প্রসংগ : যুদ্ধাপরাধ এবং হুমায়ূন আহমেদ
লিখেছেন লিখেছেন অবাক মুসাফীর ১৪ নভেম্বর, ২০১৫, ০৮:১৯:৪৭ রাত
১
আমার এই লেখার বিষয়বস্তু সম্পর্কে আমি সচেতন, কিন্তু লেখার উদ্দেশ্য ঠিক কি - তা বলতে পারবো না। যুদ্ধাপরাধ ইস্যূ নিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে এতোটাই পানি ঘোলা হয়েছে যে - আমি পুঁচকে কেন আবার পানি ঘোলা করতে নামলাম - তা আমার নিজের কাছেই পরিষ্কার না। তাই কেউ গুরুত্ব সহকারে আমার লেখা পড়বেন এই আশাও আমি করিনে।
.
হুমায়ূন আহমেদ নিঃসন্দেহে শক্তিশালী একজন প্রভাবক লেখক। তাঁর লেখা কতটা শক্তিশালী তা নিয়ে সাহিত্যবোদ্ধারা অনেকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু তাঁর গল্প বলার ধরণ অন্যান্য অনেক লেখকের চাইতে অনেক অনেক বেশি প্রভাবিত করেছে ‘আশি পরবর্তী প্রজন্মকে। এ প্রভাব কতটা তা বলা আমার আজকের কাজ না। কাজ - তিনি তার গল্প উপন্যাসের মত অনেক ব্যাপারে ধোঁয়াসা রেখে গেছেন - তার মধ্যে একটি যুদ্ধাপরাধ ইস্যূতে তার অবস্থানের ধোঁয়াসাকে আরো একটু ঝাপসা করা।
.
.
২
জাহানারা ইমাম ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি শুরু করেছিলেন ১০১ জন নিয়ে। তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ [১]। অন্যদিকে, হুমায়ূন আহমেদেই প্রথম ব্যক্তি যে রাজাকার কে রাজাকার বলেছিলেন। গণজাগরণ মঞ্চের বিখ্যাত স্লোগান “তুই রাজাকার, তুই রাজাকার” এর স্রষ্টাও হুমায়ূন আহমেদ।
.
.
৩
হুমায়ূন আহমেদ তাঁর ক্রিড়া বিষয়ক এক রচনায় [২] আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ইউসুফ আল কারদাভির একটি ফতোয়া উল্লেখ করে বলেন, বাজি নেই এমন সব শারীরিক ও মানসিক খেলা ইসলামে বৈধ। অথচ খুব সম্ভবত এগারো সালে অর্থাৎ হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পূর্বেই ইউসুফ আল কারদাভি যুদ্ধাপরাধ ইস্যূতে মিডিয়া গরম করা এক বক্তব্য পেশ করেন। তিনি সে সম্পর্কে টু শব্দ পর্যন্ত করেন নি।
.
কি হবে বিতর্কীত হয়ে? তিনি সারা জীবন নীরব থেকে এভাবেই অনেক বিতর্ক এড়িয়ে গেছেন।
.
.
৪
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির লিস্টে তাঁর
নামখানা উপরের দিকে থাকলেও জাহানারা ইমামের সাথে এক ধরণের শীতল সম্পর্ক ছিলো হুমায়ূন আহমেদের। কারণটা হুমায়ূন আহমেদেরও অজানা, তবে তিনি ধারণা করেন, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটিতে তিনি শুধু নাম দিয়েই কেটে পড়েছিলেন, চাঁদা দিতেন অনিয়মিত আবার সেই সময়ে লেখালেখি করতে থাকেন এমন একটি পত্রিকায়, যা কিনা জাহানারা ইমামের ভাষায় স্বাধীনতা বিরোধীদের পত্রিকা। [২] তবে হুমায়ূন আহমেদের পুরো লেখা জুড়ে জাহানারা ইমামের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা উপস্থিত। [৩]
.
.
.
[১] ডাংগুলি, বসন্ত বিলাপ
[২] কোন পত্রিকা জানা দরকার, কেউ জানলে জানাবেন। আমি যা ধারণা করেছিলাম, তা ভুল। ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে ধন্যবাদ।
[৩] জাহানারা ইমাম: তিনি, বসন্ত বিলাপ
... ... ... ...
.
.
দু'কলম পড়েই যাদের তিন কলম লিখতে ইচ্ছে হয়, আমি সেই শ্রেণীর। কোনো সীদ্ধান্তে আসা আমার উদ্দেশ্য ছিলো না। হুমায়ুন আহমেদের বইখানা পড়ে যেসব নতুন তথ্য পেলাম, তা নিজের জন্যই একখানে টুকে রাখলাম। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
বিষয়: বিবিধ
১৭৭৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়েও বড় চেতনাধারী হয়ে গেছেন তারা ।
এসব হিপোক্রেটরা কখনই সত্যের মুখোমুখি হতে চান না
প্লিজ, কারো দিকে আর তাকিয়ে থাকা নয়, কেউ আসুক অথবা নাই আসুক, আপনি আসছেন, লিখছেন, ভালো কিছু উপহার দেয়ার চেষ্টা করছেন, এটাই নিশ্চিত করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন