ভারতীয় মাদ্রাসায় শুধু মুসলিম নয়, আকৃষ্ট হচ্ছে হিন্দু ছাত্রছাত্রীরাও! কিন্তু কেন?
লিখেছেন লিখেছেন রাজ্পুত্র ২১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০৬:১১ রাত
মাদ্রাসা মানেই যে মুসলিম সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরাই সেখানে পড়াশোনা করে এই মিথ ধীরে ধীরে ভাঙতে শুরু হিন্দু পরিবারগুলিও ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসা স্কুলে শিক্ষা লাভের জন্য এগিয়ে আসছে। পশ্চিমবঙ্গের ওরগ্রাম-এর চতুষ্পল্লি হাই মাদ্রাসা স্কুলে এমন নিদর করেছে। ্শন তো রয়েছেই। দশম শ্রেণীর ২০০ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই সেখানে হিন্দু ঘরের ছেলেমেয়ে। আলজাজিরা (এখানে ক্লিক করে পড়ুন) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি খবরে এমন তথ্যই উঠে এল।
স্কুলের ছাত্রী বছর পনেরোর পূজা ক্ষেত্রপালের কথায়, চতুষ্পল্লি মাদ্রাসা স্কুল হলেও স্থানীয় বাসিন্দারা এই স্কুলকে উন্নত মানের সাধারণ স্কুল হিসাবেই মান্য করে। সেই কারণেই আমার মা-বাবা আমাকেও মাদ্রাসার এই স্কুলে পাঠিয়েছেন।
কলকাতার ১২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত ওরাগ্রাম মাদ্রাসা স্কুল। স্কুলের হেডমাস্টার আনওয়ার হোসেন জানালেন, স্কুলের আধুনিক পাঠ্যক্রমের কারণেই হিন্দু অধ্যুষিত সমাজে মাদ্রাসা স্কুল জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
সাধারণ মানুষ মনে করে মাদ্রাসা স্কুলে মূলত ধার্মিক বিষয়ই পড়ানো হয় ছাত্রদের। কিন্তু ধীরে ধীরে মানুষের এই ধারণায় বদল আনা গিয়েছে বলে জানালেন হোসেন। ছাত্রছাত্রীদের সেই সমস্ত সাধারণ বিষয় যা নিয়মিত স্কুলে পড়ানো হয় তার শিক্ষাও দেওয়া হয়। এখান থেকে পাস করার পর নিছের পছন্দ মতো ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ গড়তে পারবে। আর এই কারণেই মাদ্রাসা স্কুলের মোট ছাত্রছাত্রীর ৬০ শতাংশেরও বেশী অমুসলিম সম্প্রদায়ের। এমনকী ৩২ জন শিক্ষকের মধ্যে ১১ জন শিক্ষকও হিন্দু সম্প্রদায়ের বলে জানালেন হোসেন।
আধুনিক পাঠক্রম
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্বীকৃত প্রায় ৬০০টি মাদ্রাসা স্কুল পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে। এই সব স্কুলে রাজ্য সরকার নিয়মিত স্কুলের পাঠ্যক্রম চালু করেছে। এবং প্রায় সবকটি স্কুলেই অমুসলিম সম্প্রদায় গোষ্ঠীর ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করেন।
সাধারণ স্কুলের মতোই এই মাদ্রাসা স্কুলগুলিতে ভৌতবিজ্ঞান, রসায়ণ, জীববিজ্ঞান, ভূগোল, গণিত, কম্পিউচার বিজ্ঞান, ইংরাজি ভাষা ও সাহিত্যের মতো নিয়মিত ভাষাগুলি পড়ানো হয়। আরবি ভাষা ও মুসলিম সংক্রান্ত বিদ্যা পাঠ্যক্রমের একটা ছোট অংশ।
বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেই প্রধানত এই মাদ্রাসা স্কুলগুলি গঠিত হয়েছে। সরকারি অনুদানে চলে স্কুল। এখানে বিমানূল্যে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করতে পারে। স্কুলের ইউনিফর্ম ও মিড ডে মিল দেওয়া হয় স্কুলের পক্ষ থেকেই। মূলত গরীব ও নিম্নবিত্ত পরিবারের ছাত্রছাত্রীকে আকৃষ্ট করতেই এই সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে মাদ্রাসার অধিকাংশ ছাত্রছাত্রই ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, উকিল-এর মতো পেশায় সুযোগ পাচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক প্রশংসা
২০০৭ সালে প্রথম পশ্চিমবঙ্গেই মাদ্রাসা স্কুলের পাঠ্যক্রমকে আধুনিক পাঠক্রমে পরিণত করা হয়। দু'বছর পরে আন্তর্জাতিক স্তরে পশ্চিমবঙ্গ এর জন্য প্রশংসিত হয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অফ মাদ্রাসা এডুকেশন (ডব্লুবিবিএমই)-এর সম্পাদক মহম্মদ ফাজলে রাব্বির কথায়, মাদ্রাসার আধুনিকিকরণ সমাজকে উপকৃত করছে তাই এই প্রক্রিয়াই চলতে থাকবে ভবিষ্যতেও।
তথ্যসূত্র: Click this link
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১৪৬৪ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ।
মাদ্রাসাতে ক্বুরআন হাদিস পড়ানো হয় - এটা খুবই কমন।
এসব হিন্দু ঘরের পোলাপানেরা কি নিজেদের ধর্ম থেকে বের হয়ে মুসলমান হয়েছে ? কারণ এদের সাথে এক হয়ে পড়াশুনা করলে কচি মনের মুসলমান শিশুরা হিন্দুদের সংষ্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে যাবে যেটা ইসলাম ধর্মের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক ।
হিন্দুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে গীতা মহাভারত অন্যতম আবশ্যিক পাঠ্য সেখানে মুসলমানেরা পড়লে কি ঠিক হবে ?
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন