ইতিহাসের পাতায় স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে যে বিচারের রায়............।।
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ১১ নভেম্বর, ২০১৫, ০৩:৫২:৫৩ দুপুর
দুই শিশু রাজন ও রাকিবের নৃশংস হত্যাকান্ড দেশবাসীকে কাঁদিয়েছিল। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ দুটি হত্যা মামলার আসামিদের আইনের আওতায় এনে বিচার সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে দেশে নিঃসন্দেহে আইনের শাসনের একটি উজ্জ্বল মাইলফলক প্রতিষ্ঠিত হলো। ছয় পাষন্ডের ফাঁসির রায় পাওয়ার ফলে আগামীতে একই ধরনের নিষ্ঠুর অপরাধ করার আগে যে কোন নরাধম শতবার ভাববে বলে আশা করা যায়। নৃশংসতার হাত থেকে শিশুদের বাঁচাতেই হবে। গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে একটি দোকানঘরের খুঁটিতে বেঁধে চোর ‘অপবাদে’ শিশু রাজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছিল কামরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা। ঐ ঘটনায় গোটা সমাজের মর্মমূলই প্রচণ্ড ভাবে নাড়া খেয়েছিল। লাখো মানুষের বিবেক বলে উঠেছিল- এ কোন্ বর্বরতা! মানুষ এতটা নির্মম-নৃশংস-নিষ্ঠুর কীভাবে হতে পারে? পৈশাচিক উল্লাসে মেতে রাজনকে যারা হত্যা করেছিল তারা দেখতে অবিকল মানুষের মতো হলেও মানুষ নয় তারা। কিছুতেই তারা মানুষ হতে পারে না। পাষন্ড, নরাধম, বিকৃত মস্তিষ্ক, নরকের কীট- কোন বিশেষণেই তাদের পরিচয় যথার্থভাবে তুলে ধরা যাবে না। রাজন হত্যার পর প্রধান হত্যাকারী কামরুল সৌদি আরবে পালিয়ে গেলেও গত ১৫ অক্টোবর তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। দুই দেশের কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এবং ইন্টারপোলের সহায়তা নিয়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। এ ধরনের দৃঢ় আইনানুগ তৎপরতা সমাজে বিরল। সরকারের ওই উদ্যোগ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়। এছাড়া গত ৩ আগস্ট খুলনায় শিশু রাকিবকে হত্যা করা হয় আরও নির্মম ও পৈশাচিকভাবে। শরীফ মোটর্সের মালিক মোঃ শরীফ যে কায়দায় হত্যাকান্ড ঘটায় তা ইতিহাসে বিরল ঘটনা। এমন বর্বরতার কথা কোন সুস্থ মানুষের কল্পনাতেও আসার কথা নয়। শিশু রাজন হত্যার দায়ে চারজন এবং শিশু রাকিব হত্যার দায়ে দুজন- মোট ছয় নরাধমকে নিম্ন আদালতে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। এ দুটি শিশুহত্যার বিচারের রায় প্রমাণ করে আন্তরিকতা থাকলে দ্রুততম সময়ের ভেতর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব। আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান, এখানে ছাড় দেয়া কিংবা বিরাগবশত কোন পদক্ষেপ নেয়া- দুটোরই কোন সুযোগ নেই। যে যতটুকু অন্যায় করবে তার সাজা আইনসম্মতভাবে ততটুকুই নির্ধারিত। সব অপরাধীকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা রাষ্ট্রের কর্তব্য। বর্তমান সরকারের মেয়াদকালকে আইনের শাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার সুবর্ণকাল হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে। সরকার সব হত্যাকাণ্ডকে বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। আইন ও বিচার ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছে। দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি জনগণ এখন আস্থাশীল। সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো সক্রিয় ও কার্যকর থাকা জরুরী, সেগুলো বর্তমানে তাৎপর্যপূর্ণভাবে কর্মক্ষম। এর ফলে অন্যায় ও অপকর্ম করে পার পাওয়া যাচ্ছে না, অপরাধীরা শাস্তি পাচ্ছে, সাধারণ মানুষ বিচার পাচ্ছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটেছে। এতে সমাজে অপরাধ হ্রাসের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবেও বাংলাদেশের মর্যাদা যে বাড়ছে, তাতে কোন সংশয় নেই।
বিষয়: বিবিধ
৯২৪ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন