মোহাম্মদ মুরসি একজন বীরের নাম-গায়ের জোড়ে অবৈধভাবে তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হলেও মানুষের মন থেকে তাকে সরানো যাবেনা কখনও
লিখেছেন লিখেছেন রাজ্পুত্র ২০ মে, ২০১৫, ১১:০৮:০৮ রাত
৩০ বছর পর মিশরের মানুষ পেয়েছিল নতুন নেতা মোহাম্মদ মুরসিকে। মুরসির জীবনের শুরটা হয়েছিল অধ্যাপনা দিয়ে। এরপর সময়ের পালাবদলে তিনি এখন মিশরের গনতন্ত্রের পথপ্রদর্শক। ১৯৫১ সালের ২০ আগষ্ট মিশরে জন্ম গ্রহণ করেন মোহম্মদ মুরসি। কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ালেখা শেষ করে উচ্চতর ডিগ্রী নিতে যান যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায়।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ৩ বছর সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন তিনি। তারপর ৮৫তে আবারো মিশরে ফিরে আসেন জাগাজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে।
মুরসি রাজনীতির মাঠে প্রবেশ করেন তারও অনেক পরে। ২০০০-থেকে ২০০৫ পর্যন্ত পার্লামেন্টে মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। মুরসি ব্রাদারহুড দলটির উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন।
২০১১ সালে ব্রাদারহুডের অর্থায়নে পরিচালিত ফ্রিডম এন্ড জাস্টিস পার্টির প্রধান হন মুরসি।
তবে এই মিশরীয়র ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে এই বছরের শুরুতে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জন্য ব্রাদ্রাহুডের প্রার্থী খায়রাত আল সাতের অযোগ্য ঘোষনার পরই সামনে চলে আসেন মুরসি।
এখন নতুন জীবন শরু হলো তার। নির্বাচনে দলের জন্য জয় উপহার দিয়ে মিশরের হাজার মানুষের পথপর্দশক হয়ে একসাথে হাঁটবেন গণতন্ত্রের পথে।
এর পর যা হলো:
২০১১ থেকে ২০১৩। মাত্র দুই বছরের ব্যবধান। এবার মোহাম্মদ মুরসির পদত্যাগের দাবিতে অবৈধভাবে উষ্কানিমূলকভাবে উত্তাল করা হয় মিসরের তাহরির স্কয়ার।
গত ৩ জুলাই ২০১৩ ঈসায়ী বুধবার দিবাগত রাতে গণবিক্ষোভের মুখে দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র এক বছরের মাথায় গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সরিয়ে দিয়েছে সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে দেশের সংবিধান স্থগিত করে প্রধান বিচারক আদলি মানসুরকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করা হয়েছে।
গত ৩ জুলাই ২০১৩ ঈসায়ী বুধবার দিবাগত রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেন, দেশকে বাঁচাতে মুরসিকে সরিয়ে দিয়ে পশ্চিমা চাটুকার সেনাবাহিনী তাদের ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ পালন করেছে।
সেনাপ্রধান টেলিভিশনে ভাষণ দেয়ার সময় মুরসিবিরোধী লাখ লাখ উৎফুল্ল মানুষ রাস্তায় নেমে আসে যারা আসলে পূর্ব সরকারের অবৈধ সুবিধাভোগি। তারা শ্লোগান দিতে থাকে, ‘জনগণ-সেনাবাহিনী ভাই ভাই।’
প্রায় দুই বছর আগে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছিল তাহরির স্কয়ার। ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল। তার পদত্যাগের পর বাঁধভাঙা উল্লাস করেছিল মিসরের জনগণ।
মোহাম্মদ মুরসিসহ ক্ষমতাসীন ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির শীর্ষ কয়েকজন নেতার দেশত্যাগের উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেনাবাহিনী। এর আগে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদসহ রাজধানী কায়রোর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যানে সজ্জিত সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
রাষ্ট্রীয় আল-আহরাম পত্রিকায় বলা হয়, ৩ জুলাই ২০১৩ ঈসায়ী তারিখে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটার দিকে সেনাপ্রধান সিসি প্রেসিডেন্ট মুরসিকে জানিয়ে দেন, তিনি আর মিসরের প্রেসিডেন্ট নেই। এটা কি সেনা বাহীনির দায়িত্ব?
ক্ষমতাচ্যুত করার পর মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে একটি সেনা স্থাপনায় আটকে রাখা হয়েছে। মুরসির শীর্ষ সহযোগীরাও তার সঙ্গে আটক রয়েছেন।
অপরদিকে মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি বলেছেন, ‘আমি মাত্র এক বছর আগে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছি। আমার সাংবিধানিক বৈধতা রয়েছে। আমি জীবন দিয়ে হলেও আমার দায়িত্ব পালন করে যাব।’
গত ২ জুলাই ২০১৩ ঈসায়ী মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মুরসির পক্ষে লক্ষ লক্ষ লোক রাস্তায় নেমে আসে। তারা মুরসির পক্ষে শ্লোগান দেয়। কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে মুরসি সমর্থক মুসলিম ব্রাদারহুডের একটি মিছিলে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে ২২ জন নিহত ও ২শ জন আহত হয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ক্ষমতা দখল করবে না।
অন্যদিকে তাহরির স্কয়ারে বিরোধীদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। সেখানে ব্যাপকহারে সম্ভ্রমহানির ঘটনাও ঘটছে বলে বিভিন্ন মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য ঘটনা-
২৮ নভেম্বর ২০১১: মিসরে ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের যুগের অবসানের পর দেশটিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রথম দফায় ভোট নেয়া হয়। ইসলামপন্থী দলগুলো নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয়ী হয়। এর মধ্যে অর্ধেক ভোট পায় মুসলিম ব্রাদারহুড।
৩০ জুন ২০১২: নির্বাচনে ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী মোহাম্মদ মুরসি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন।
১২ আগস্ট ২০১২: মিসরের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল হুসেইন তানতাউয়ি ও সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ সামি আনানকে অপসারণ করেন প্রেসিডেন্ট মুরসি। দুই জেনারেলকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি মুরসি সামরিক পরিষদের আনা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্বকারী সাংবিধানিক সংশোধনীও বাতিল করেন।
২২ নভেম্বর ২০১২: প্রেসিডেন্ট মুরসি একাধিক ডিক্রি জারির মাধ্যমে মুরসি একছত্র ক্ষমতার অধিকারী হন। ঘোষণায় বলা হয়েছে, তার ডিক্রি, সিদ্ধান্ত বা জারি করা আইনকে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না। ঘোষণায় আরও বলা হয়, কোনো আদালত বর্তমান সাংবিধানিক গণপরিষদকে বিলুপ্ত করতে পারবে না। এ পরিষদ মিসরের নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করছিল। তবে ৮ ডিসেম্বর এ ঘোষণা বাতিল করেন মুরসি।
১৫ ও ২২ ডিসেম্বর ২০১২: খসড়া সংবিধানের উপর প্রথম দফায় গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠিত হয় ২২ ডিসেম্বর। খসড়া সংবিধানের পক্ষে ৬৪ শতাংশ ভোট পড়ে।
২৪ জানুয়ারি ২০১৩: ২০১১ সালের হোসনি মোবারকের পতনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় এক সপ্তাহে ৬০ জন নিহত হয়।
২ জুন ২০১৩: মিসরের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ বা শূরা কাউন্সিল এবং নতুন সংবিধান প্রণয়নকারী প্যানেলকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
৩০ জুন ২০১৩: মুরসির ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম বর্ষপূর্তিতে তার পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠে মিসর।
১ জুলাই ২০১৩: মুরসিকে পদত্যাগের জন্য এক দিনের সময় বেঁধে দেয় তার বিরোধীরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জনগণের দাবি মেনে না নিলে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ার করা হয়।
২ জুলাই ২০১৩: মিসরের রাজধানী কায়রোতে মুরসির সমর্থক ও বিরোধীপক্ষের কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ১৮ জন নিহত ও ২০০ জন আহত হয়।
৩ জুলাই ২০১৩: সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশটির সেনাপ্রধান আবেদল ফাত্তাহ আল-সিসি মোহাম্মদ মুরসিকে সরিয়ে দেয়। একই সঙ্গে দেশের সংবিধান স্থগিত করে প্রধান বিচারপতি আদলি মানসুরকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করা হয়।
মিসরের সেনাবাহিনীর বেঁধে দেয়া ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা প্রত্যাখ্যান করেন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন। গত ২ জুলাই ২০১৩ ঈসায়ী, মঙ্গলবার মধ্যরাতে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, প্রাণ গেলেও সরে যাবেন না।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার কাছ থেকে অবৈধভাবে জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল করেছে সেদেশের ইসলাম বিরোধী সেনাবাহীনি।
মুরসির মৃত্যুদণ্ড দুঃখজনক-নিউইয়র্ক টাইমস থেকে নেওয়া
নিকট ভবিষ্যতে মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ফাঁসিতে ঝোলানো হতে পারে। যে কপট বিচারের মাধ্যমে তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হলো, তা খুবই গুরুতর অবিচার।
তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আরও জোরালো কারণ রয়েছে। ইসলামপন্থী মানেই খারাপ—এমন ভিত্তিহীন অভিযোগে মিসর যে ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে সুদূরপ্রসারী ও নির্মম অভিযান চালাচ্ছে, সেটা ক্রমেই স্বতঃসিদ্ধ ভবিষ্যদ্বাণীতে পরিণত হচ্ছে। মুরসিকে ফাঁসিতে দেওয়ার মাধ্যমে একজন অপেক্ষাকৃত কম প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়ককে আমরা শহীদ হতে দেখব। এর মাধ্যমে মিসরবাসীকে দুর্ভাগ্যজনক ও অপ্রয়োজনীয় বার্তা দেওয়া হবে। তারা ঐতিহাসিকভাবে জঙ্গিত্ববিরোধী হলেও এর কারণে তারা হয়তো মনে করবে, অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়াটাই দাবি আদায়ের একমাত্র মাধ্যম।
মিসরে গত দুই বছরে সন্ত্রাসী আক্রমণ বেড়েছে, এমনকি সম্প্রতি বিচারকদের ওপরও হামলা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, সশস্ত্র সহিংসতা প্রতিক্রিয়া জানানোর গ্রহণযোগ্য মাধ্যমে পরিণত হচ্ছে। মুরসির রায় হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সিনাইয়ে তিনজন বিচারককে গুলি করে খুন করা হয়েছে। এ মাসের শুরুর দিকে কায়রোর উপশহরে এক বিচারককে লক্ষ্য করে বোমা হামলা করা হলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
২০১১ সালের জানুয়ারিতে আন্দোলনের সময় জেল ভাঙার ঘটনায় মদদ দেওয়ার অভিযোগে শতাধিক সহযোগীসহ মুরসিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সে সময় তিনি ছিলেন মুসলিম ব্রাদারহুডের মধ্যম সারির নেতা। মুসলিম ব্রাদারহুড এক ইসলামি আন্দোলন, এরা ১৯৭০-এর দশকের সহিংসতার বিরোধিতা করেছে। বিদ্রোহের পর তারাই মিসরের প্রধান শক্তি হিসেবে দাঁড়িয়ে যায়। তিনিসহ মুসলিম ব্রাদারহুডের অগণিত সদস্য জেল থেকে পালিয়েছিলেন, বিপ্লবের শুরুর দিকে তাঁদের অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছিল।
বিদ্রোহের পরবর্তী সেই স্বল্পস্থায়ী গণতন্ত্রের সময় মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতৃত্ব প্রচারণায় ব্যাপক সফলতা দেখালেও শাসনকার্যে তারা ছিলেন একেবারেই অদক্ষ। ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি সংসদের অধিকাংশ আসনে জয়লাভ করে। কিন্তু বিচার বিভাগ পরবর্তীকালে দলটি বিলুপ্ত করে দেয়। রাজনৈতিক প্রচারণায় ব্যাপক লড়াই-সংগ্রাম করে মুরসি মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা হন। আর মুরসি ক্ষমতায় আসার এক বছর পরই জন–অসন্তোষের সুযোগ নিয়ে সেনাপ্রধান অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করেন।
তারপর থেকেই দেশটির নেতারা ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে নির্মম প্রচারণা শুরু করেন, রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম তাঁদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার শুরু করে। গয়রহভাবে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়, গণবিচারে তাঁদের বিচার করা হয়। সেই বিচারে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। অভিযানের ফলে বহু মিসরীয় নির্বাসনে যেতে বাধ্য হয়, দেশটি থেকে উদার মানুষেরা হারিয়ে যায়।
জর্জ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপক ও পণ্ডিত এমাদ শাহিন বলেছেন, ‘মিসরের রাজনৈতিক মতানৈক্য সমাধানে দেশটির বিচারব্যবস্থাকে কেমন ঝামেলাপূর্ণ, রূঢ় ও নিপীড়নমূলকভাবে ব্যবহার করা হয়, এটা তার আরেকটি নিদর্শন। নির্মম অবিচারের স্বার্থে যথাযথ প্রক্রিয়া, তথ্য–প্রমাণ ও বিচারের ন্যূনতম মান জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে।’ আর এই শাহিন সাহেবকে তাঁর অনুপস্থিতিতে মুরসির সঙ্গে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সনদোস আসেমকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই তরুণী মুরসির গণমাধ্যম সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করতেন। বর্তমানে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লাভাতনিক স্কুল অব গভর্নমেন্টে পাবলিক পলিসি ডিগ্রির জন্য পড়াশোনা করছেন।
মিসরের সুন্নি মুসলমানদের শীর্ষ নেতা অর্থাৎ দেশটির প্রধান মুফতিকে এই দণ্ডাদেশে স্বাক্ষর করতে হবে, এরপরই তা বাস্তবায়ন করা যাবে। অভিযুক্তের আইনজীবীরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। কিন্তু দেশটির বিচারব্যবস্থার যে রকম রাজনৈতিকীকরণ হয়েছে, তাতে ন্যায়বিচার তাঁরা পাবেন কি না, সেটা বলা মুশকিল।
এদিকে রায়ের প্রতিক্রিয়ার মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতৃত্ব দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে: ‘যত দিন না আমরা জান্তাকে পরাজিত ও এই অবৈধ সরকারকে উৎখাত করছি, তত দিন দৈনিক বিপ্লবী প্রতিরোধ কার্যক্রম জোরদার করুন।’
মুসলিম ব্রাদারহুডের অনেক সমর্থকই এটাকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালানোর আহ্বান হিসেবে ভাবতে পারেন। যদিও নতুন মিসরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে। আর যাঁরা মর্মার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করবেন, তাঁরা এটাকে হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার আহ্বান হিসেবে ধরে নিতে পারেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর মিসরকে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামরিক সহায়তা দেয়। এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে তারা অনুমিতভাবেই নীরব প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা রায়ের ঘটনায় ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ । ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযান যে দীর্ঘ মেয়াদে দেশটিতে ছড়িয়ে পড়ছে, সে বিষয়েই যুক্তরাষ্ট্রকে আরও উদ্বিগ্ন হতে হবে। উল্লেখ্য, সেই অভিযানে তারা এ পর্যন্ত সমর্থন দিয়েছে।
(ইংরেজি থেকে অনুবাদ)
সূত্রগুলো: ১. Click this link
২. Click this link
৩. Click this link
বিষয়: বিবিধ
১২৪০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যুগে যুগে ফেরাউনদের হয় করুণ পরিণতি!
ইসলামের তারা করতে পারে না কোন ক্ষতি।
ফাঁসির নাটক আঙ্গুলের ইশারায় চলে আদালতে
আল্লাহর সৈনিকরা সদা শাহাদাতের পিয়ালা হাতে।
বিশ্ব মুসলিম কই গেলি আজ জানাও প্রতিবাদ,
নইলে প্রমাণ হবে তোরাও ফেরাউনের বশংবদ।
মুসলমানদের গর্ব-অহংকার ইখওয়ানুল মুসলেমীন
আল্লাহর জমিনে বিজয়ী করতে চায় ইকামতে দ্বীন,
নীল দরিয়ায় লোহিত ধারা, বইছে শহীদের নহর
মুক্তি পেতে মিশরবাসী গুণছে অপেক্ষার প্রহর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন