বাংলাদেশের মানচিত্রে নতুন বাসিন্দা যেন বহুদিনের আকাংখিত স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপায়িত হলো
লিখেছেন লিখেছেন ফারাবি রহমান ০১ আগস্ট, ২০১৫, ০৪:১২:০৫ বিকাল
নতুন পরিচয় নতুন দেশ। রাত ১২টা ১ মিনিট। ৬৮ বছরের ছিটমহল ইতিহাস হয়ে গেল। দীর্ঘ ৬৮ বছর পর তারা তাদের পরিচয়, নির্দিষ্ট ভূখন্ডে বসবাসের সুযোগ এবং প্রিয় মাতৃভূমির জাতীয় পতাকা ও মানচিত্র পেয়ে খুশিতে আত্মহারা। লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বাঁশকাটা ছিটমহলের মানুষ মুক্তির আনন্দে প্রজ্বলিত মোম হাতে বেরিয়ে আসে ঘরের বাইরে। মঞ্চে ৬৮টি প্রদীপের আলোতে যেন ঘুচে গেল ৬৮ বছরের বঞ্চনা। সময় রাত ১২টা। ঐতিহাসিক সেই মাহেন্দ্রক্ষণকে ঘিরে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ল কুড়িগ্রামের এক মুহূর্ত আগে বিলুপ্ত হওয়া ভারতীয় ছিটমহল দাশিয়ারছড়ায়। হাতে তাদের বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। সেই সঙ্গে সমস্বরে স্লোগান-জয় বাংলা, দিল্লি নয় ঢাকা, ঢাকা, ঢাকা, ঢাকা, আর নয় ছিটমহল, আমরা সবাই বাংলাদেশি, তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা-মেঘনা-যমুনা। মিষ্টিমুখ হলো, গাওয়া হলো বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। আবেগ আর সামলে রাখা যাচ্ছিল না। আজ ১ আগস্ট প্রথম প্রহর থেকে তাঁরা নতুন দেশের নাগরিক। সেই সঙ্গে বদলে গেছে তাঁদের ঠিকানা। আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ছিটমহলবাসী মিলিত হয় আনন্দ আয়োজনে। আয়োজন করা হয় লাঠিখেলা ও নৌকাবাইচ, বিজয় মিছিল ও আনন্দ মিছিল। বাড়ি বাড়ি চলে ভালো খাবারের আয়োজন। পরিবার-পরিজন মিলে খুশিতে মেতে ওঠে সবাই। জুমার নামাজ শেষে মিলাদ মাহফিল ও আখেরি মোনাজাত এবং মন্দিরে মন্দিরে পূজা-অর্চনা করে ছিটমহলবাসী। ছিটের বাইরের দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন বিশেষ মোনাজাতে অংশগ্রহণ করে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুস্বাস্থ্য কামনা করা হয়। যারা ভারতে চলে যাচ্ছে তাদের জন্য শুভ কামনা এবং যারা বাংলাদেশে রয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য মঙ্গল কামনা করা হয়। আজ তাদের বিজয়ের দিন, স্বাধীনতার দিন। আর এই ছিটমহলবাসীর বিজয়ের বা স্বাধীনতা আনয়নের পথিকৃৎ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতীয় প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বিষয়: বিবিধ
৮৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন