দাজ্জালকে স্বাগত জানাতে ইহুদিদের প্রস্তুতি এবং মিডিয়ার সম্ভব্য ভূমিকা
লিখেছেন লিখেছেন সাদিক মুহাম্মাদ আশিক ২২ নভেম্বর, ২০১৪, ০৯:৫৬:৩৩ রাত
খবরটি ২০১২ সালের জুলাই মাসের প্রথম শনিবারের। শনিবার দিনটি ইহুদীদের কাছে পবিত্র দিন যাকে আরবীতে ইয়াওমুস সাবত আর ইংরেজিতে Sabbath Day বলে। এইদিন ইসরাইলের বহুল প্রচলিত ওয়েবসাইট Ynet এ হলুদ ব্যানারে বড় বড় অক্ষরে Warning দেখা যায়। এইরকম Warning প্রায়ই ইসরাইলী ওয়েবসাইটগুলোতে আসে কিন্তু মজার ব্যাপার হলো কেউই জানে না যে এইগুলো কারা প্রচার করে। যাইহোক সেখানে লেখা ছিল- “The messiah is in Israel. This will be the last government of Israel”
উল্লেখ্য হাদীস শরীফে শেষ যুগে যে কানা দাজ্জালের আবির্ভাব সম্পর্কে সতর্কবাণী এসেছে সে হবে ইহুদীর সন্তান। ইহুদীদের কাছে সে হলো মসীহ তথা ত্রানকর্তা। এই “মসীহে দালাদাত” তথা “মিথ্যা ত্রাণকর্তা”কেই খ্রীস্টান সম্প্রদায় Antichrist বলে থাকে, যাকে হত্যা করার জন্য দুনিয়াতে “মসীহে হক” তথা “সত্য ত্রানকর্তা” ঈসা আলাইহিস সালাম পুনরায় আসবেন। এই ঈসা আলাইহিস সালামকেঁ পথভ্রষ্ট ইহুদিরা “মসীহে দালালাত” অপবাদ দিয়ে শূলে চড়িয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে আসমানে উঠিয়ে নিয়ে হেফাজত করেন। যাইহোক ঈসা আলাইহিস সালামই যখন দাজ্জালকে হত্যা করবেন তাহলে তাদের এই দাবী, “......This will be the last government of Israel” খুব একটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ না।
সেই ব্যানারটিতে ক্লিক করলে লিংক চলে যায় অন্য একটি সাইটে। যেখানে লেখা ছিল, “The next leader will be the Messiah Ben David. The situation of the country is getting worse and the government will become more incapable………….In the near future the world will witness terrible disasters, like earthquakes and tsunamis. Cities in Europe and the United States will disappear in the sea. The worlds financial system will collapse and God will destroy the Mammon (Yiddish slang for “money”)”
২০১২ সালেরই আর একটি ঘটনা হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক Secretary of State হেনরি কিসিঞ্জার (Henry Kissinger), যে নিজেই একজন মেসনিক ইহুদী এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে যার রয়েছে বিশাল অবদান, সে ঘোষনা করে আগামী ১০ বছরের মধ্যে ইসরাইল ধংস হবে। আর ২০১৪ সালে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার ফাঁস হওয়া রিপোর্টে প্রকাশ পায় ২০২২ সালের পর আর ইসরাইল থাকবে না।
আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনই ভালো জানেন। হাদীস শরীফে দাজ্জালের আবির্ভাবের পূর্বের বছরগুলোতে দূর্ভিক্ষ হওয়ার বর্ণনা এসেছে। আর এও এসেছে যে, সে কোন কারনে ক্ষুব্ধ হয়ে বের হবে।
আরেকটি ঘটনা বেশ বিখ্যাত। ১৮৯৮ সালে বাগদাদে জন্মগ্রহণকারী ইসরাইলের অন্যতম প্রধান ইহুদী রাব্বী ও কাব্বালিস্ট ইসহাক কাদুরী ২০০৬ সালে মৃত্যুর একমাস আগে ঘোষনা করে “মসীহ খুব শীঘ্রই আসবে, আমি একবছর পূর্বে তার সাথে সাক্ষাত করেছি।” এই ঘটনাটির বর্ণনা Wikipedia তে ইসহাক কাদুরীর (Yitzhak Kaduri) জীবনীতেও লেখা আছে।
কাদুরী যদি দাজ্জালের সাক্ষাত করেই থাকে তাহলে তা হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী অসম্ভব না। কারন একটি বিখ্যাত হাদীসে সাহাবী তামীম দারী রাদিয়াল্লাহু আনহুর সাথে তাঁর সাক্ষাতের বর্ণনা পাওয়া যায়।
যাইহোক দাজ্জাল ইসরাইলের শেষ শাসক হিসাবেই আসুক কিংবা এরও পরে আসুক একথা সুনিশ্চিত যে বর্তামানে ইসরাইল ও তার দোসর দাজ্জালের জন্য প্লাটফর্ম তৈরী করছে। আর সারা বিশ্বের মিডিয়াগুলো তাদের ভাষাতেই কথা বলে। তাই যখন দাজ্জাল আসবে তখন যদি প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া থাকে তাহলে সেখানে দাজ্জালকে ত্রাণকর্তারূপেই দেখানো হবে। এমতাবস্থায় মিডিয়ার কথা বিশ্বাস করলে ইমান কোথায় যাবে তা সহজেই অনুমেয়।
দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচার জন্য হাদীস শরীফে সূরা কাহফের উপর বেশী বেশী আমল করতে বলা হয়েছে। কমপক্ষে প্রথম বা শেষ ১০ আয়াত পড়লেও দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকা যাবে। প্রতিদিন যদি আমরা কোরআন শরীফ খুলে একবার করেও প্রথম বা শেষ ১০ আয়াত পড়ি তাহলে ইনশাআল্লাহ অল্প সময়ের মধ্যেই তা মুখস্ত হয়ে যাবে। বিনিময়ে দাজ্জালের সেই ভয়ংকর ফেতনা থেকে আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ ইমান রক্ষা পাবে।
আল্লাহ তায়া’লা এই প্রবন্ধের লেখক, পাঠক ও তাঁদের পরিবারস্থ সবাইকে এবং গোটা মুসলিম উম্মাহকে দাজ্জাল ও তার অগ্রবর্তী বাহিনীর ফেতনা থেকে হেফাজত করুন। আমীন।।
বিষয়: বিবিধ
২০২৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইহুদিদের মধ্যেও বেশ কয়েকটি গ্রুপ আছে সেগুলির কোনটি এই ধরনের প্রচারনা চালাতে পারে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন