পূর্ণতা লাভ করার আগে ভ্রূণ অবস্থায় সেটিকে হত্যা করা হলো । বৃহত্তর কোনো লক্ষ্য অর্জনের প্রত্যাশায় বিএনপি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে
লিখেছেন লিখেছেন আবডুল রহমান ০৪ মে, ২০১৫, ০৫:৪৪:২৩ বিকাল
রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য সব কিছুই জায়েজ। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর বিস্ময় তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের সুযোগে গোপন পরিকল্পনা ও কথোপকথন অহরহ ফাঁস হয়ে যাওয়ার কারণে রাজনীতিক ও দলের অনৈতিক কর্মকাণ্ড, ভণ্ডামি ও বহুমুখী আচরণের কথা মানুষ সহজেই ধরে ফেলতে পারে বিধায় মেকিয়েভেলির তত্ত্ব অনুসরণ করে আজকাল সহজে পার পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তিনটি সিটি কপোরেশনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর মেকিয়েভেলির আচরণ প্রথম থেকেই মানুষের কাছে স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত ও প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়ার ঘোলাটে অবস্থা ইত্যাদি দেখে বোঝা গিয়েছিল। এই লক্ষ্য অর্জনে জয়-পরাজয় যেটাই হোক না কেন, সেটিকেই বিএনপি কার্ড হিসেবে ব্যবহার করবে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছিল। জয় পেলে বলবে, অবৈধ সরকারকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই এই সরকারকে পদত্যাগ করে এখনই মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তৃতীয় পন্থা, অর্থাৎ ভোট শুরু হওয়ার মাত্র তিন ঘণ্টার মাথায় নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বিএনপি প্রমাণ করল রাজনৈতিক কৌশল উদ্ভাবনে তারা মেকিয়েভেলিকেও হার মানাতে জানেন। একেবারে টোটাল সারপ্রাইজ। কিন্তু এই কৌশল উদ্ভাবনের সেনাপতিরা হয়তো ভুলে গেছেন এটা একবিংশ শতাব্দী। ফলে বিএনপির ভোটাররা ভয়ানকভাবে প্রতারিত হলেন। তাদের ভোটগুলো পূর্ণতা লাভ করার আগে ভ্রূণ অবস্থায় সেটিকে হত্যা করা হলো। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা হতাশ, কিছু বোঝার আগেই বিনা মেঘে বজ্রপাত। এমনিতেই ধাওয়ার ওপর আছে, এখন তো পালানোর জায়গাও পাবে না। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বিএনপি একটি বাজে উদাহরণ সৃষ্টি করল। এবং সাংঘর্ষিক অবস্থা থেকে উত্তরণের যে একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল তা বোধ হয় আবার নেই হয়ে গেল। যে প্রক্রিয়ায় ও পরিস্থিতিতে বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিল তাতে বোঝা যায় এই সিদ্ধান্ত পূর্ব-পরিকল্পিত এবং মেয়র পদে জয়ী হওয়ার থেকেও বৃহত্তর কোনো লক্ষ্য অর্জনের প্রত্যাশায় বিএনপি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে । সুতরাং বর্জনের চিন্তা ছিল সুপরিকল্পিত।
বিষয়: বিবিধ
৭৮৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন