ইসলামের নামের অধিকাংশ সংগঠনগুলোর ইসলাম রক্ষার নামে যে আন্দোলন ও যুদ্ধ তা অশুভ রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখার যুদ্ধ। ইসলাম রক্ষার যুদ্ধ নয়, মানবতাকে রক্ষার যুদ্ধ নয়
লিখেছেন লিখেছেন মশা০০৭ ২৯ জুন, ২০১৫, ০৩:৫০:৩১ দুপুর
ইসলামী সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসের প্রেরণা পায় তাদের ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থ কোরআন থেকে। এমনকি তাদের মহানবী (সা.) আদেশ-নির্দেশেও অবিশ্বাসী ও কাফেরদের হত্যা করার কথা বলা হয়েছে। পশ্চিমা প্রোপাগান্ডায় প্রভাবিত হয়ে দেশে এবং বিদেশে একশ্রেণীর মুসলমান বুদ্ধিজীবীও নিজেদের সেক্যুলার প্রমাণ করার জন্য সন্ত্রাসের উৎস ইসলাম ধর্ম এবং এই ধর্মের বিধিবিধান বলে প্রচার চালাচ্ছেন। তারা কোরআন ও হাদিসের কিছু কথা বিচ্ছিন্নভাবে উদ্ধৃত করে নিজেদের কথার প্রমাণ দিতে চান। তাতে তারা পশ্চিমা দুনিয়ায় বাহবা পাচ্ছেন; কিন্তু ইসলামী টেরোরিস্ট নামে পরিচিত জেহাদিদের রোষানলে পড়েছেন। জেহাদিরা কোরআন দ্বারা অনুপ্রাণিত একথা বিশ্বাস করতে হলে এ-ও বিশ্বাস করতে হবে যে, আয়ারল্যান্ডের আইরিশ সন্ত্রাসীদের (ওজঅ) সন্ত্রাসের উৎস ছিল বাইবেল। এই সন্ত্রাসীরা ছিল অধিকাংশই রোমান ক্যাথলিক এবং বাইবেলে দারুণ বিশ্বাসী। কিন্তু বাইবেলে বিশ্বাসী হওয়া ছাড়া এই সন্ত্রাসীদের কেউ কখনও বাইবেল পড়ে দেখেছে, তার কোনো প্রমাণ নেই। ইসলামী সন্ত্রাসীরাও কোরআন পাঠ করে সন্ত্রাসী হয়নি। কোরআনের দুএকটি আয়াত শুনিয়ে তাদের বিভ্রান্ত করা হয়েছে। বিশ্বের কোনো ধর্মই সন্ত্রাস সমর্থন করে না এবং সন্ত্রাসের জন্ম দেয়নি। সন্ত্রাস জন্ম দিয়েছে এবং লালন করছে রাজনীতি। ধর্মকে যখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়, তখন ধর্মীয় রাজনীতি থেকে সন্ত্রাস জন্ম নেয়। ধর্ম থেকে জন্ম নেয় না। এটা খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, হিন্দুধর্মের বেলায় ঘটেছে, ইসলামের বেলায়ও ঘটছে। এখন ইসলামকে আলাদা করে সন্ত্রাসের উৎস বলে প্রচার করাটা সাম্রাজ্যবাদীদের স্বার্থে প্রয়োজন এবং তারা তা-ই করছে। জেহাদিরা কোরআন-হাদিস পড়ে জেহাদি হয়নি। কোরআন-হাদিসের দুপাতাও তারা উল্টে দেখেছে কিনা সন্দেহ। তারা লাদেন, জাওয়াহিরির মতো মন্ত্রগুরুদের কাছ থেকে কোরআন-হাদিসের কিছু বিকৃত ব্যাখ্যা শুনে অন্ধবিশ্বাস থেকে মোটিভেটেড হয়ে জেহাদের নামে সন্ত্রাসে নেমেছে। পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ এই সন্ত্রাস দমনের অজুহাতে যে কোনো মুসলিম দেশে সৈন্য পাঠিয়ে, ড্রোন বোমা ফেলে দেশগুলো তছনছ করছে। অন্যদিকে নিজেদের সৃষ্ট সন্ত্রাসকে ইসলামের ঘাড়ে চাপিয়ে গণতন্ত্র ও মানবতার একটা শত্রুপক্ষ সাজিয়ে নিজেদের ভয়াবহ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও আগ্রাসনকে বৈধতা দিতে চাচ্ছে। আগে এই শত্রুপক্ষ ছিল কমিউনিজম। এখন ইসলামিজম। হিন্দুত্ববাদ, ইসলামী জেহাদি, খ্রিস্টান ওনলি প্রভৃতি হিন্দু, ইসলাম বা খ্রিস্টান ধর্ম থেকে জন্ম নেয়নি; জন্ম নিয়েছে অশুভ গণবিরোধী রাজনীতির গর্ভে। আমেরিকায় বা পশ্চিমা বিশ্বের বর্তমান সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ আসলে এই অশুভ রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখার যুদ্ধ। মানবতাকে রক্ষার যুদ্ধ নয়। বাংলাদেশেও ইসলামের নামের অধিকাংশ সংগঠনগুলোর ইসলাম রক্ষার নামে যে আন্দোলন ও যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা আসলেই অশুভ রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখার যুদ্ধ। ইসলাম রক্ষার যুদ্ধ নয়। মানবতাকে রক্ষার যুদ্ধ নয়।
বিষয়: বিবিধ
৭৮৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন