আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ এবং বাংলাদেশ পরিস্থিতি

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ১৫ অক্টোবর, ২০১৬, ০৩:৩৯:৪৫ দুপুর



ষোল কোটি মানুষের মাতৃভূমি বাংলাদেশের প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। তারা আল্লাহ, আল্লাহর রসুল ও ইসলামকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। এ অঞ্চলের মানুষের ধর্মের প্রতি টান হাজার বছর পুরানো। এটা তাদের রক্ত-মাংসের সাথে মিশে আছে। একে জীবন থেকে কোনোভাবেই আলাদা করা সম্ভব নয়। এই শুভ চেতনাই আজ বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের দেশের জন্য। আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর সাথে এ দেশের বেশ কিছু জঙ্গি সংগঠনের আদর্শ ও কর্মপদ্ধতিগত সমন্বয় রয়েছে- এ অভিযোগ বহু পুরনো। মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখলকারী আইএস যোদ্ধারা এখন কার্যত সারা বিশ্বের জঙ্গি ও জঙ্গিসমর্থকদের আদর্শিক ‘হিরো’তে পরিণত হয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ কথিত জেহাদের নেশায় ছুটে যাচ্ছে ইরাক-সিরিয়ায়। ‘জেহাদী তামান্না’ বাংলাদেশের মানুষের মধ্যেও আছে এটা অস্বীকার করার উপায় । এখন বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের গণতান্ত্রিক হানাহানির বীভৎসতা থেকে মানুষ মুক্তি চাচ্ছে। এটাও চাচ্ছে কয়েক যুগ থেকে। সম্প্রতি আইএস মহানবীর ভবিষ্যদ্বাণীকৃত হাদিস (যদিও অনেক হাদিসের বিশুদ্ধতা নিয়ে খোদ হাদিসবেত্তাদেরই প্রচুর মতভেদ রয়েছে, হাদীসের নামে বহু দয়ীফ, জাল বা ভুয়া হাদীস প্রচলিত আছে) মিলিয়ে মিলিয়ে ইসলামী খেলাফতের নামে এমন একটি কৃত্রিম কাঠামো দাঁড় করিয়ে ফেলছে যে, ধর্মবিশ্বাসী মানুষদের মধ্যে একটি বড় অংশ মনে করছে আইএস এর মাধ্যমেই বিশ্বে শান্তি আসবে, ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে এবং পাশ্চাত্যের দুঃশাসন থেকে মানুষ চূড়ান্তভাবে মুক্তিলাভ করবে। সুতরাং এর দ্বারা এতে তারা একদিকে যেমন শান্তি পাবে, অন্যদিকে তারা উম্মতে মোহাম্মদী হতে পারবে, অর্থাৎ এটি তাদের ধর্মীয় কর্তব্য। ইতোমধ্যেই হাজার হাজার যুবক এই ধ্যানধারণা দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে কথিত জেহাদ করছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ ছুটছে ইরাক-সিরিয়ার পথে। আধুনিক পৃথিবীতে ধনে-সম্পদে, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, শিল্প-সাহিত্যে, সামরিক শক্তিতে অর্থাৎ পার্থিব উন্নতির আইডল হিসেবে বিবেচিত হয় ইউরোপ। সেই ইউরোপ থেকে যখন দলে দলে ধর্মপ্রাণ মানুষ সমস্ত বাধার প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে, প্রাণের মায়া ত্যাগ করে সিরিয়া-ইরাকে ছুটছে তখন আমাদের দেশের দারিদ্র-কষ্টে জর্জরিত সরলপ্রাণ ধর্মবিশ্বাসী মানুষগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা যেতেই পারে। এ কথা ভুললে চলবে না যে, এমনই এক ধরনের প্রেক্ষাপট অর্থাৎ আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে কথিত জেহাদ থেকেই এক সময় বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছিল। জঙ্গিদের এই পথ যে ভুল, এই কোরবানি ও প্রচেষ্টার বিনিময়ে তারা যে আল্লাহর কাছ থেকে কিছুই লাভ করবে না, বরং তাদের দ্বারা ইসলামের শত্রুরাই লাভবান হচ্ছে এ কথা তাদেরকে কে বোঝাবে, সাধারণ মানুষকেই বা কে বোঝাবে?এমনিতেই বিভিন্ন সময়ে উন্মাদনা সৃষ্টি করে কথিত জেহাদী তামান্না সৃষ্টি করা হয় বাংলাদেশে যা বার বার আমরা দেখেছি। ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার ঘটনা এ দেশে অহরহ ঘটে। এছাড়াও রয়েছে মানুষের ধর্মীয় সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত অর্থোপার্জনের দৃষ্টান্ত। এক কথায় আমাদের দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের ঈমানকে হাইজ্যাক করে থাকে এক শ্রেণির স্বার্থবাদী। এখন সময় এসেছে জনসচেতনা সৃষ্টি করে কথিক এই এস এর সকল অপকর্ম যে ধর্মের ধ্বংস ডেকে আনছে এবং তা যে শান্তির ধর্ম ইসলামের সাথে কোন সম্পর্ক নেই সেই সত্য উপলব্দি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া।



বিষয়: বিবিধ

১০৫৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378717
১৫ অক্টোবর ২০১৬ বিকাল ০৪:৩২
স্বপন২ লিখেছেন :

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File