সম্ভাবনাময় আমাদের মৎস্যখাত

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০২:৪৪:৩৬ দুপুর



কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে মৎস্য খাতের অবদান আজ সারা বিশ্বে স্বীকৃত। দেশের ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর পুষ্টি-উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে মৎস্য খাতের অসামান্য অবদান প্রশংসাযোগ্য। জাতীয় চাহিদার নিরিখে বর্তমান সরকারের মৎস্যবান্ধব কার্যক্রম পরিচালনা এবং প্রযুক্তিভিত্তিক মৎস্য চাষ ও সম্প্রসারণের ফলে দেশে মাছের উৎপাদন সাম্প্রতিককালে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বাংলাদেশ বিশ্বে পর পর টানা দু’বার বদ্ধ জলাশয়ে মৎস্য উৎপাদনে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে (এফএও ২০১৫)। আমাদের দেশ মূলত নদীমাতৃক গাঙ্গেয় বদ্বীপ। বিশাল বঙ্গোপসাগর, পদ্মা-মেঘনা-যমুনাসহ অসংখ্য নদ-নদী, হাওড়-বাওড়, খাল-বিল, পুকুর-দিঘি ও বিচিত্র জলাশয়ে পরিপূর্ণ এদেশ মৎস্য সম্পদের এক অফুরন্ত সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। দেশের জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান ৩.৬৯ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপিতে ২২.৬০ শতাংশ। আমাদের খাদ্যে প্রাপ্ত আমিষের প্রায় ৬০ শতাংশ আসে মাছ থেকে। দেশের ১৪ লক্ষের বেশি নারীসহ মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশের অধিক মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে। মত্স্য খাতে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৬ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আমাদের মাছের মোট উত্পাদন দাঁড়িয়েছে ৩৭.০ লক্ষ মেট্রিক টন। ২০২১ সালে দেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করে আমাদের ৪৫.০ লক্ষ মেট্রিক টনে পৌঁছাতে হবে। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চিংড়ি চাষ উন্নয়ন ও সম্প্রসারণেও বর্তমানে নানামুখী কার্যক্রম দেশে পরিচালিত হচ্ছে। গুণগতমানসম্পন্ন চিংড়ি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উত্তম চাষ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন ও প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক চাষাবাদ কৌশল সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। চিংড়ির রোগবালাই দমন ও প্রতিকারের জন্য বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের আওতায় বাগেরহাটে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে দেশের একমাত্র চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র। জাতীয় মাছ ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতেও বর্তমান সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সাম্প্রতিককালে দেশে ইলিশ উৎপাদন বেড়ে ৩.৮৫ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে এবং ইলিশের মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রয়েছে। বর্তমান সরকার ভিশন ২০২১ নিয়ে কাজ করেছে। ভিশন ২০২১-এ মত্স্য খাতকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। ভিশন ২০২১-এ দেশের মাছের উৎপাদন ৪৫.০ লক্ষ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বর্তমান উৎপাদনের চেয়ে ৮ লক্ষ মেট্রিক টন বেশি। এজন্য আগামী বছরগুলোতে আমাদের প্রতিবছর ১ লাখ মেট্রিক টনের অধিক মাছ উৎপাদন করতে হবে। আশার কথা যে, গত অর্থবছরে মাছের উৎপাদন পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১ লক্ষ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে গেছে। উৎপাদনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০১৯-২০ সালের মধ্যেই দেশ মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকারের পাশাপাশি বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণ কর্মী, এনজিও ও চাষিদের একযোগে কাজ করতে হবে।

বিষয়: বিবিধ

৮৮৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

355244
২৫ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:১৫
হতভাগা লিখেছেন : মৎস চাষ করে আমাদের অনেক রাজনীতিবিদ ভাইয়েরা শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন
355245
২৫ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:৫৪
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
355247
২৫ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:৫৯
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
355257
২৫ ডিসেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৪
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : চাকরিবাকরি ছেড়ে এখন এসবেই ঢুকতে হবে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File