অবশেষে ইতিহাসের কলঙ্ক থেকে দায়মুক্ত হল জাতি

লিখেছেন লিখেছেন মশা০০৭ ২৯ আগস্ট, ২০১৫, ০৩:২২:০৭ দুপুর

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যারা বাঙালী নিধন করেছে, দেশে-বিদেশে অপপ্রচার চালিয়েছে, তারা জাতির জন্য কলঙ্কস্বরূপ শুধু নয়, চিরশত্রুও। একটি জাতিকে ধ্বংস করতে তারা সশস্ত্রপন্থা অবলম্বন করে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটসহ নানাবিধ অপকর্ম চালিয়েছে। স্বাধীনতার পর এদের অনেকে পালিয়ে যায় পরাজয়ের গ্লানি ও কালিমা নিয়ে। যারা আটক হয়েছিল, সেই সব শীর্ষ রাজাকার ও শান্তি কমিটির নেতাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। এদের অনেকের শাস্তি প্রদান করা হয় অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায়। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতা দখলকারী সামরিকজান্তা শাসকরা এদের মুক্ত করে দেয়। এদের রাজনীতিতেও পুনর্বাসন করা হয়। এমনকি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগের নামে বিজয়ী করা হয়। শুধু তাই নয়, এদের মন্ত্রী বানিয়ে গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকাও ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী যাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছিল, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। রাজাকার পুনর্বাসনকারী জান্তাশাসক জিয়া তাদের নামে স্থাপনা, সড়কের নামকরণও করে। মহান জাতীয় সংসদের চত্বরে এদের কয়েকজনকে সমাধিস্থ করা হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারও ক্ষমতায় বসে যুদ্ধাপরাধীদের নামে ছাত্রাবাসসহ সড়কের নামকরণ করে। ইতিহাসের আরও এক কলঙ্ক থেকে জাতিকে দায়মুক্ত করা হলো। যে দায় ছিল সমগ্র জাতির, অবশেষে সে দায়বদ্ধতায় দায়িত্ব পালন করলেন উচ্চ আদালত। ঐতিহাসিক এই রায়ের মাধ্যমে বিবেকের জাগরণ ঘটানো হয়েছে। এই রায় নির্দেশনামূলক, যা অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও আবেগের সঙ্গে গ্রহণ করছে দেশবাসী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসীরা উচ্চ আদালতের রায়কে অবশ্যই গভীর শ্রদ্ধা জানায়। এ দেশের আগামী প্রজন্ম রাজাকারের নামমুক্ত সড়কে স্বাধীনতার চেতনায় বুক ভরে নিশ্বাস নিয়ে চলাচল করতে পারবে। সারাদেশে এ রকম যত স্থাপনা, অবকাঠামো বা নিদর্শন রয়েছে তা দ্রুত অপসারণ হোক এটাই জনগনের প্রত্যাশা।

বিষয়: বিবিধ

৫৯০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File