কবরের তিনটি প্রশ্ন ও উত্তর এবং আযাবের প্রকারভেদ
লিখেছেন লিখেছেন রাজ্পুত্র ০৫ আগস্ট, ২০১৫, ১১:১০:৫৬ সকাল
আসলে মানুষের মৃত্যুর কোন নিদৃষ্ট সময় নেই। যখনই মালিকের ডাক পড়বে তখনই যেতে হবে কবরে। কিন্তু কবরে যাবার প্রস্তুতি কি আছে আমাদের? কবরে তিনটি প্রশ্ন করা হবে কি সেই প্রশ্ন ও কি তার উত্তর তা কি আমরা জানি? আর আজাবই বা কত রকমের? হ্যাঁ এবিষয়গুলিই আজ আমরা জানবো এখানে।
কবরের ফেতনা বা পরীক্ষা:
১. বারা ইবনে ‘আজেব [রা] বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ [স]-এর সাথে জানাযায় বের হই।
----- এতে বর্ণিত হয়েছে নবী [স] বলেন: “কবরবাসীর নিকট দু' জন ফেরেশ্তা আসবেন। অত:পর তাকে উঠিয়ে বসিয়ে জিজ্ঞাসা করবেন:
-তোমার রব কে?
-তখন সে (মুমিন হলে) বলবে: আমার রব আল্লাহ।
-আবার জিজ্ঞেস করবেন, তোমার দ্বীন কি?
-উত্তরে বলবে: আমার দ্বীন ইসলাম।
-আবারো জিজ্ঞেস করবেন, তোমাদের নিকট প্রেরীত এ ব্যক্তিটি কে ছিলেন?
-সে বলবে: তিনি রাসূলুল্লাহ [স]।
( ১. হাদীসটি সহীহ, আহমাদ হাঃ ১৮৭৩৩, আবূ দাঊদ হাঃ ৪৭৫৩ শব্দ তারই)
২. আনাস [রা] থেকে বর্ণিত, নবী [স] বলেন:“বান্দাকে যখন তার কবরে রাখা হবে এবং তার সাথীরা সকলে চলে যাবে তখন সে তাদের জুতা-স্যান্ডেলের শব্দ শুনতে পাবে। এরপর তার নিকট দু' জন ফেরেশ্তা আসবেন এবং তাকে বসিয়ে বলবেন:
-এ মানুষটি মুহাম্মাদ (স) সম্পর্কে (দুনিয়াতে) কি বলতে?
-তখন সে (মুমিন হলে) বলবে: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূল।
-অত:পর তাকে বলা হবে: দেখ তোমার জাহান্নামের সে
স্থানটি যার পরিবর্তে আল্লাহ তা‘য়ালা তোমাকে জান্নাতের স্থান প্রদান করেছেন।
-নবী [স] বলেন: তখন সে উভয় স্থান অবলোকন করবে।
-আর কাফের বা মুনাফেক বলবে: জানি না, মানুষেরা যা বলতো তাই বলতাম।
-তখন তাকে বলা হবে: জাননি এবং পড়নি। অত:পর তার দু' কানের মাঝে লোহার হাতুড়ী দ্বারা প্রহার করা হবে। আর সে এমন চিৎকার করবে যা মানুষ ও জ্বিন ব্যতীত তার পার্শ্ববর্তী সকলেই শুনবে।” ( ১. বুখারী হাঃ১৩৩৮ শব্দ তারই ও মুসলিম হাঃ ২৮৭০)
কবর আজাব-এর প্রকার:
কবরের আজাব দু' প্রকার:
১. স্থায়ী আজাব যা কিয়ামত পর্যন্ত চলবে এমন শাস্তি। ইহা কাফের ও মুনাফেকদের জন্য। যেমন অল্লাহ তা‘য়ালা ফেরাউনের পরিবার সম্পকের্ এরশাদ করেছেন:
“সকালে ও সন্ধ্যায় তাদেরকে আগুনের সামনে পেশ করা হয় এবং যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন আদেশ করা হবে, ফেরাউন গোত্রকে কঠিনতর আজাবে দাখিল কর।” [সূরা মুমিন: ৪৬]
২. নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আজাব যা তাওহীদপন্থী পাপীষ্টদের ‘আজাব। তাদের পাপানুসারে আজাব দেয়া হবে। অত:পর শাস্তি হালকা করে দেয়া হবে অথবা আল্লাহর রহমতে, কিংবা পাপধ্বংসের ফলে যেমন- ছদকা জারিয়া অথবা উপকারী জ্ঞান বা সৎ সন্তানের দোয়া ইত্যাদি কারণে আজাব বন্ধ করে দেয়া হবে।
ইবনে উমার [রা] বলেন, রাসূলুল্লাহ [স] বলেন: “তোমাদের কেউ যখন মারা যায় তখন তাকে সকাল-সন্ধ্যা তার আসন দেখানো হয়। যদি জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত হয় তবে জান্নাতীদের, আর যদি জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হয় তবে জাহান্নামীদের আসন দেখানো হয়। আর তাকে বলা হয়, ইহা তোমার আসন। এভাবে কিয়ামতের দিন পুনরুত্থান পর্যন্ত হতেই থাকবে। (বুখারী হাঃ ১৩৭৯ ও মুসলিম হাঃ ২৮৬৬ শব্দ তারই)
বিষয়: বিবিধ
৩৩৫০ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন