হাদীছ অস্বীকারকারীদের নিকট প্রশ্নঃ
লিখেছেন লিখেছেন কাজী আবু নাবিল ২৪ নভেম্বর, ২০১৪, ০৪:০৯:৩০ বিকাল
মুহাম্মাদ (সাঃ)এর শত্রুরা তাঁর সুন্নাহ বা হাদীছ মানে না; অথচ কুরআনের অর্থ করতে গিয়ে সুন্নী তথা হাদীছপন্থীদের বর্ণনা করা অর্থই (চুরি করে) গ্রহণ করে। কি দ্বিমুখী নীতি! وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّى يَطْهُرْنَ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ আয়াতের শাব্দিক অর্থের দিকে খেয়াল করুন: “এবং তারা আপনাকে ঋতুস্রাব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, আপনি বলে দিন, ওটা হচ্ছে খারাপ অবস্থা (বা ক্ষতিকর), অতএব ঋতু অবস্থায় নারীদেরকে থেকে সরে যাও। আর তাদের নিকটবর্তী হবে না যে পর্যন্ত তারা উত্তমরূপে পবিত্র না হয় যখন তারা পবিত্র হবে, তখন আল্লাহর নির্দেশ মতে তাদের নিকট গমণ করবে।” (সূরা বাকারাঃ ২২২)
এই আয়াতের বাহ্যিক অর্থে কিন্তু শুধু স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার কথাই বলা হয়নি। বরং সবধরণের বিরতকে বলা হয়েছে। তাই ব্যবহার হয়েছে, فَاعْتَزِلُوا এখানে اعتزال শব্দের অর্থ হচ্ছে সরে যাওয়া, ছেড়ে দেয়া, বিচ্ছিন্ন করা, পরিত্যাগ করা ইত্যাদি। এই সরে যাওয়াকে তাগিদ করার জন্যে তারপরে وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ হচ্ছে এমনভাবে দূরে থাকবে যে তাদের নিকটবর্তী হবে না। অতএব বুঝা যায় সহবাস তো নয়ই, তাদেরকে ধরা যাবে না, ছোঁয়া যাবে না এমনকি স্পর্শও করা যাবে না তাদের সাথে শোয়া যাবে না, পানাহার করা যাবে না, কথা বলা যাবে না। কারণ এগুলো করলে তাদেরকে اعتزال বা পরিত্যাগ করা হল না; বরং তাদের নিকটবর্তীই থাকা হল। এই জন্যে যখন এই আয়াত নাযিল হয়, তখন ইহূদীরা খুশী হয়েছিল। কারণ তাদের ধর্মেও একই নিয়ম ছিল। যেহেতু নিকটবর্তী হওয়া যাবে না এই জন্যে ইহূদীরা তাদের জন্যে আলাদাভাবে ঘর বানিয়ে, সেখানে তাদেরকে রাখত। ইসলাম ধর্ম মহানবী মুহাম্মাদ (সাঃ)এর ধর্ম বাড়াবাড়ি ও শিথীলতার মাঝামাঝি মধ্যপন্থার ধর্ম। (সূরা বাকারাঃ ১৪৩) তাই স্ত্রীদের সাথে ঋতু অবস্থায় সবকিছু করা যাবে শুধু যৌন সহবাস থেকে বিরত থাকতে হবে।
আনাস (রাঃ) বলেন, মদীনায় অবস্থিত ইহূদীদের নারীদের ঋতু হলে তারা তাদের সাথে বসে পানাহার করত না এবং সহবাসও করত না। সাহাবায়ে কেরাম যখন এ বিষয়ে নবী (সাঃ)কে প্রশ্ন করলেন যে আমরা কি করব? তখনই এই আয়াত নাযিল হয়। ইহূদীরা শুনে খুশি হয়ে গেল। যেহেতু এখানে তাদের নিয়মকেই বাহ্যিকভাবে উল্লেখ করা হল। আয়াত নাযিল হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেন, “তোমরা স্ত্রীদের সাথে সবধরণের কর্ম, উঠাবসা করতে থাক, শুধু যৌনাঙ্গে সহবাস থেকে বিরত থাকবে।” এখন বুঝা গেল ঋতু অবস্থায় তাদের থেকে বিরত থাকার অর্থ হচ্ছে শুধু সহবাস থেকে বিরত থাকা। আর এ কথা আল্লাহ পরক্ষো ওহী করে তাঁর রাসূল (সাঃ)কে জানিয়েছেন। (পরক্ষো ওহীর দলীলঃ সূরা শূরা: ৫১, আরো দলীল দেয়া হবে নোটে) তখন তিনিও তার সাহাবায়ে কেরামকে একথা জানালেন। তখন ইহূদরা বলল, এই লোকটি আমাদের কোন বিষয়ই ছাড়ে না, তার বিপরীত করবেই। একথা শুনে সাহাবীগণ বললেন, তাহলে আমরা স্ত্রীদের সাথে সহবাসও করি? (তাহলে তাদের বিরোধীতা পূর্ণ মাত্রায় হবে)তখন রাসূল (সাঃ)এর চেহারা মোবারকের রঙ পাল্টে গেল। অর্থাৎ তিনি রাগম্বিত হয়ে গেলেন। (হাদীছটি দেখুন, মুসনাদে আহমাদ, ৩/১৩২ মুসলিম হা/৩০২)
এখন এই হাদীছ অস্বীকারকারীদের কাছে প্রশ্ন, আয়াতের কোন্ শব্দ থেকে তারা শুধু সহবাস নিষেধ প্রমাণ করছে? আর বলতে চাচ্ছে যে সহবাস ব্যতীত অন্য সবকিছু করা যাবে। قُلْ هَاتُوا بُرْهَانَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ “তোমরা সত্যবাদি হলে দলীল পেশ কর।”(২:১১১)
বিষয়: বিবিধ
১১১৯ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন