ইসলামের দৃষ্টিতে নাস্তিক মুরতাদদের শাস্তির বিধান
লিখেছেন লিখেছেন আবু নুসাইবা ০৫ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১২:০৫:১১ রাত
ইসলামের বিধান শাশ্বত ও চিরন্তন। আল্লাহ প্রদত্ত কোন বিধান সংযোজন বিয়োজনের ক্ষমতা পৃথিবীতে অন্য কারো নেই। ইসলামী বিধান অনুসরণ-অনুকরণ করা প্রতিটি মানুষের ঈমানী দায়িত্ব। ইসলামী বিধানের চেয়ে অন্য কোন কিছুই মানুষের কল্যাণ ও সাফল্য লাভে সর্বতভাবে ফলপ্রসূ হতে পারে না। প্রত্যেক মুসলমানগণই ধর্মীয় নীতি-বিধানের গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ। ইসলামের কোন নীতি বা বিধান নিয়ে কোনরুপ কটাক্ষ করা বা সমালোচনা করার কোন অধিকার কারো নেই। ইসলামের মৌলিক যতগুলো বিষয় আছে সবগুলোর ওপর বিশ্বাস রাখা ঈমানের দাবি। মৌলিক যে কোন বিষয়কে কেউ অস্বীকার করলে ঈমান থাকবে না। এমনকি ঠাট্রাচ্ছলেও শরীয়তের কোন মৌলিক বিষয়ের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করলে, তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে । তেমনিভাবে কেউ যদি ইসলামের কোন বিধান কিংবা রাসূলের কোন সুন্নাত বা মুস্তাহাব (ইসলামের যে কোন বিষয়) নিয়ে কটুক্তি,বিদ্রুপ, উপহাস করে তাহলে তার ঈমান চলে যাবে। সম্প্রতি দেশে নাস্তিক্য ও ধর্মদ্রোহ আজ নাগিনীর বিষাক্ত ফণা তুলেছে। ইসলাম ধর্ম, প্রিয় নবী মোহাম্মদ সা. সহ ইসলামের বিভিন্ন বিধানকে নিয়ে একের পর এক কটুক্তি,বিদ্রুপ অব্যাহত রয়েছে। মুসলিম নামধারী একদল উন্মত্ত,বিদ্বিষ্ট,কুলাঙ্গার তাদের নানা ধরণের বক্তব্য-বিবৃতি ও কর্মকান্ডে দেশকে নিয়ে যাচ্ছে বর্বরতার তিমিরে। বক্ষমান নিবন্ধে নাস্তিক-মুরতাদেও শাস্তির বিধান সর্ম্পকে আলোকপাত করা হলো। এ সর্ম্পকে মহান আল্লাহ ও রাসুলের (সা.) ভাষায়ও ইসলাম,নবী সা. নিয়ে জঘন্য কটুক্তির জন্য শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডই হবে। রাসুলকে ভালবাসা-শ্রদ্ধা করা ইসলামের নির্দেশ। রাসুল সা: শানে বিয়াদবী করলে কারো ঈমান থাকবে না। এটা হাদিসের কথা। মুসলমান মাত্রই সে ইসলাম মানবে,রাসুল সা: কে অনুসরণ করবে। যারা মুমিন তারা আল্লাহর বিধান পালন করে এবং রাসুললুল্লাহ সা.কে অনুসরণ করে। মহান আল্লাহর এ দ্বীনের নামই ইসলাম। ইসলামের বিধান মানা প্রতিটি মুসলমানের ওপর অপরিহার্য। ধর্মীয় কোন বিধান নিয়ে উপহাস করা জগণ্যতম পাপ। যারা ধর্মীয় কোন বিধান বা প্রিয় নবী সা. সর্ম্পকে কটূক্তি করে তারা ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়। ইসলাম নিয়ে ব্যাঙ্গকারী ব্যক্তি কখনো মুসলমান থাকতে পারে না। বক্ষমান নিবন্ধে মুরতাদদের শাস্তি সর্ম্পকে আলোকপাত করার প্রয়াস করা হলো। এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত আলেম দ্বীন, মুফতি রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী রাহ. তার লিখিত প্রসিদ্ধ ফাতওয়া গ্রন্থ,‘আহসানুল ফাতওয়ার ১ম খন্ডের ৪২ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘ইসলামের কোন বিধান বা ছোট থেকে ছোট কোন সুন্নাতকে মন্দ বলে ধারণা করা কিংবা বিদ্রুপ করা আল্লাহ ও রাসুল্লাহ সা. বিদ্রুপ করারই নামান্তর। এর কুফরি হওয়ার মধ্যে কোন সন্দেহ নেই। অর্থাৎ যে কোন সুন্নাতকে অবজ্ঞাকারী বা উপহাসকারী ব্যক্তি কাফির হয়ে যায়। এতে কোন সন্দেহ নেই।
(-কিফায়াতুল মুফতী )
যারা মহান আল্লাহ, রাসুল সা: ও ইসালাম ধর্মকে বিশ্বাস করে না তারা নাস্তিক। আর ইসলাম গ্রহণ বা মুসলমান থাকার পর কেউ তা পরিত্যাগ করে নাস্তিক্যবাদ গ্রহণ করলে তাদেরকে ইসলামের পরিভাষায় মুরতাদ ধর্মচ্যুত বলে। যারা মুরতাদ হয়ে যাবে ইসলামী শরীয়তের হুকুম হলো তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া। কখনো যদি কোন নাস্তিক বা কোন মুসলমান পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়ে আল্লাহ রাসূল কুরআন বা ইসলামের কোন বিধান নিয়ে ঠাট্রা মস্কারী বা কটূক্তি করে বা রাসুলের অবমাননা করে তাহলে তারা যিনদীক তথা ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী সাব্যস্ত হয়। যার শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদন্ড। আর এ ধরণের ধর্মদ্রোহী যিনদীকদেরকে মৃত্যুদন্ড দেয়ার ক্ষেত্রে তাদেরকে তাওবা করে ফিরে আসার সুযোগ দেয়ারও প্রয়োজন হয় না। কেননা তারা ইসলাম ছেড়ে ভিন্নবিশ্বাস গ্রহণকারী নয় যে,তাদেরকে বুঝিয়ে তাদের সংশয় নিরসন করে ইসলামে ফিরিয়ে আনা হবে। বরং তারা জেনে বুঝেই কোন অসদ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য আল্লাহ রাসুল ইসলাম ও ইসলামের নীতি বিধান নিয়ে ঠাট্রা মস্কারী কটুক্তি বিদ্রুপ করায় লিপ্ত হয়েছে। তাই সরাসরি এ ইসলামদ্রোহী, এ সকল কুলাঙ্গাররা মৃত্যুদন্ডের উপযোক্ত হবে। ধর্ম ও রাসূল সর্ম্পকে কটুক্তিকারী ব্যক্তির শাস্তি স্বরুপ মৃত্যুদন্ডের বিধান প্রদান করা হয়েছে ইসলামী শরীয়তে। আর এ বিধান কুরআন হাদিস প্রভূতি দলীল দ্ধারা প্রমাণিত।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন কারীমে ইরশাদ করেন, যারা আল্লাহ ও তার রাসুলকে কষ্ট দেয় আল্লাহ তাদের প্রতি ইহকালে ও পরকালে অভিসম্পাত করেন এবং তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন অবমাননাকর শাস্তি। (সূরা আহযাব:৫৭ )
কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, “আর যদি তুমি তাদের জিজ্ঞেস করো, (তাদের বিদ্রুপ পূর্ণ আচরণের বিষয়ে) তবে তারা বলবে, আমরা তো কথার কথা বলেছিলাম এবং কৌতুক করেছিলাম। আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর হুকুম আহকামের সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে। ছলনা করনা, তোমরা কাফের হয়ে গেছ, ঈমান প্রকাশ করার পর।’ (সূরা তাওবা: ৬৫-৬৬)
অন্য আয়াতে আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘অভিশপ্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে তাদেরকে ধরা হবে এবং প্রাণবধ করা হবে। যারা পূর্বে চলে গিয়েছে তাদের ব্যাপারে এটাই ছিল আল্লাহর রীতি। আল্লাহর রীতিতে কখনও পরিবর্তন পাবেন না। (সূরা আহযাব: ৬১)
বিখ্যাত মুফাসসির আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী রা এ আয়াতের দ্বারা দলীল দিয়ে বলেন যে ব্যক্তি ইসলাম বা কুরআন সর্ম্পকে বিরুপ মন্তব্য করে বা রাসুলের ব্যপারে অবমাননকর কথা বলে ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে।
(-মাহাসিনুত তাওয়ীল ৫ খন্ড ১৪২ পৃষ্টা)
মুরতাদদের শাস্তির ব্যাপারে ফুকাহায়ে কেরামতের অভিমত: ইমাম আহমদ (রাহ.) বলেন, যে ব্যক্তি মহানবী (সা.)কে গালমন্দ করে, কটাক্ষ করে, চাই সে মুসলমান হাক বা কাফির, তার শাস্তি হলো মৃত্যুদন্ড। তার তওবা গ্রহণ করা হবে না। আল্লামা শামী ও ইমাম মালেক (রাহ.) সহ আরো অনেক ওলামায়ে কেরামের প্রসিদ্ধ মত হলো, মহানবী (সা.)কে কটাক্ষকারীর সাজা হলো মৃত্যুদন্ড। যা ‘হদ’ হিসেবে প্রয়োগ করা হবে, কুফরী হিসেবে নয়। যদি সে তওবা প্রকাশ করে। তাই তাদের নিকট তার তওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। অনুরূপভাবে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করার দ্বারাও কোন লাভ হবে না। তার সাজা ও নাস্তিকের সাজা এক ও অভিন্ন। চাই সে আটক হওয়ার পূর্বে তওবা করুক বা পরে। কেননা, এটা ‘হদ’ যা তওবা দ্বারা রহিত হয় না। শাফেয়ী ও হানাফী মাযহাব শাফেয়ী ও হানাফী মাযহাবের মতামতহলো, কটাক্ষকারী ও মুরতাদের হুকুম এক ও অভিন্ন। (-রসায়েলে ইবনে আবেদীন:১/৩২০)
হানাফী, মালেকী, শাফেয়ী ও হাম্বলী চারও মাযহাবের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত হলো, যদি কোন নামধারি মুসলমান প্রিয় নবী (সা.) কে কটাক্ষ বা বিদ্রুপ করে, তাহলে সে সম্পূর্ণ কাফের, মুরতাদ হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি তার কাফের হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ করবে সেও কাফের হয়ে যাবে। তার স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে এবং তার একমাত্র সাজা মৃত্যুদন্ড। মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা মুসলিম শাসকের উপর কর্তব্য।
বিষয়: বিবিধ
৩২৩৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
কিন্তু বর্বর ইসলাম ধর্মের অধিকাংশ বিধান এখন ইতিহাসের আস্তাকুরে চলে গেছে।
এরা বরং মুসলমান নাম ধারী হয়েও হিন্দু ধর্মের রীতি নীতিকেই বেশী ফলো করে যা ইসলাম ধর্মের বিপরীত ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন