যঈফ ও জাল হাদীছ এবং মুসলিম সমাজে তার কুপ্রভাব.

লিখেছেন লিখেছেন কাজী আবু নাবিল ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১২:০৪:৪৯ দুপুর

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

ইসলামী শরীয়তের দুটি মূল উৎস হচ্ছে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ্‌ হাদীছ। মহানবী সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, আমি তোমাদেরমাঝে দুটি বস্তু রেখে যাচ্ছি, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ঐ দুটিকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পথভ্রষ্ট হবে না। সে দুটি হল আল্লাহর কিতাব (আল-কুরআন) এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাত (আল-হাদীছ)। (মুওয়াত্ত্বা ইমাম মালেক, মিশকাত হা/১৮৬; আল-মুস্তাদরাক লিল হাকেম, সনদ হাসান)

যেহেতু উপরোক্ত দুটি উৎসই ইসলামী জীবন-যাপনের মূল হাতিয়ার এবং এর উপরেই মুসলমানদের হেদায়াত নির্ভরশীল, সেহেতু যুগ পরস্পরায় ইসলামের শত্রুরা এ দুটি মূল উৎসের মাঝেই ভেজাল ঢুকানোর চেষ্টা করেছে। কুরআন যেহেতু মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময়েই লিখিত আকারে সংরক্ষিত ছিল। কণ্ঠস্থ ছিল বহু ছাহাবীর। কাজেই তারা কুরআনে হাত দেওয়ার দুঃসাহস দেখাতে পারেনি। কিন্তু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীছ ছিল এর কিছুটা ব্যতিক্রম। হাদীছ তখন লিখিত আকারে ছিল না। ছিল বিভিন্ন ছাহাবীর স্মৃতিপটে সংরক্ষিত। তাও আবার গচ্ছিত আকারে নয়। লিখিত আকারে খুব কমই সংরক্ষিত ছিল। এই সুযোগে ইসলামের চির শত্রুরা ও মুসলিম নামধারী বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহল এই দ্বিতীয় উৎসের মধ্যেতাদের কালো হাত বসিয়েছে। হারামকে হালাল ও হালালকে হারাম এবং যা শরীয়ত নয় তাকে শরীয়তে রূপ দেওয়ার জন্য বহু হাদীছ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম দিয়ে জাল করেছে। কিন্তু মহান রাব্বুল আলামীন যুগে যুগে এমন পণ্ডিতদেরও আবির্ভাব ঘটিয়েছেন, যারা ঐ সমস্ত যঈফ ও জাল হাদীছগুলিকে ছাটাই বাছাই করতে সক্ষম হয়েছেন।

ইমাম ইবনুল জাওযী বলেন, যখন কারো পক্ষে কুরআন মজীদে অনুপ্রবেশ ঘটানো সম্ভব হয়নি, তখন কিছু সংখ্যক লোক নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীছ বর্ণিত করতে শুরু করে এবং তিনি বলেননি এমন কথাও তাঁর নাম দিয়ে চালাতে শুরু করে। আর এর প্রেক্ষিতেই আল্লাহ তায়ালা এমন আলেমদের আবির্ভাব ঘটালেন, যাঁরা মিথ্যা বর্ণনা অপসারণ করতে শুরু করেন এবং ছহীহ হাদীছ কোনটি তা স্পষ্ট করে দেন। আল্লাহ তায়ালা এরূপ পণ্ডিত ব্যক্তিদের থেকে কোন যুগকেই শূন্য রাখেননি।তবে এ ধরনের ব্যক্তিত্বদের অস্তিত্ব সাম্প্রতিককালে হ্রাস পেয়েছে। এমনকি বর্তমানে তাদের প্রাপ্তি পশ্চিমা ডলফিন প্রাপ্তির চেয়েও দুর্লভ হয়ে পড়েছে। (সিলসিলাতুল আহাদীছ আয-যাঈফাহ ওয়াল মওযূআহ ১/৪১।)

ইমাম ইবনুল জাওযীর যুগেই যখন হাদীছের মহা পন্ডিতদের এরূপ অভাব দেখা দিয়েছিল, সেখানে বর্তমান যুগে এ অভাব আরও তীব্র হওয়া স্বাভাবিক নয় কি? বাস্তব পরিস্থিতিও তাই। সারা বিশ্বে আজ যঈফ ও জাল হাদীছের ছড়াছড়ি। কি খতীব, কি ওয়ায়েয, কি প্রবন্ধকার, কি তথাকথিত মুহাদ্দিস সকলের মুখে শুধু যঈফ ও জাল হাদীছ শুনা যায়। কিন্তু এগুলি থেকে সতর্ককারী রয়েছেন কজন? যুগ শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস আল্লামা নাছিরুদ্দীন আলবানীসহ হাতে গোনা কয়েকজন ব্যক্তিত্ব ছাড়া? তাদের লেখনীও আবার আরবীতে। যা বাংলাভাষী মুসলমানদের জন্য বুঝা কষ্টকর।

এই ঘোলাটে পরিস্থিতি অনুধাবন করেই আমরা উভয় বাংলার মানুষকে যঈফ ও জাল হাদীছ থেকে সতর্ক করার জন্য কলম হাতে নিয়েছি। আমরা বাংলার মুমিন সমাজকে জানিয়ে দিতে চাই যে, হাদীছ বর্ণনায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। হাদীছেরঅবস্থা না জেনে তা দিয়ে দলীল পেশ করা যাবে না। আমরা আরও চাই বাংলার মানুষকে ঐ সমস্ত হাদীছের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে, যেগুলিকে তারা অজ্ঞতা বশত: কিংবা ঐ রকম বই-কিতাব না থাকায় ছহীহ হাদীছ মনে করে আমল করে আসছে। অথচ তা নিতান্তই যঈফ বা জাল। বহুকাল আগে থেকেই হাদীছ শাস্ত্রের পণ্ডিতগণ এগুলোকে যঈফ ও জাল হাদীছ বলে ঘোষণা দিয়েছেন এবং বর্তমান যুগের হাদীছ শাস্ত্রবিদগণও ওগুলোর যঈফ ও জাল হওয়ার সাক্ষ্য দিয়েছেন। উদ্দেশ্য হচ্ছেমুসলমানদেরকে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর মিথ্যা রোপ করার কঠিন গোনাহ হতে রক্ষা করা।

যঈফ ও জাল হাদীছের সঙ্গা:

যঈফ হাদীছঃ যে হাদীছে ছহীহ ও হাসান হাদীছের শর্তসমূহ পাওয়া যায় না, তাকেই যঈফ হাদীছ বলে। (ইমাম নববী, মুক্বাদ্দামাহ মুসলিম পৃঃ ১৭; হাদীছ সংকলনের ইতিহাস, (ইফাবা ১৯৯২) পৃঃ ৩৯।)

ছহীহ হাদীছঃ ছহীহ হাদীছ ঐ হাদীছকে বলা হয় যারবর্ণনা সূত্র ধারাবাহিক রয়েছে এবং বর্ণনাকারীগণ সর্বতোভাবে ন্যায়পরায়ণ। যাদের স্মরণশক্তি অত্যন্ত প্রখর এবং যে হাদীছের মধ্যে কোন প্রকার দোষ নেই এবং অপর ছহীহ হাদীছের বিরোধীও নয়। (মিন আত্বয়াবিল মিনাহ ফি ইলমিল মুছত্বালাহ ও শরহে নুখবাতুল ফিক্‌র অবলম্বনে)।

হাসান হাদীছঃ ছহীহ হাদীছের সকল গুণ বিদ্যমানথাকার পর বর্ণনাকারীদের স্মরণশক্তি যদি কিছুটা হালকা প্রমাণিত হয় তবে তাকে হাসান হাদীছ বলা হয়। (প্রাগুক্ত)।

মাউযু বা জাল হাদীছঃ মাউযু বা জাল হাদীছ এর অপর নাম মিথ্যা হাদীছ। মওযু হাদীস বলা হয় ঐ হাদীকে যা বানানো হয়েছে এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দিকে সম্পর্কিত করা হয়েছে। (ডঃ মাহমুদ আহ-ত্বাহ্‌হান, তায়সীরু মুছতালাহিল হাদীছ, পৃঃ ৮৯।)

হাদীছ বর্ণনায় সতর্কতা অবলম্বন : হাদীছ বর্ণনার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নির্দোষ রাবীর হাদীছ গ্রহণ করতে হবে। পক্ষান্তরে যে রাবী দোষী সাব্যস্ত হবে,তার বর্ণিত হাদীছ প্রত্যাখ্যান করতে হবে।

আল্লাহ বলেন:

(يا أيُّهاَ الَّذِيْنَ آمَنُواْ إنْ جاَءَكُمْ فاَسِقٌ بِنَبَأٍ فَتَبَيَّنُوْا

“হে ঈমানদারগণ! তোমাদেরকে কোন ফাসেক ব্যক্তিকোন খবর দিলে তা যাচাই কর।” (হুজুরাত-৬)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

( منَ حَدَّثَ عَنِّيْ بِحَدِيْثٍ يَرَى أنَّهُ كَذِبٌ فَهُوَ أحَدُالْكاَذِبِيْنَ )

“যে ব্যক্তি আমার থেকে এমন হাদীছ বর্ণনা করে যে, তার ধারণা হয় ওটা মিথ্যাও হতে পারে, তবে সে অন্যতম সেরা মিথ্যুক। (মুসলিম)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন:

( كَفَى باِلْمَرْءِ كَذِباً أنْ يُحَدِّث بِكُلِّ ماَ سَمِعَ )

“একজন ব্যক্তির মিথ্যুক হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনবে তাই (পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে) বলে বেড়াবে।” (মুক্বাদ্দামা মুসলিম)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন:

( مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّداً فاَلْيَتَبَوَّءْ مَقْعَدَهُ مِنْ الناَّرِ )

“যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার উপরে মিথ্যারোপ করে, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে নির্ধারণ করে নেয়।” (বুখারী ও মুসলিম)।

উল্লেখিত আয়াত ও হাদীছগুলি দ্বারা এটাই প্রতিভাত হয় যে, হাদীছ বর্ণনার ক্ষেত্রে চরমসতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং ঢালাওভাবে হাদীছ বর্ণনা করা যাবে না। বরং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে হাদীছটি সত্যিকার অর্থে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীছ কি-না। যে ব্যক্তি শোনামাত্রই বর্ণনা করে সে অন্যতম সেরা মিথ্যুক এবং জেনে বুঝে মিথ্যা রোপ করলে তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম, এ বাক্যগুলো থেকে হাদীছের ছহীহ-যঈফ যাচাই কতটুক আবশ্যক তা সহজেই অনুমেয়।

ছহীহ-যঈফ যিনি পার্থক্য করতে জানেন না, তিনি আলেম নন:

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল ও ইসহাক বিন রাহওয়াইহবলেন, যে আলেম হাদীছের ছহীহ-যঈফ ও নাসেখ-মানসূখ জানেন্‌ না, তাকে আলেমই বলা চলে না। (মারেফাতু উলুমুল হাদীস গ্রন্থের বরাতে সহীহ তারগীব তারহীবের ভূমিকা- পৃঃ- ১৩)

ছিহাহ সিত্তা বলা কতদূর সঠিক?

আমরা বুখারী, মুসলিম, আবুদাউদ, নাসাঈ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ এসব মহামতি ইমামদের হাদীছ গ্রন্থ গুলিকে ছিহাহ সিত্তাহ বলে থাকি। যার অর্থ হাদীছের ছয়টি ছহীহ কিতাব। আসলে কি এ ছয় খানি কিতাবই ছহীহ হাদীছের কিতাব? একমাত্র ছহীহ হাদীছের কিতাব বলতে বুখারী ও মুসলিমকে বুঝানো হয়। যে দুটিকে একত্রে ছহীহায়েন বলা হয়। এই দুই কিতাবের সাথে অনেক বিদ্বান মুওয়াত্ত্বা মালিককেও শামিল করেছেন। এর বাইরে কোন কিতাবই নিরঙ্কুশ ছহীহ হাদীছের কিতাব নয়। বরং সব হাদীছের বিতাবেই ছহীহ-যঈফ মিশ্রিত রয়েছে। আবুদাউদ, নাসাঈ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ এ চারটিকিতাবে যঈফ হাদীছ মিশ্রিত রয়েছে। সুতরাং এগুলিকে বুখারী ও মুসলিমের সাথে মিলিয়ে ছিহাহ সিত্তাহ বলা ঠিক নয়। এমন কি সহীহ বুখারী মুসলিম ছাড়া অন্যান্য হাদীসের কিতাবের সংকলকগণ তাদের কিতাবগুলোকে সহীহ হিসেবেও নাম করণ করেন নি। যদিও অনেক আলেম এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ হাদীস সহীহ হওয়ার উপর ভিত্তি করে সিহাহ সিত্তাহ বলেছেন।

বিদ্বানদের গণনা মতে ঐ চারটি কিতাবে যঈফ হাদীছের সংখ্যা তিন হাযারের ঊর্ধ্বে রয়েছে।যেমন মুহাদ্দিস আলবানী (রহঃ) এর চারটি যঈফ গ্রন্থ অবলম্বনে বলা যায়-

• নাসাঈতে যঈফ হাদীছের সংখ্যা প্রায় ৪৪০ টি

• আবুদাউদে যঈফ হাদীছের সংখ্যা প্রায় ১১২৭ টি

• তিরমিযীতে যঈফ হাদীছের সংখ্যা প্রায় ৮২৯ টি

• ইবনু মাজাহ্‌তে যঈফ হাদীছের সংখ্যা প্রায় ৯৪৮ টি

———————————–

মোট = ৩৩৪৪ টি

এই চার খানা কিতাবকে পুরোপুরিভাবে ছহীহ হাদীছের সংকলন জ্ঞান করার কারণেই আমরা এগুলোর মধ্যে সন্নিবেশিত হাদীছগুলিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি না বা করার প্রয়োজন মনে করি না। অথচ এটি একটি মারাত্মক ভুল।

আল্লামা মোহাম্মাদ বিন ইবরাহীম ইয়ামানী বলেন: সুনানে ইবনে মাজাহ আবূদাউদ ও নাসাঈর পরবর্তী পর্যায়ের গ্রন্থ। উহার হাদীছসমূহে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো আবশ্যক। উহাতে ফযীলত সংক্রান্ত অধ্যায়ে একটি মওযূ হাদীছ রয়েছে। (হাদীছ সংকলনের ইতিহাস, (ইফাবা, ১৯৯২),পৃঃ ৫৬১। গৃহীত: ত্বানক্বীহুল আনওয়ার।)

উপরোক্ত চারখানা বিতাবের বাইরেও এমন অনেক কিতাব রয়েছে যার বেশীর ভাগ হাদীছ ছহীহ। যেমনছহীহ ইবনু খুযায়মা, ছহীহ ইবনু হিব্বান প্রভৃতি।

মোটকথা, হাদীছের প্রসিদ্ধ চয় খানা বিতাবকে ছিহাহ সিত্তাহ না বলে কুতুবু সিত্তাহ বা ছহীহাইন ও সুনানে আরবাআহ বলা উচিত।

প্রকাশ থাকে যে, অনেকে মনে করেন, যঈফ হাদীছ ফযীলতের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। তাদের এ ধারণা সঠিক নয়। বরং ফযীলত ও আহকাম সর্বক্ষেত্রেই যঈফ হাদীছ বর্জনীয়। ইহাই মুহাক্কেক্বীন বিদ্বানদের চূড়ান্ত ফায়সালা। আল্লামা জামালুদ্দীন ক্বাসেমী বলেন, ইমাম বুখারী, মুসলিম, ইয়াহ্‌ইয়া ইবনে মঈন, ইবনুল আরাবী, ইবনে হাযম এবং ইবনু তাইময়াহ প্রমুখ মনীষীগণ বলেন, ফযীলত কিংবা আহকাম কোন ব্যাপারেই যঈফ হাদীছ আমল যোগ্য নয়। (ফাওয়ায়েদুত্‌ তাহদীস পৃঃ ৯৫)

পরিশেষে , আল্লাহ আমাদের সকলকে যঈফ ও জাল হাদীছ চিনার ও তা থেকে সতর্ক থাকার সাথে সাথে কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক আমল করার তাওফীক দিন-আমীন!

বিষয়: বিবিধ

১২১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File