সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ০৯ অক্টোবর, ২০১৬, ০৬:১১:২৭ সন্ধ্যা
বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের যুগোপযোগী নেতৃত্বে অর্জিত সাফল্যে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ এখন ‘উন্নয়নের রোল মডেল’। এই ইমেজ নষ্ট করতেই একটি কুচক্রি মহল সম্প্রতি গুলশানে সন্ত্রাসী হামলাসহ নানা ধরনের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা স্বত্ত্বেও বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়নকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে না পারা দেশি-বিদেশি গোষ্ঠিগুলোই এর ইন্ধনদাতা। তবে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের উত্থান এখন কোন রাষ্ট্রের একক সমস্যা নয়, এটি একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সারা বিশ্ব পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যেই একটি বৈশ্বিক সমঝোতায় উপনীত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সাথে যাদের যোগসূত্র আছে, যাদের যুদ্ধাপরাধ ও জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারার রেকর্ড রয়েছে তারা ব্যতিত দেশের সাধারণ জনগনের মধ্যে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্র সহিংসতার বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি জাতীয় ঐক্যমত্য সৃষ্টি হয়েছে এবং পরিস্থিতির দাবিতেই ঐক্য বজায় থাকবে। তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশে সন্ত্রাসের বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোকে গুরুত্ব না দিলেও দেশের কিছু গণমাধ্যম বিষয়টিতে অনাবশ্যক গুরুত্বারোপ করে পরিস্থিতি জটিল করে তুলছে। সুষ্ঠু সাংবাদিকতায় যে পরিমিতিবোধের অনুশীলন করতে হয় এ দেশের কিছু গনমাধ্যম এ বিষয়ে কোন তোয়াক্কা করে না। তারা এমনকি অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির বিষয়টিও প্রকাশ করে দেয়, যা কাম্য নয়। বর্তমানে সরকার সার্বিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে কারা মগজ ধোলাই করে দেশের স্বচ্ছল পরিবারের ছেলেদেরকে উগ্রপন্থার প্রতি আকৃষ্ট করছে, কারা জঙ্গিদের অর্থায়নকারি, অস্ত্রের যোগানদার এবং প্রশিক্ষক, তা চিহ্নিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সাথে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে কার্যকর কর্মপন্থা উদ্ভাবনে গুরুত্ব দিচ্ছে।দেশে বর্তমানে জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে জনগণের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে, তারা গুলশান হামলার ন্যায় ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না।জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ও তাদের নিরাপত্তা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বর্তমানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে, তবে জনগণকেও এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। গুলশানে সন্ত্রাসী হামলাই দেশের প্রথম বর্বর হামলা নয়। ইতোপূর্বে ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২২ ব্যক্তি নিহত হয়েছে। দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যেও অসংখ্যা বার হামলা চালানো হয়েছে। স্বৈরাচারী জিয়া ও এরশাদের শাসনামালে ফ্রান্সের নিস শহরের মতো রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এবং ফুলবাড়িয়াতে মিছিলের ওপর ট্রাক চালিয়ে দেয়ার নজির আছে। তবে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডজনিত সমস্যার স্থায়ী সমাধানে এসব হামলার পেছনে কারা রয়েছে তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশার কথা এই যে, সরকারের দুরদর্শীতায় স্বল্পতম সময়ের মধ্যেইে পরিস্থিতির উপর নিয়ন্র্রণ ফিরে এসেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে আমাদেরকে ব্যাপক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। এখন সময় এসেছে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মতাদর্শগত বিভেদ ভুলে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার লোকজনকে এক কাতারে নিয়ে এসে ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার। তাহলেই সকল সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে দুর্নিবার গতিতে সমৃদ্ধির পথে অব্যাহত অগ্রযাত্রাকে মহিমান্বিত করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার অর্জিত সাফল্যেও বাংলাদেশ স্থাপন করবে নব দৃষ্টান্ত।
বিষয়: বিবিধ
৭৩৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন