সুফিবাদ
লিখেছেন লিখেছেন কাজী আবু নাবিল ২০ নভেম্বর, ২০১৪, ০৮:৩২:৫৭ সকাল
পারস্য তথা ইরানের লোকেরা এক সময় ইসলাম গ্রহণ করলেও এখানে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল শিয়া ও সুফি মতবাদ। ইরানের জনসংখ্যার প্রায় ৯০ ভাগ লোক শিয়া মতবাদ অনুসারী। যাকে আবার সংখ্যা গরিষ্ট সুন্নিরা প্রকৃত ইসলাম বলে স্বীকার করতে নারাজ। প্রকৃত ইসলামের সাথে চর্চিত হয়ে আসা স্থানীয় ধর্মীয় আচার-আচরণ ও বিশ্বাসের ধীরে ধীরে সমন্বয়ের ফলে এখানে সুফিবাদের প্রসার ঘটে। ইতিহাসবিদেরা আরো দাবি করেন ভারতবর্ষের সীমানা পেরিয়ে আফগানিস্তানের উপর দিয়ে পারস্যের সাথে দীর্ঘ দিনের যোগাযোগের ফলে ভারতীয় ধর্ম দর্শনের কিছুটা আঁচ চালান হয়ে ঢুকে যায় পারস্যের সুফিবাদে। সুফি দর্শন মতে সুফি ঈশ্বরের সাথে আধ্যাত্মিক সম্পর্ক তৈরী করে বিশেষ শক্তি প্রাপ্ত হন। তখন সুফির অন্তরে সার্বক্ষণিক শান্তি ও আনন্দ বিরাজ করে। এই দর্শন মূল ইসলামী বিশ্বাসের সাথে ঠিক খাপ খায় না বরং কিছুটা প্রচ্ছন্ন ছাপ দেখা যায় বুদ্ধের নির্বান তত্ত্বের সাথে। বুদ্ধ কঠোর ধ্যান সাধনার মাধ্যমে মনের চাঞ্চল্য দূর করে মনকে এমন এক স্তরে নিয়ে যাওয়া্র কথা বলেছেন যেখানে সুখে দুঃখে মন থাকে অবিচল। মনে প্রশান্তি বিরাজ করে সবসময়, ছিন্ন হয় দুঃখ কষ্টের বন্ধন। এই জন্যই পারস্যের সুফিবাদী ইসলাম আর অনান্য আরব দেশের ইসলামের সাথে দেখা যায় বিশাল ফাঁক। প্রকৃত ইসলামে আল্লাহ্ প্রভু, তিনিই মালিক, তিনিই পরিচালক তিনিই সব। মানুষ তাঁর গোলাম বা দাস বা সেবক। এখানে মানুষ শুধু বিনা প্রশ্নে আল্লাহ্র আদেশ নির্দেশ মানতে বাধ্য থাকবে। এখানে প্রেমের সম্পর্ক মূখ্য নয়। সম্পর্ক আদেশ পালনের, সম্পর্ক প্রভু ভৃত্যের। অপরদিকে সুফিবাদের দর্শন মতে নিরাকার স্রষ্টা বিরাজমান থাকেন তাঁর সকল সৃষ্টির মাঝেই। তাই আল্লাহ্র সাথে বান্দার সম্পর্ক কখনো প্রভু ভৃত্যের নয় বরং তা স্নেহ-মমতার, প্রেম- ভালোবাসার।
বিষয়: বিবিধ
১০৪৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন