বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় ভারতের সঙ্গে ছিটমহল চুক্তি। নিজের দেশে ঈদ করতে পেরে ছিটমহলবাসীদের চোখে-মুখে আনন্দের দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছে!
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ১৯ জুলাই, ২০১৫, ০৩:০৯:৩৬ দুপুর
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় উত্তর গোতামারি ১৩৫/১ নম্বর ছিটমহলের বাসিন্দা মহির আলী (৪০)। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তির পর প্রথমবারের মতো ঈদ করলেন। তার চোখে-মুখে যেন আনন্দের দ্যুতি! বলছিলেন, ‘এত দিন মানুষ কইতো ছিটের লোক। ঈদ করছি ছিটে। এইবার নিজের দেশে নিজের মাটিতে ঈদ করলাম, এর চায়া আলন্দের (আনন্দের) আর কী হইতে পারে! কী যে শান্তি লাগতেছে তা খালি আমি বুজি’। মহির আলীর স্ত্রী আয়েশা বেগম বলেন, ‘কলিজার মধ্যে শান্তি লাগতেছে যে, হামার দেশের মাটিতেই ঈদ করবার পাইলাম।’
উত্তর গোতামারি ছিটমহলটি ভারতের কোচবিহার জেলার শিতলকুচি থানার পাশাপাশি একটি গ্রাম। এখানের দুটি ছিটমহলে মোট প্রায় ১১১টি পরিবারের বসবাস। মহির আলীর পরিবারের মতো এখানকার অন্য পরিবারগুলোর মধ্যেও যেন একটু অন্য মাত্রায় ছড়িয়ে গেছে এবারের ঈদের আনন্দ। এবারই তাঁরা প্রথম পেলেন দেশের মাটিতে ঈদ উদ্যাপনের স্বাদ।
ছিটমহলের নানা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন প্রবীণ ছকবর আলী (৮৭)। তাঁর কাছেও এবারের ঈদ অন্যবারের চেয়ে আলাদা। অকপটে বললেন মনের মধ্যে জমে থাকা আনন্দের কথাগুলো। ‘আগে ঈদ আসতো, ঈদ যাইতো। মনের মধ্যে কষ্ট লাগতো পরের মাটিতে থাকি। এইবার ঈদ আইসার আগে কয়দিন থাকি মনে আলন্দ, দেশে পরথম ঈদ করব। দেশের মাটিতে ঈদ করবার পায়া আজকে অনেক ভালো লাগতেছে।’ তিনি বলেন, ‘অনেক আন্দোলন করছি, মনে হইছে বাপ-চাচার মতো আমাকেও পরের মাটিতে মরবার লাগবো। কিন্তু চুক্তি হওয়ার পর মনে অনেক শান্তি। এখন মরলেও শান্তি।’ ছকবর আলী বলেন, তার অনেক আত্মীয়-স্বজন ভারতে থাকলেও তিনি এই দেশেই বড় হয়েছেন। আর এই ভিটে ছেড়ে যেতে চান না কখনো। বললেন, ‘সোনা দিয়া মোড়াইলেও এই দেশ থেকে যামো না, ভিক্ষা করি খামো তাও এটে মরবর চাই।’ ঈদে কেমন লাগছে জানতে চাইলে তাঁর স্ত্রী আশরাফুন্নেসা বলেন, ‘অনেক আলন্দ লাগছে, এমন আলন্দ আগে পাই নাই। নিজের দেশে, নিজের মাটিতে ঈদ করলাম। আজকে অনেক দিনের আশা পূরণ হইলো।’ এজন্য তারা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বিষয়: বিবিধ
৯০৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন