দেশের উন্নয়ন বিরোধীরা সরব সবসময়
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ৩০ অক্টোবর, ২০১৬, ০৬:৩০:৫৭ সন্ধ্যা
বাংলাদেশের রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন নিয়ে এ-রকম অনেক তথ্য প্রচার করছে কিছু মিডিয়া। যেখানে স্পষ্টত হরহামেশা দায়িত্বশীলতা ও সতর্কতার পরিবর্তে অজ্ঞতা ও মিথ্যাচার অনুশীলিত হচ্ছে। যেমন, শিরোনামের সঙ্গে সংবাদের বৈসাদৃশ্য, ভুল তথ্য পরিবেশন, মনগড়া ও অনুমাননির্ভর সংবাদ তৈরি করা প্রভৃতি। এর পেছনে রূপপুর নিয়ে গভীর কোন এজেন্ডার বাস্তবায়ন নেই এবং এটি নিছক-ই সংবাদ পরিবেশন। ১৯৭৯ সালের ২৮ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থ্রি-মাইল আইল্যান্ড পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আমেরিকাসহ পৃথিবীর মানুষের মধ্যে পরমাণুভীতি দেখা দেয়। যদিও ওই দুর্ঘটনায় তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতিই হয়নি। এদিকে থ্রি-মাইলের দুর্ঘটনাকে নিয়ে নির্মিত হয় ‘দ্য চায়না সিনড্রোম’ নামে মুভি। যাতে দেখানো হয়েছিল থ্রি-মাইল আইল্যান্ডের দুর্ঘটনাকবলিত রি-এ্যাক্টর গলে চীন পর্যন্ত গর্ত সৃষ্টি করবে। ‘দ্য চায়না সিনড্রোম’ মুভির ওই দৃশ্য বাংলা সিনেমায় মারামারির মতো অবাস্তব হলেও মানুষের মনোজগতে পরমাণুভীতি সৃষ্টিতে তথা প্রজন্ম পরম্পরায় পারমাণবিক বিদ্যুত উৎপাদনে নেতিবাচক প্রচারণায় এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। বস্তুত, ১৯৮৬ সালে চেরনোবিল ও ২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমা দাইচির পারমাণবিক দুর্ঘটনাও মানুষের মধ্যে পরমাণুভীতি ছড়িয়ে দিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। তাই শান্তিপূর্ণ কাজে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার সম্পর্কে যে কোন তথ্য প্রচার করে মানুষকে ভয় পাইয়ে দেয়া যায়। বিভ্রান্ত করা যায়; বিভ্রান্তি থেকে গণবিরোধিতা এবং এই ভিত্তিকে কাজে লাগিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন তথা কোন দেশের পারমাণবিক বিদ্যুত উৎপাদন ও ব্যবহারের যুগে পদার্পণে ষড়যন্ত্রও করতে পারে কোন কোন মহল। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাশিয়া ফেরত নেবে না-এই শিরোনামেই কাজ হয়ে যাবে মানে রূপপুরবিরোধী সেন্টিমেন্ট বৃদ্ধি পাবে, মানুষ ভীত হয়ে যাবে। অনেকটা দ্য চায়না সিনড্রোম মুভির দৃশ্যের মতো, তাহলে বলতে হবে তারা প্রাথমিকভাবে সফল হয়েছে। কারণ ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে দেশের ১০ বুদ্ধিজীবী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছেন। এদিকে আবার সুন্দরবন ধ্বংস করে দেবে, জীববৈচিত্র্য বিনষ্ট হবে, নদীর পানি, মাটি, বায়ু- সবই দূষিত হয়ে যাবে এক মহাদূষণকারী রামপালে নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুতকেন্দ্র দ্বারা এ রকম প্রচারণায় রামপালবিরোধীরা সরব। তাদের বক্তৃতা, বিবৃতি ও লেখায় আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের উদ্বৃতিও স্থান পাচ্ছে। এদিকে রামপালবিরোধী আন্দোলনে গতির সঞ্চার করেছে ইউনেস্কো। সংস্থাটি সরকারকে রামপালের ব্যাপারে রীতিমতো আল্টিমেটাম দিয়ে বসল। আর এই আল্টিমেটামকে শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে রামপালবিরোধীরা। কিন্তু ইউনেস্কো এ ধরনের আল্টিমেটাম প্রদানের অধিকার রাখে কি, এদিকটি বিবেচনা না করে রামপাল বিদ্যুতকেন্দ্রকে সরিয়ে নেয়ার আল্টিমেটামকে আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে নিয়ে লাফালাফি করছে রামপালবিরোধীরা। কুচক্রি মহল একটি ইস্যু পেলেই হয়, তা নিয়েই সরব থাকে সবসময়।
বিষয়: রাজনীতি
৯০২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন