আরেক বাংলাদেশের হাতছানি

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ১৩ আগস্ট, ২০১৬, ০৫:০৪:১০ বিকাল

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবে যখন বাংলাদেশের বিরাট অংশ সাগরে নিমজ্জিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, ঠিক সে সময়েই বঙ্গোপসাগরের বুকে দেখা দিয়েছে আরেক বাংলাদেশের হাতছানি। সেখানে সমুদ্রের অথৈ জলে প্রাকৃতিকভাবেই বিশাল বিশাল চর জেগেছে, গড়ে উঠেছে মাইলের পর মাইল ভূখণ্ড। ১৬ কোটি মানুষের এই সীমিত ভূখণ্ডে হাজারো সম্ভাবনার মতোই বিশাল সম্ভাবনা নিয়ে জেগে উঠেছে আরেক বাংলাদেশ। বঙ্গোপসাগর ও উপকূলবর্তী বিভিন্ন নদীতে জেগে ওঠা চর ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছে স্থায়ী ভূখণ্ডে। এর পরিমাণ নদীভাঙন ও ভূমিধসের কারণে বিলীন হয়ে যাওয়া ভূখণ্ডের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। গত চার দশকে কয়েক হাজার বর্গকিলোমিটার নতুন জমি যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে। নতুন জমি ইতিমধ্যে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের ১০ ভাগের ১ ভাগ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার, পটুয়াখালী, ফেনী ও ভোলাতেই জেগে উঠেছে আনুমানিক ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার নতুন জমি। ১৪৮ বর্গকিলোমিটারের সন্দ্বীপ ঘিরে নতুন জমি তৈরি হয়েছে এর দ্বিগুণ। আর শুধু মেঘনার উপকূলে গত দেড় দশকে জেগে ওঠা ৪০টি স্থায়ী চরে পাওয়া গেছে প্রায় ২ হাজার বর্গকিলোমিটার জমি। মেঘনার পাড় ঘিরে সৃষ্টি হওয়া আরও ৭৫টি চর অচিরেই পেতে যাচ্ছে স্থায়ী রূপ। সে হিসেবে আগামী দুই দশকে বর্তমান বাংলাদেশের অর্ধেক পরিমাণ নতুন জমি পাওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। নতুন এসব জমি শুধু দেশের ভূখণ্ডের পরিমাণই বাড়াচ্ছে না, এর মাধ্যমে তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা। পূরণ হয়েছে স্বপ্ন। বিদেশি বিনিয়োগের জন্য যখন দেশে একসঙ্গে বৃহদাকারের জমি পাওয়া প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল, তখন নতুন এ জমি সেই চাহিদা পূরণ করেছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও ফেনীর নতুন জমিতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে মিরসরাই ও ফেনীতে অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের কাজও শুরু হয়েছে। বন বিভাগ থেকে নতুন জমিতে নেওয়া হয়েছে বনায়নের প্রকল্প। শুধু সরকারি পর্যায়ে নয়, স্বপ্ন পূরণ হয়েছে প্রান্তিক মানুষেরও। বসতিহীন মানুষ নতুন করে বেঁধেছে ঘর। ভূমিহীন কৃষক এসব বিস্তীর্ণ জমিতে শুরু করেছে কৃষিকাজ। এই সময়ের মধ্যেই নোয়াখালী জেলা ঘিরে জেগে ওঠা নিঝুম দ্বীপ, চরকবিরা, চরআলীম, সাগরিয়া, উচখালী, নিউ ডালচর, কেরিং চরসহ প্রায় ৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের নতুন ভূমি শ্রেণিকরণের মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এখন সন্দ্বীপকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করতে উড়িরচরে একটি ক্রসড্যাম তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে জেগে ওঠা চরগুলোকেও সংযুক্ত করা সম্ভব হবে।

বিষয়: বিবিধ

৮৯২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

376303
১৫ আগস্ট ২০১৬ দুপুর ১২:৩৩
হতভাগা লিখেছেন : কি লাভ তাতে ? বাংলাদেশ কি সেটা দখলে নিতে পারবে ? ভারত আর মায়ানমার এসে দাবী করে বসবে আর সরকারকে ভুংভাং বুঝিয়ে নিয়ে যাবে ।

পারছে কি দক্ষিণ তালপট্টিকে বগলে নিতে?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File