বাংলাদেশের জয়ী হওয়া নিয়ে বিদেশি পত্রিকাগুলোর শিরোনাম ও মন্তব্য
লিখেছেন লিখেছেন রাজ্পুত্র ২২ জুন, ২০১৫, ০২:৫৯:২১ দুপুর
এরকম বাংলাদেশকে যেন আমরা সবসময় সবখানে দেখতে চাই। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নাকি বরাবরের নির্বিকার চরিত্র!
অপ্রত্যাশিত সিরিজ হারের পর সাংবাদিক সম্মেলন তখন মাঝপথে। ভারতীয় সাংবাদিকদের কেউ একজন প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করলেন ভারত অধিনায়ককে— আপনি কি ক্রিকেটটা আর উপভোগ করছেন? মনে হচ্ছে না, ওয়ান ডে অধিনায়কত্বেও এ বার একটা বদল দরকার? ঠিক যা করে বিরাট কোহলিকে টেস্টে আনা হয়েছে?
“আপনাদের যদি মনে হয় আমার জন্যই ভারতীয় ক্রিকেট ডুবছে, আমাকে সরিয়ে দিলেই সব সমস্যা মিটে যাবে, তা হলে দিন না। আমাকে সরিয়ে দিন,” মীরপুরের প্রেস কনফারেন্স রুমে কথাগুলো যখন বলছেন ভারত অধিনায়ক, প্রশ্নকর্তাদের স্তব্ধ দেখায়। এর চেয়ে অনেক বেশি উথাল-পাথাল সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন ধোনি। জাতীয় মিডিয়া কিছু একটা খুঁজে পেলেই তাঁকে প্রবল ভাবে টেনে নামাতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু এত অভিমানী তাঁকে কোনও দিন দেখায়নি। রবিবাসরীয় মীরপুরই প্রথম।
“আমি তো বলিনি আমাকে নিয়ে এসো। ক্যাপ্টেন করে দাও। আমি তখনই দায়িত্ব নিয়েছিলাম, যখন আমাকে নিতে বলা হয়েছিল। আজ যদি মনে হয় সেই দায়িত্বটা অন্য কাউকে দিলে ভাল হয়, তা হলে সেটাই হোক। আমার কোনও সমস্যা নেই। আমার কাছে দেশের হয়ে খেলাটাই সবচেয়ে বড় গর্ব,” উত্তরকে নিজেই দীর্ঘায়িত করে চলেন ধোনি। বলতে থাকেন, “আর ভারতীয় মিডিয়া আমাকে খুব ভালবাসে। আমি হলাম এমন একটা লোক, যাকে কোনও কিছু হলেই দোষী হতে হয়। সেটা তো হতেই হবে, না? কারণ আমার জন্যই তো সব কিছু হয়ে থাকে। আর দেখুন না, আপনাদের প্রশ্ন শুনে বাংলাদেশ মিডিয়াও কী রকম হাসছে!”-Click this link
হিংস্র মুখগুলো ঝুঁকে পড়ছে রেলিং ধরে, মাঠ দিয়ে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে হেঁটে আসতে দেখে গলার শিরা ফাটিয়ে ততধিক বাড়ছে বিদ্রুপের ‘মওকা, মওকা..’ চিত্কার। শান্ত ভারত অধিনায়ক ওপরে তাকালেন একবার। হেসে হাত দিয়ে যেন বোঝাতে চাইলেন, আমি নই। ও সবের পিছনে আমি নই। পাঁচ মিনিটের মধ্যে মীরপুর প্রেস কনফারেন্স রুম আর অভিমানের বহিঃপ্রকাশ, সরিয়ে দিন আমাকে। দেশের ক্রিকেটের তাতে ভাল হলে সরিয়ে দিন!
আর কিছু ভাবতে না পেরে মাঠে শুধু লাফাতেই শুরু করে দিলেন মাশরফি মর্তুজা। কে বলবে, তাঁর হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের সংখ্যা এক নয়, দুই নয়, ছয়! উনিশের এক বাঙালি পেসারকে দেখা গেল এ বার এক ঝলক। অধিনায়কের সিংহ-হৃদয়ে মুখ লুকিয়ে। সস্নেহে একটা হাত অবিরাম ঘুরে যাচ্ছে পেসারের মুখে, হাতে, চুলে। অধিনায়কের হাত।
হাজার-হাজার বোতল রাতের ঢাকা আকাশে ছুঁড়ে, বাঘের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে, বুকে ডোরাকাটা দাগ এঁকে, ঝরঝরিয়ে কেঁদে ফেলে রবিবাসরীয় মীরপুরে নতুন ক্রিকেট-সূর্য এনে ফেলল বাংলাদেশ। ভারতকে প্রথম বারের জন্য ওয়ান ডে সিরিজে হারিয়ে দেশের ক্রিকেটকে এ বার ইতিহাসের পাতায় তুলে ফেললেন মাশরফি মর্তুজার টিমের এগারো বাঙালি। তিন ম্যাচের সিরিজ রবিবারেই শেষ, অন্তিম ম্যাচ এখন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের সম্মানরক্ষার প্রয়োজনেই পড়ে। কোনও সন্দেহ নেই ঢাকা আজ ঘুমোবে না। বগুড়া ঘুমোবে না। কুমিল্লা ঘুমোবে না। চট্টগ্রাম ঘুমোবে না। প্রথমে নিউজিল্যান্ড। তার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাকিস্তান। শেষে ভারত। সোনার বাংলার ক্রিকেট-ইতিহাসে নতুন স্বর্ণ পালকের জন্ম হয় যে রাতে, সেখানে আর ঘুমনো সম্ভব?-Click this link
বিষয়: বিবিধ
৯৬২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক কষ্টেই ভারতিয় মিডিয়া স্বিকার করেছে বাংলাদেশের সাফল্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন