রাজন হত্যার নেপথ্য!

লিখেছেন লিখেছেন আবডুল রহমান ১০ আগস্ট, ২০১৫, ০৪:৪২:১৭ বিকাল

দরিদ্র বাবার সীমিত আয়ে চলা সংসারে সহায়তার জন্য রাজনও স্কুল ছেড়ে নিজে ফেরি করে সবজি বিক্রি করে রোজগারে নেমেছিল। এলাকার এক নরপিশাচ যৌন লালসা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে রাজনকে বলাৎকারে ব্যর্থ হয়ে তার বিরুদ্ধে ভ্যান চুরির অভিযোগ তোলে। পশুবৃত্তির মতো জঘন্য অপরাধ প্রচেষ্টা আড়াল করতে মানুষরূপী ওই পশুগুলো শিশুটিকে ধরে এনে একটি দোকানের খুঁটির সঙ্গে পিঠমোড়া করে বেঁধে তার ওপর প্রায় চার ঘণ্টা পৈশাচিক নির্যাতন চালায়। গরিব বাবা-মা আদরের ছেলেকে বইখাতা তুলে রেখে শ্রমের জোয়াল কাঁধে দিয়ে কখনওবা সবজি বিক্রি করে পরিবারের উপার্জনক্ষম করেছিল। সেই শিশুটিকেও চোর অপবাদ দিয়ে নৃশংসভাবে রড দিয়ে পিটিয়ে, তার শরীরে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে, হাত-পা ভেঙ্গে খুন করেছে। ভাবতে গা শিউরে উঠে অবুঝ শিশুটির মৃত্যু নিশ্চিত করতে ওই পাষণ্ডের দল তার নাভিতে পর্যন্ত রড ঢুকিয়ে মুচড়িয়েছিল। অথচ বিকৃতমনা নিষ্ঠুর ঘাতকরা পবিত্র রমজান মাসে হাসতে হাসতে নির্মম হত্যাকাণ্ড টি ঘটিয়েছিল। কতটা মানবতাবোধহীন হলে পাষণ্ডরা হত্যা করার পর ভিডিও করে তা আপলোড তথা সামাজিক নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে দেয়। সমাজের সব শ্রেণীর মানুষ এই নৃশংসতার দৃশ্য দেখে শিউরে ওঠে। সরকারের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরে মানুষের সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমেই নরপশুদের ন্যক্কারজনক কাজের প্রতিরোধ করা সম্ভব। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘটিত শিশু নির্যাতন হৃদয়বিদারক। আমি মনে করি এ ঘৃণ্য নৃশংসতা রোধে সমাজ ও মানুষের অনেক কিছু করার রয়েছে। অমানবিক কর্মকাণ্ড ও নৃশংসতার করাল গ্রাস থেকে শিশুদের মুক্তি নিশ্চিত করতে সামাজিক ঐক্য একান্তভাবেই প্রয়োজন। অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ দেশে ভবিষ্যতে শিশুরাই নেতৃত্ব দেবে। এই শিশুদের সেভাবে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার। এখানে দায়িত্ব এড়ানোর কোন উপায় নেই। নানারূপ পাপাচার-পঙ্কিলতা, নিষ্ঠুরতা ও আদিম অসভ্যতা থেকে সমাজকে বাঁচাতে হলে সরকারের পাশাপাশি সমাজের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

বিষয়: বিবিধ

৯৪১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File