স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির ব্যবহারে গতি বাড়ছে চট্টগ্রাম বন্দরের
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ০৯ অক্টোবর, ২০১৬, ০৩:২১:১৩ দুপুর
আধুনিকতার ছোয়া লেগেছে বাংলাদেশের সব খাতে। খোলা পণ্য জাহাজ থেকে নামাতে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রথমবার যুক্ত হচ্ছে আধুনিক যন্ত্র ‘নিউমেটিক কনভেয়র বেল্ট’। এই যন্ত্রের সাহায্যে জাহাজের খোপের (হ্যাজ) মধ্য থেকে পণ্যগুলো বেল্টের মাধ্যমে জেটিতে পৌঁছবে। সেখান থেকে আরেকটি মেশিনে ওজন ও বস্তাবন্দি হয়ে সরাসরি জেটিতে থাকা ট্রাকে ওঠানো হবে। সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছবে। এতে অনেক সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। বর্তমানে সনাতন পদ্ধতিতে জাহাজ থেকে পণ্য নামাতে গিয়ে খরচ বেড়ে যাচ্ছে, এতে পণ্যের দামও বাড়ছে।
বর্তমানে খোলা জাহাজ থেকে পণ্য নামাতে সনাতন পদ্ধতিতে যদি ১০ দিন সময় লাগে তাহলে নতুন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে তা তিন দিনে শেষ করা যাবে। এতে একটি জেটিতে বর্তমানের চেয়ে বেশি জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে। এতে জাহাজভাড়া বাবদ বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। আর কম সময়ে বেশি জাহাজ ভেড়াতে পারায় বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে। এটি বন্দরকে আরো একধাপ এগিয়ে নেবে। এতে আমদানিকারকের পণ্য খালাসে খরচ অনেক কমবে, সেই সঙ্গে পণ্যের দামও কমার সুযোগ তৈরি হবে।’ তিনি বলেন, বহির্নোঙরে এ ধরনের যন্ত্র যোগ করা হলে পণ্য নামাতে খরচ অনেক কমে আসবে। চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে থাকা জাহাজ থেকে কনটেইনার নামাতে অত্যাধুনিক ‘কি গ্যান্ট্রি ক্রেন’ ব্যবহার করা হয়। আর যেসব জেটিতে ক্রেন নেই, সেখানে জাহাজে থাকা ক্রেন দিয়ে পণ্য নামানো হয়। কিন্তু খোলা পণ্য জাহাজ থেকে নামানো হয় সনাতন পদ্ধতিতে। এই পদ্ধতিতে জাহাজের খোপের মধ্যে শ্রমিকরা ঢুকে গম, চাল, ডাল, সরিষাসহ বিভিন্ন পণ্য হাতে বস্তাবন্দি করে সিলিং রুপের মাধ্যমে জেটিতে এনে অপেক্ষমাণ ট্রাকে রাখে। সেখান থেকে নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে যায় এসব পণ্য। এই পদ্ধতিতে বন্দরে কাজ করছে বর্তমান বার্থ অপারেটররা। সনাতন পদ্ধতিতে প্রতিটি জাহাজ থেকে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ দুই হাজার ১০০ টন পণ্য নামানো সম্ভব। আর এর সঙ্গে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক এবং ব্যাগিং ও ওজন পরিমাপের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের সমন্বয়ের প্রয়োজন হয়। এর ব্যতিক্রম হলে এই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছা সম্ভব হয় না। সনাতন এই পদ্ধতির পরিবর্তন করতে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে যুক্ত হচ্ছে আধুনিক ‘নিউমেটিক কনভেয়র বেল্ট’। প্রাথমিকভাবে একটি যন্ত্র যুক্ত করা হচ্ছে, পরে অন্য জেটিতেও এটি সংযোজন করা হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে যন্ত্রটি বন্দরে স্থাপন করা সম্ভব হবে। এর মধ্য দিয়ে খোলা পণ্য খালাসে সনাতন যুগের অবসান ঘটিয়ে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির যুগে প্রবেশ করবে চট্টগ্রাম বন্দর। এতে পণ্য নামানোর ব্যয় বিপুল পরিমাণে কমে আসবে। চট্টগ্রাম বন্দরের এত দিন মনোযোগ ছিল স্বয়ংক্রিয় কনটেইনার পদ্ধতির দিকে। এই প্রথম খোলা পণ্য জাহাজ থেকে নামাতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির একটা পদক্ষেপ নিল বন্দর। এতে কম সময়ে জাহাজ থেকে বেশি পণ্য নামানো সম্ভব হবে, আর বাকি সময়ে আরো বেশি জাহাজ জেটিতে ভেড়ার সুযোগ পাবে। সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা।
বিষয়: বিবিধ
৮৭৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন