সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইউ এবং বাংলাদেশের শেখ হাসিনার সরকার (পর্ব-১)
লিখেছেন লিখেছেন মশা০০৭ ১৫ এপ্রিল, ২০১৫, ০৩:৫৮:৪৫ দুপুর
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে শত_ বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশে যেভাবে 'উন্নয়ন' সম্ভব করে তুলছেন, তা কি সিঙ্গাপুরের 'উন্নয়নে' লি কুয়ান ইউ সরকারের নেতৃত্বের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে? তবে তুলনা করা না গেলেও অন্তত প্রসঙ্গক্রমে আলোচনা করা যেতে পারে। সিঙ্গাপুরের জাতির পিতা লি কুয়ান ইউর মৃত্যু জাতি গঠন সম্পর্কে আলোকপাত করার একটি উপযুক্ত সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। দেশটির প্রথম তিন দশকের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একটি দরিদ্র বন্দরকে তৃতীয় বিশ্বের তলানি থেকে মাত্র এক প্রজন্মের চেষ্টাতেই প্রথম বিশ্বের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আধুনিক নগর-রাষ্ট্র ২৭৭.৩ বর্গমাইল আয়তনবিশিষ্ট দ্বীপদেশ সিঙ্গাপুরের জাতির পিতা ও প্রথম প্রধানমন্ত্রী সদ্যপ্রয়াত লি কুয়ান ইউর সরকারি নেতৃত্বের বয়স যখন দুই দশক পূর্ণ হয়েছিল তখন ধর্মীয়-উপনিবেশ পাকিস্তানের শোষণের নাগপাশ ছিন্ন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দক্ষিণ এশিয়ার ৫৫ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার প্রায় ৩০ বছর আগে ১৯৫৯ সালে সিঙ্গাপুর, বলা চলে, শান্তিপূর্ণ উপায়েই স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল।বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের চার দশক পর তার কন্যা শেখ হাসিনা এবার নিয়ে তিনবার দেশে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্বব্যাপী বিদগ্ধজনের দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, মা ও শিশু মৃত্যুহার হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সাফল্যের কারণে খোদ জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব বেড়েছে। এজন্য সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনের মডেল হিসেবে বাংলাদেশকেই বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে চায় জাতিসংঘ। বয়স এবং অন্যবিধ কারণে লি কুয়ান ইউর মূল্যায়নের মধ্যে বাংলাদেশের শেখ হাসিনার নাম থাকার কথা নয়। লি কুয়ান ইউর কৃতকর্ম ও বক্তব্য থেকে দেশের উন্নয়নের জন্য উপযুক্ত সরকারি নেতৃত্ব, যে চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে পারেন সে সম্পর্কে আমরা মন্তব্য করতে পারি।
১. পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকার প্রভৃতি সম্পর্কে পাশ্চাত্যের ধ্যান-ধারণা থেকে প্রাচ্যের ধ্যান-ধারণার পার্থক্য
২. সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশ দুটি দেশই একসময় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনাধীনে ছিল, কিন্তু উন্নয়নের দিক দিয়ে সিঙ্গাপুর এখন ব্রিটেন ও আমেরিকা উভয়কেই ছাড়িয়ে গেছে
৩. সরকার সম্পর্কে পাশ্চাত্যের ধারণা এবং প্রাচ্যের ধারণার মধ্যে পার্থক্য আছে
৪. উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন শৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা যা পাশ্চাত্যের মতো গণতন্ত্রচর্চার মাধ্যমে প্রাচ্যের দেশে অর্জন করা সম্ভব নয়
৫. 'উন্নয়নের' স্বার্থে শৃঙ্খলা অর্জনের জন্য প্রয়োজনে লি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন
৬. ধর্ম তথা কনফুসীয় চেতনা সিঙ্গাপুরের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীলতা, কর্তৃপক্ষের আদেশ মান্য করা ও শিক্ষার প্রতি ঐকান্তিকতা সৃষ্টি করেছে। যা সে দেশের উন্নয়নে মূল ভূমিকা পালন করেছে।
বিষয়: বিবিধ
৮০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন