কেমন হবে বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্ট?
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২২ অক্টোবর, ২০১৬, ০৩:৫২:২৮ দুপুর
বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে দেশের অবকাঠামো নির্মাণে একের পর এক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছে। টেকসই, দীর্ঘমেয়াদী ও সময়োপযোগী অবকাঠামোই একটি দেশের স্বনির্ভরতা অর্জনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ। শক্তিশালী অবকাঠামোই একটি দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করে। সরকারের ঘোষিত সর্ববৃহৎ মেগা প্রকল্প হচ্ছে বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্ট। কমপক্ষে দুটো পদ্মা সেতুর সমান ব্যয়ে নির্মিত হবে এই এয়ারপোর্ট। গত মাসেই ১২০ কোটি টাকায় এ প্রকল্পের সমীক্ষা প্রতিবেদনের কাজ দেয়া হয়েছে জাপানী নির্মাণ সংস্থা নিপ্পনকে। প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্টকে বর্তমান বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দশটি বিমানবন্দরের সঙ্গে তুলনীয় একটি অত্যাধুনিক, আকর্ষণীয় বিমানবন্দর হিসিবে নির্মাণে উপযুক্ত স্থান নির্বাচন, নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয়, সময় ও অবকাঠামোগত সুবিধাদি তৈরিতে কি পরিমাণ অর্থ ব্যয় হতে পারে - তারও ধারণাপত্র থাকবে সমীক্ষায়। প্রাথমিকভাবে চারটি স্থানে জরিপ চালিয়ে যেটা সার্বিক বিচারে উপযোগী হবে সেটাই নির্ধারণ করা হবে। আগামী বছরের ডিসেম্বরে সমীক্ষা প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যেই নক্সা ও অবকাঠামোগত সব স্থাপনার বিষয় চূড়ান্ত করা হবে। ২০১৯ সালের মধ্যেই নান্দনিক ও অভূতপূর্ব নির্মাণশৈলীর দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম স্থাপনা বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্টের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। আগামী এক শ’ বছরের চাহিদা এবং ক্রমোন্নতির পরিকল্পনা বিবেচনায় নিয়ে সাজানো হবে এর অবকাঠামো। উপযুক্ত স্থান নির্ধারণের জন্য দেশের চারটি এলাকা যেমন ভালুকা, পদ্মার দক্ষিণের শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও মুন্সীগঞ্জের একটি এলাকা যাচাইবাছাই করে প্রকল্পের উপযোগী একটি গ্রহণযোগ্য স্থান নির্ধারণ করা হবে। আগামী এক শ’ বছরে দেশের সম্ভাব্য জনসংখ্যা, যাত্রি পরিসংখ্যান কি হবে, যাতায়াত ব্যবস্থা কতটা উন্নত হবে, বিশেষ করে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণাঞ্চলে গড়ে উঠা অন্যান্য যাতায়াত অবকাঠামো সুবিধার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এয়ারপোর্টটির মডেল তৈরি করা হবে। জমির সহজলভ্যতা এবং অন্যান্য সুবিধা পর্যালোচনায় স্বপ্নের পদ্মা সেতুকেন্দ্রিক শরীয়তপুরের চর জানাজাতই এখন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্টের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক স্থান হতে পারে। এখানেই রয়েছে প্রায় ত্রিশ হাজার একর খাসজমি, যা দেশের আর কোন এলাকায় নেই। বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্টের জন্য দরকার হবে প্রায় ১২ হাজার একর জমি। চর জানাজাতে হলে জমি এ্যাকোয়ারজনিত জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে না, কৃষি জমি অধিগ্রহণে মূল্য পরিশোধজনিত ব্যয়ও হ্রাস পাবে। বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্ট নির্মাণে আগামী এক শ’ বছরের পরিকল্পনা বিবেচনায় নেয়া হলেও প্রথম ধাপে আগামী ত্রিশ বছরে দেশের অ্যাভিয়েশন সেক্টরের সম্ভাব্য বৃদ্ধি বিবেচনায় রেখে নক্সা তৈরি করা হবে। তবে নক্সাটি এমন হবে যাতে পরবর্তী এক শ’ বছরের সম্ভাব্য সম্প্রসারণের সুযোগ থাকে। চর জানাজাতে বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্ট নির্মাণ করা হলে সেখান থেকে গুলিস্তান ও বর্তমান শাহজালাল পর্যন্ত উড়ন্ত সেতু, বিশেষ রেল ও অন্যান্য সড়কসহ বিশেষ যাতায়াত অবকাঠামো তৈরি করা হবে। ধাপে ধাপে করলেও এ প্রকল্পটি শেষ করতে কমপক্ষে দশ বছর সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্টের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন।
বিষয়: বিবিধ
১০৬৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন