সৌভাগ্যবান চার যুবক প্রয়োজন পূর্ণবাসন
লিখেছেন লিখেছেন শাহীন কবির ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৬:০১:১৬ সন্ধ্যা
সাপ্তাহিক ছুটির দিনের অপেক্ষায় অধির আগ্রহে থাকে কর্মজীবিরা। সে দিনটি তাদের কাছে অনেক প্রত্যাশিত। ছুটির দিনটিকে স্বার্থক করে উপভোগ করতে কম বেশী সবারই থাকে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক পরিকল্পনা। স্বেচ্ছায় নির্বাসিত এনিষ্ঠুর প্রবাসে যাদের প্যামিলি সাথে আছে তাঁদের কথা বাদ দিলে বাকিদের সাপ্তাহিক ছুটির দিনটা কাটে নিরামিশ ভাবে। কিছুটা আমিশ মিশ্রিত করার জন্যে চার বন্ধু রওয়ানা দিলাম বিশ্বমাবতার মহান শিক্ষক ও আদর্শ নেতা মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাললাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত তায়েফ শহরে। তায়েফ শহর মূলত পাহাড়ের উপরে। পাহাড়ের কোল ঘেসে তৈরী করা হয়েছে নান্দনিক প্রসস্থ রাস্তা। যা সকলের কাছে রিং রোড নামে পরিচিত। রিং রোডে প্রবেশের আগে রয়েছে একটা মসজিদ। সে মসজিদে সালাতুল জুমআ আদায় করার জন্যে আমরা গাড়ি হতে নামলাম। তখন সালাতুল জুমআর খোতবা চলছে। আমরা দু রকাআত সালাত আদায় করেই বসে পড়লাম। সালাতের খুতবা শুনলাম।খোৎবায় ইমাম সাহেব মুসলিম উম্মার বর্তমান সমস্যা ও তা হতে উত্তরণের চমৎকার আলোচনা রাখলেন। নামাজ শেষে আকাশ বাতাস মূখরিত করে ইমাম সাহেব মসজিদের মাইকে ঘোষনা করলেন এখনি চার যুবক ঈমানের ঘোষনা দিয়ে মুসলিম উম্মার অর্ন্তভূক্ত হবেন। ঘোষানার সাথে সাথে মসজিদের সমস্ত মুসল্লিরা আনন্দে উল্লোশিত হয়ে উঠলাম।
অতি আনন্দে সবাই মসজিদের ভেতর ডুকে পড়লাম। যাদের মোবাইলে ক্যামরা আছে তারা সবাই নওমুসলিমদের ছবি তুলতে লাগলাম। সব মুসল্লিরা আল্লাহু আকবার ঘোষনার পাশাপাশি উচ্চস্বরে শাহাদাতের ঘোষনা দিতে থাকলাম। যাঁরা কালেমা শাহাদতের ঘোষনা দিয়ে মাসুম হিসাবে মুসলিম উম্মার সদস্য হলেন তাদের ইতিপূর্বের পরিচয় ছিলো তারা নেপালী বৌদ্ধ।সম্ভাবত নেপালের ভিবিন্ন জায়গার অধিবাসী হওয়ায় ইমাম সাহেব তাঁদের সবার নাম রাখলেন আবদুর রহমান। তাঁরা সবাই ছিলেন বিশ-বাইশ বছরের যুবক। ঈমানের ঘোষনার পর পরই উপস্থিত মুসল্লিগন তাঁদের নবাগত মুসলিম ভাইকে বুকে জড়িয়ে মহব্বতের আলিঙ্গন করলেন। এদৃশ্য আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিলো আমাদের অতি সম্মানের পাত্র, বাংলাদেশের কুটি কুটি মানুষে হৃদয়ের স্পন্দন, স্মরণকালের শ্রেষ্ঠ মোফাসিসরে কুরআন, ইসলামের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, গোটা মুসলিম উম্মার গৌরবের ধন, বাংলার মুসলমানদের অহংকার আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেবের কথা। যিনি তাঁর সুন্দর ও সাবলিল তাফসিরের মাধ্যমে শতাধিক অমুসলিমকে ইসলামের ছায়ার তলে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। লাখো লাখো পথভোলা মানুষকে দিয়েছেন পথের সন্দান। মনে হলো আমার ছোট বেলার একটি করুন স্মৃতি। সম্ভাবত ৮ম কিংবা ৯বম শ্রেণীতে পড়ছিলাম। আমাদের অঞ্চলের এক হিন্দু একজন আলেমের বন্ধুত্বের সুবাধে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেন। ইসলাম গ্রহণের কারণে তিনি তাঁর আপনজন হতে বিতাড়িত হন। বঞ্চিত হন সব রকমের সুযোগ-সুবিধা হতেও। তাঁর সাথে করা হয় সব ধরণের অমানবিক আচরণ। ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে সম্পদ হতে বঞ্চিত করে বাড়ি হতে বের করে দেয়া হয়। উপায়ান্তর না দেখে ইমাম সাহেব নওমুসলিমকে কিছু অর্থ দিয়ে চল্লিশ দিনের জন্যে তাবলিগে পাঠিয়ে দেন। তাবলীগ হতে ফিরে এসে শতকুটি মুসলিম উম্মার নতুন সদস্য জীবিকা নির্বাহের জন্যে ভিক্ষার ঝুলি কাঁদে নিয়ে নিজ ভাইদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে আর বলছে- আমি একজন নওমুসলমান। আমার কোন রোজকার নেই। আমি বড় অসহায়। আমাকে কিছু ভিক্ষা দিন।গোটা মুসলিম জাতির জন্যে এদৃশ্য যতটা ব্যধনার তার চেয়ে বড় লজ্জার। সে জন্যে গোটা মুসলিম উম্মাকে লক্ষ্য রাখতে হবে যখন কোন ব্যক্তি মুসলিম উম্মার নতুন সদস্য হিসাবে অংশগ্রহণ করবেন তখন তাঁর যাথাযত পূনর্বাসনের ব্যবস্থায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১২৭৫ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নওমুসলিম দের অধিকার আমাদের সহায়তা পাওয়া।
মন্তব্য করতে লগইন করুন