এক মহিয়সী নারী "আমিনা কুতুব" তাঁর সংগ্রামী জীবন

লিখেছেন লিখেছেন রাজ্পুত্র ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৮:৪৬:০৪ রাত



-মহিয়সী নারী আমিনা কুতুব

আমার এই চিঠিটা অশ্রুভেজা বলে যদি না পড়তে পারো, আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। -আমিনা কুতুব

.

মিশরের ইখওয়ানুল মুসলিমীন (মুসলিম ব্রাদারহুড) এর প্রতিষ্ঠাতা সাইয়্যেদ কুতুব শহীদ এর বোন ছিলেন অামিনা। বিশ বছর বয়সে আমিনা বিয়ে করেন কামাল আস-সানানিরী নামক এক মুজাহিদকে। কামাল ছিলেন মিসরের ইখওয়ানুল মুসলিমীনের প্রথম সারির একজন নেতা। ১৯৮১ সনের ৬ই নভেম্বরের ভোর বেলা থেকে শুরু হলো আমিনা কুতুবের বৈধব্যের জীবন।

কামাল যেদিন শহীদ হন, সারা রাত আমিনা ঘুমাতে পারেননি। শোকে, ব্যাথায় বিহ্বল আমিনা সেদিন তার শহীদ স্বামীর কাছে লেখেন এক চিঠি। যে চিঠিখানা হতে পারে আরবি সাহিত্যের এক আমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। এতে একদিকে বেদনার ভারে নুয়ে পড়া এক মুজাহিদের আর্তচিৎকার যেমন ধ্বনিত হয়েছে, অন্যদিকে প্রত্যয়ের এমন এক সুর সেখানে শোনা যায়, যার তুলনা আমিনা কুতুব নিজেই।

তিনি লিখেছেনঃ

"এই চিঠি তোমার জন্য। হ্যাঁ, আমি তোমার কাছেই এই গভীর রাতে লিখছি...... মনে আছে আমার কথা? আমাকে ছেড়ে তুমি চলে গেছ, আর ফিরে আসনি। আমার এ লেখা তোমার কাছে এমন চিঠি যা তুমি কখনোই দেখবেনা, কখনোই তুমি তা পড়বেনা... আর কোনদিন তুমি তার উত্তরও দেবেনা। এতসব জানার পরেও আমি তোমাকে লিখছি...... আমার অশ্রুর বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার পরেও আমি লিখছি।

জানি, তুমি ফিরে আসার জন্য এবারে চলে যাওনি... আমার মন বলেছিল তুমি আর ফিরে আসবেনা। কিন্তু জালিমেরা আমার সাথে শেষ কথা বলার সুযোগও তোমাকে দেয়নি। আমি জানি তুমি এখন তোমার সেই ঘরের মাঝে বসে আছ, যেখানে থাকার জন্য আমাকে কত স্বপ্ন দেখাতে, আর নিজে কত সংগ্রাম করতে ।

আমার চিঠি লেখা সেই জন্য। তোমাকে কি এমন সফলতার জন্য স্বাগত জানাতে হবেনা? আমি লিখছি কেন জান? অনেক কষ্টের পথ পাড়ি দিয়ে, অনেক বেদনা সয়ে সয়ে, আমার এই মাথাটা আবার তোমার কোলে রাখতে চাই...... আমার এই চিঠিটা অশ্রুভেজা বলে যদি না পড়তে পার, আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। তোমার কাছে হেঁটে হেঁটে যাওয়ার জন্য আমাকে একা ফেলে গেছ তো! তাই একটু কাঁদছি... এ কান্না বিরহ ব্যথায়, এ কান্না তোমাকে পাবার আশায়...".

বিষয়: বিবিধ

১৪৩৭ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

380399
০৩ ডিসেম্বর ২০১৬ রাত ০৯:২৯
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : আমিনা কুতুবের এই চিঠিটাকে (এটা একটা কবিতা হিসেবেই উনি লিখেছিলেন উনার হাসবেন্ড মারা যাবার পরে) পরে কেউ মনে হয় সুর দিয়েছিলো | এটা একটা খুবই জনপ্রিয় নাশিদ হিসেবে মিশরে বিখ্যাত | উনি সম্ভবত ২০০৭ সালে মারা গিয়েছেন |
380401
০৩ ডিসেম্বর ২০১৬ রাত ১০:৫১
স্বপন২ লিখেছেন : চমৎকার, ভালো লাগলো,
380419
০৪ ডিসেম্বর ২০১৬ রাত ১২:০৩
মনসুর আহামেদ লিখেছেন :
ভালো লাগলো
380420
০৪ ডিসেম্বর ২০১৬ রাত ১২:০৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
380422
০৪ ডিসেম্বর ২০১৬ রাত ১২:৩৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এ চিঠি তোমারই জন্য আমি লিখছি গভির রাতে
মনে কি পরে আমার কথা? গিয়েছ ছেড়ে সে রাতে
এ এমন চিঠি তোমার কাছে কখনও পড়বেনা, দেখবেনা
উত্তর কভু দেবেনা।
তবুও লিখছি এই চিঠি আমি অশ্র ভেজা চোখে।
জানি তুমি গিয়েছে চলে আর আসবেনা ফিরে।
জেনেছি আমি যেদিন তুমি গেলে আমায় ছেড়ে
বলতে দেয়নি শেষ কথাটুকু তারা তোমার সাথে।
জানি তুমি এখন আছ সেই সপ্নের ঘরে।
আমায় ডেকেছিলে যে ঘরের সপ্ন আর সংগ্রামে।
এই চিঠি শুধু সেই জন্য
তোমায় স্বাগত জানাতে
আমিও যেতে চাই সেই বেদনার পথে
তোমার কোলে মাথাটি আবার রাখতে।
আমার অশ্রুভেজা চিঠি থেকে যদি মুছে যায় লিখা
তবে ক্ষমা কর আমায়।
এ শুধু আমার বিরহের কান্না তোমাকে পাওয়ার আশায়।
380423
০৪ ডিসেম্বর ২০১৬ রাত ০১:১২
কুয়েত থেকে লিখেছেন : যুগে যুগে যেখানেই ইসলামী আন্দোলন মথা উঁচু করে দাড়াবে সে খাওনেই জালিম শাহী এই আচরনই করবে।এই চিঠিটা অশ্রুভেজা বলে যদি না পড়তে পার ক্ষমা করে দিয়ো। লেখাটির জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
380428
০৪ ডিসেম্বর ২০১৬ রাত ০৩:১৯
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! সত্য ও ইসলামের কংকময় পথ পাড়ি দিয়েই তো জান্নাতের সবুজ গালিচা বিছানো পথ......। মহান আল্লাহ্ কবুল করুন উনাদের আত্মত্যাগ। আমিন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File