এ প্রকল্পের আওতায় নৌযানের জন্য ৬টি আশ্রয়কেন্দ্র, ২৫টি পরিদর্শন জাহাজও সংগ্রহ করা হবে, প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্ব ব্যাংকের ২২৮০ কোটি টাকার সহায়তা পাওয়া যাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম নৌ-রুটের ভ্রমণ সময় ৪০ ঘণ্টা হতে ১০ ঘণ্টা কমে যাবে। চলতি বছরে শুরু করে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ হবে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সুপার করিডোর। এ জন্য দেশে সড়ক ও রেল যোগাযোগের পাশাপাশি নৌ-যোগাযোগের উন্নয়নে অভ্যন্তরীণ নদীসমূহের নাব্যতা বৃদ্ধি করা আবশ্যক। একনেক সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্প সমূহ হচ্ছে- ২৮৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়ক উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, ৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯টি নৌ পুলিশ ফাঁড়ি ও ব্যারাক নির্মাণ প্রকল্প। ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে জামালপুর-মাদারগঞ্জ মহাসড়কে ৩টি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প। ২ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রীড ভিত্তিক বিদ্যুৎ সরবরাহের দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প, ৯১০ কোটি টাকা ব্যয়ে তিতাস গ্যাস ফিল্ডের লোকশেন-এ ওয়েলহেড কম্প্রেসার স্থাপন প্রকল্প, ৮৬৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে পটুয়াখালী ১৩২০ মে.ও. কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন এবং পুনর্বাসন প্রকল্প, ৩২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালী এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প, ২৩৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে কুমার নদ পুনঃখনন প্রকল্প, ২৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যমান পুলিশ হাসপাতাল সমূহের আধুনিকায়ন প্রকল্প, ২৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিএনএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প (১ম সংশোধিত) এবং ১১৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা সিএমএইচ সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত)।
বিষয়: বিবিধ
১০৯২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন