বাংলাদশের মিডিয়া জগৎ- রাজনৈতিক মালিকানা দেশ ও জনগনের জন্য হুমকি!
লিখেছেন লিখেছেন রাজ্পুত্র ২৩ নভেম্বর, ২০১৪, ০৯:৪৬:৫১ রাত
বাংলাদেশে অনেক টিভি চ্যানেল আছে। অনেক চ্যানেল বন্ধ হয়ে গেছে কোন যৌক্তিক কারন ছাড়া। গত বিএনপি সরকার চলে যাবার পর যেসব টিভি চ্যানেল এবং পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য গুলো হলো-
১. সিএসবি নিউজ
২. চ্যানেল ওয়ান
৩. দিগন্ত টিভি (সাময়িকভাবে বন্ধ কিন্তু এই সাময়িকের কোন সীমানা জানা নেই)
৪. ইসলামিক টিভি (সাময়িকভাবে বন্ধ কিন্তু এই সাময়িকের কোন সীমানা জানা নেই) ও
জনপ্রিয় একটি দৈনিক পত্রিকা - আমার দেশ (যার সম্পাদক বিশিষ্ট লেখক মাহমুদুর রহমান যিনি বর্তমানে জেলে আছেন, কি কারনে আছেন জানা নেই, বিচার চলছে কিনা তাও জানা নেই), অবশ্য অনলাইন আমার দেশ চালু আছে যদিও কিছুদিন আগে সেই অফিসও বিশেষ (!) আগুনে ভষ্মীভূত হয়ে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকাও এবছর (২০১৪) হুমকির মূখে পড়েছিল, যদিও এখন প্রকাশিত হচ্ছে।
উপরোক্ত বন্ধ মিডিয়া গুলো যে আর খুলবেনা তা সহজেই অনুমেয়। কারন ঐ মিডিয়াগুলো মানুষ বেশী দেখে যার ফলে নতুন মিডিয়াগুলো মানুষ কম দেখবে সাথে সাথে মানুষ অনেক সত্য জানবে।
এখন জানা যাক বাংলাদেশের সকল টিভি চ্যানেলের মালিক কারা এবং কোন দলের সমর্থক? তথ্যসূত্র-দেখুন
১। ইনডিপেনডেন্ট টিভি : সালমান এফ রহমান (আওয়ামীলীগ)।
২। ৭১ টিভি : বাম সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু (আওয়ামীলীগ পন্থী) ও মেঘনা গ্রুপ।
৩। দেশ টিভি : সাবের হোসেন চৌধরী(MP-আওয়ামীলী),, কিন্তু চালাচ্ছেন আসাদুজ্জামান নুর (আওয়ামীলীগ)।
৪। বৈশাখী টিভি : ব্যাবসায়ী গ্রুপ ডেসটিনি । কিন্তু চালাচ্ছেন
সাংবাদিক নেতা মন্জুরুল আহসান বুলবুল (আওয়ামীলীগ সমর্থক)।
৫। গাজী টিভি : গাজী গোলাম দস্তগীর(MP-আওয়ামীলীগ)।
৬। বাংলাভিশন : চালাচ্ছেন এক কালের বাম যুব নেতা মোস্তফা ফিরোজ। সব চাইতে বেশি শেয়ার সাবেক নগর পিতা
সাদেক হোসেন খোকার (বিএনপি)।
৭। চ্যানেল আই : ফরিদুর রেজা সাগর (সাংকৃতিক কর্মী)
৮ । এটি এন বাংলা : মাহফুজুর রহমান । চালাচ্ছেন সাংবাদিক জ.ই. মামুন। (আওয়ামী পন্থী)
৯। এটি এন নিউজ : চালাচ্ছেন মুন্নী সাহা। (আওয়ামী পন্থী)
১০। মোহনা টিভি : কামাল মজুমদার (MP-আওয়ামী লীগ)।
১১। সময় টিভি : আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের (আওয়ামী লীগ) ভাইয়ের টিভি।
১২। চ্যানেল ২৪ : আওয়ামী লীগ ঘরোনার হামিম গ্রুপের চেয়ারম্যান একে আজাদ।
১৩। এন টিভি : মোসাদ্দেক হোসেন ফালুর (বিএনপি)।
১৪ । দিগন্ত টিভি : জামাত নেতা মীর কাশেম আলীর (জামায়াত)
১৫ । ইসলামীক টিভি : খালেদা জিয়ার (বিএনপি) ভাই সাঈদ
ইস্কানদার।
১৬ । বিটিভি : একমাত্র সরাসরি সরকার নিয়ন্ত্রিত টিভি।
১৭। চ্যানেল ১ : এখন বন্ধ। কিন্তু মালিক ছিলেন বি.এন.পির
নেতা মির্জা আব্বাস ও গিয়াসুদ্দিন মামুন।
১৮। আর. টিভি : বেঙ্গল গ্রুপের মোরশেদুল ইসলাম (MP)
১৯। এস এ টিভি : এস এ পরিবহন/ সালাউদ্দিন আহমদ
২০) চ্যানেল ৯ : বি এন পি ঘরোনার এনায়েতুর রহমান বাপ্পি ও আওয়ামী লীগের সৈয়দ আশরাফের ভাবি।
২১. একুশে টি ভি : একুশে টেলিভিশনের মূল উদ্যেক্তা ছিলেন
আবু সাঈদ মাহমুদ। একুশে টেলিভিশনের ৭০ ভাগ মালিকানা টেলিভিশনটির বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের। বাকী ৩০ ভাগের মালিকানা আগের ১৩ জন উদ্যোক্তাদের মধ্যে ৬ জনের ৫ ভাগ করে। তারা হচ্ছেন, রউফ চৌধুরি (রেংগস গ্রুপ), এমরান মাহমুদ (মেট্রোওয়েভ), অঞ্জন চৌধুরি (স্কায়ার),
আব্দুস সালাম (সারাইটেক্স), লিয়কত হোসেন (এম এ এস
স্কায়ার গ্রুপ),
২২) মাছরাঙ্গা টিভি : স্কয়ার গ্রুপের অঞ্জন চৌধুরী।
২৩) মাই টি ভি : নাসির উদ্দিন সাথী।
২৪) যমুনা টি ভি : যমুনা গ্রুপের নুরুল ইসলাম বাবুল।
২৫) সাকা চৌধুরীর ছিল একটি চ্যানেল। সিএসবি নিউজ নামে। কিন্তু ১/১১ এর সময় বন্ধ হয়েছে।
এই হলো বাংলাদেশের মিডিয়ার একটি বড় অংশের চিত্র। যেখানে রাজনীতি মুক্ত টিভি চ্যানেলের সংখ্যা অতিসামান্য, সেখানে নিরপেক্ষ সংবাদ আশা করা কি 'আকাশ কুসুম' ভাবনা নয়। তারপরও সরকার বিরোধী মিডিয়া গুলোর অবস্থা তো অত্যন্ত করুন। তারা সব সময় বন্ধ হবার ভয় মাথায় নিয়ে খবর প্রচার করছে। এভাবে কি একটি দেশ এগিয়ে যাওয়া সম্ভব তার সঠিক গন্তব্যে?
আমাদের মিডিয়া রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত না হলে সাধারন মানুষের পক্ষে দাড়ানোর কেউ থাকে না। কারণ বাংলাদেশের মিডিয়া গুলোকে সবসময় তার সমর্থিত রাজনৈতিক দলের পক্ষে কথা বলতে দেখা যায়। বিশেষ করে যদি সেই রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকে।
অনেক সাংবাদিক আছেন যারা রাজনৈতিক নেতাদের থেকেও বড় দলবাজ, যারা কিনা আবার টিভির মালিকও হয়েছেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন সেই টিভির কি অবস্থা হতে পরে? যদিও সেসব টিভি কেউ দেখেনা কারন তাতে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে।
জানিনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতা-নেতৃীদের কবে নিজের স্বার্থ বাদ দিয়ে দেশের স্বার্থ নিয়ে ভাববার সময় হবে?
বতর্মান অবস্থায় মনে হয় দেশ নিয়ে ভাববার সময় কারো নেই? কারন বাংলাদেশের মালিক সাধারন জনগন নয়, মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ ও গোষ্ঠী!
তবুও আশায় থাকবো একটি সুশৃংখল বাংলাদেশের জন্য।
বিষয়: বিবিধ
১৮৭৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আশায় আশায় দিন যে গেল!
আশা পুরণ হল না!!
তবুও আশায় থাকতে চাই! কেননা,আশাহীন জীবন সে তো জীবন নয়!
তথ্যভিত্বিক সুন্দর সাবলীল উপস্হাপনার জন্যে অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহ জানাই!!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন