অপেক্ষার অবসান

লিখেছেন লিখেছেন শাহীন কবির ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৫:০৪:৩৩ সকাল

আমার মন বলছে তুমি আসবে। আমি তোমার অপেক্ষায় আছি যুগের পর যুগ।তুমি আসলেই আমার প্রত্যাশা পূর্ণ হবে। এটাই আমার মনের বুঝ। তোমাকে সাজাবো বলে কতো দিন বয়ে গেলো তার কোন হিসাব আমার জানা নেই।তোমাকে নিয়েই আমার সব ভাবনা। কিসের বিনিময়ে তুমি আসবে। কোন সময়ে তুমি আসবে। সকালে না বিকালে। রাতে না সন্ধ্যায়। কি পোষাক পরে তুমি আসবে। কিসের উপর চড়ে আসবে তুমি। কেমন করে বরণ করলে তুমি খুশি হবে। হাজারো ভাবনা আমাকে ঘিরে আছে সারাটা সময় ধরে। তোমার অপেক্ষার প্রহর গুনতে দেখেছি লাঠিতে ভর দিয়ে সত্তর বছরের থুরথুরে বুড়ো দাদীমাকে। সে ভাবছে তুমি আসলেই তার মনের দঃখ জলে ভেসে যাবে। তোমার অপেক্ষায় নদীর ঘাটে বসে থাকতে দেখেছি হাঠ্ঠিসার আশিউর্ধ দাদা ভাইকে। তার মনের কথা তোমাকে বলার পর মরেও যে প্রশান্তি পাবে। বাসুন্তি শাড়ি পরে তোমার অপেক্ষায় থাকতে দেখেছি নব বৈশাখের শুভ লগ্নে ষোড়ষি তরুনিকে। কোটি তরুনকে দেখেছি তোমকে পাবার জন্যে সর্বস্য উৎসর্গ করার শপথ নিতে।তোমার অপেক্ষায় আমার মা, খালা আর চাচি, মামিদের কতো দিন যে জায়নামাজে অতিবাহিত হলো তার হিসাব কষার সাধ্য কারো নেই। তোমার আগমনের জন্যে প্রার্থনা হয়েছে মসজিদে, মন্দিরে, গির্জায়, প্রেগোডায় আরো কতো জায়গায়। মোদ্দা কথা হলো তোমার আগমনের অপেক্ষায় ছিলো জাতি ধর্ম, বর্ণ গোত্রবেধে সাত কোটি মানুষ। অবশেষে তোমার আগমনের সুবাতাস বৈতে শুরু করলো। আকাশে বাতাসে মূখরিত হয়ে বেজে উঠলো তোমার আগমনি গান।অবোধ শিশুদের কোলাহলে আন্দোলিত হলো সকলের প্রাণ।কিন্তু তোমাকে আসতে দিতে চাইলো না সামরিক জান্তা। প্রবল বাধা হয়ে দাঁড়ালো তোমার তারা। গ্রেনেড, বোমা, বোমারুবিমান, গুলি, পিস্তল আরো কতো আধুনিক অস্ত্রনিয়ে দাঁড়ালো তোমার গতিরোধ করে। অসহায়ের মতো তাকিয়ে থামলাম তোমার দিকে। ভাবতে লাগলাম হয়ত তোমাকে আর কখনো পাবো না।কিন্তু তোমাকে যে আমাদের খুব প্রয়োজন। তুমি না আসলে আমরা বসন্তের সৌরভ হতে হই বঞ্চিত। তুমি না আসলে আমাদের নব প্রজন্ম হারাবে ভাষা। ভেঙ্গে যাবে সব আশা। বুঝলাম তোমাকে আনার জন্যে অনেক মূল্য দিতে হবে। কি মূল্য দিতে হবে তা তো আমাদের জানা নেই। তাই তো মূল্য দেয়া শুরু হলো। তোমাকে পাওয়ার জন্যে অসংখ্য মা হারালো তাদের বুকের মানিক। অগণিত মানুষ হলো পঙ্গু। লাখো মা বোন হলো বিধবা। ইজ্জত হারালো অসংখ্য রমণী। শহীদ হলো লাখো লাখো দামাল সন্তান। কোটি পুরুষ, নারী, শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা হলো শরণার্থী। প্রতিশোধের আগুনে জালিয়ে দেয়া হলো গ্রামের পর গ্রাম। উপড়ে পেলা হলো রাস্তা-ঘাট, পোল-কালভার্ড। ভেঙ্গে চুরে তচনচ করে দেয়া হলো শহর-বন্দর, কল-কারখানা, বিমানবন্দর এমনকি হাসপাতালও।কিন্তু তাতে থেমে থাকেনি তোমাকে বরণ করার আয়োজকরা।তারা সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলল। অত্যাধুনিক সামরিক বাহিনিকে খতম করতে কুণ্ঠিত হয়নি তারা। তোমার আগমনের বাধা অপসারণে সব রকমের মূল্য পরিশোধ করেই তারা তোমাকে আলিঙ্গন করলো।আলিঙ্গন করলো তোমাকে ঢাকার রের্সকোর্স ময়দানে। উল্লোষিত হয়ে উঠলো সবাই। বিশ্বের মানচিত্রে তুমি এলে নতুন নামে। অনেক মূল্য দিয়ে কিনে তোমার নাম রাখলাম বাংলাদেশ।তুমি আমাদের অনেক স্বপনের, আশার, অনেক প্রত্যাশার দেশ। বাংলাদেশ।

বিষয়: বিবিধ

১৫৯০ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

295085
১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ০৬:৪৭
আঃ হাকিম চাকলাদার লিখেছেন : ভালো লাগল।
১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৩১
238808
শাহীন কবির লিখেছেন : আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ
295151
১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:২৪
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : তোমাকে ঠিকই পেয়েছি।
কিন্তু তোমার যৌবনের স্বাদ নেয়ার আগেই তুমি ধর্ষিতা হলে। তোমার নিষ্পাপ চরিত্রে কলঙ্ক মেখে দেয়া হলো। তোমাকে বিচ্ছিন্ করে দেয়া হলো ত্যাগীদের থেকে। স্বার্থপর, বিকাশের আগেই রাষ্ট্রদ্রোহী অযোগ্য লোকগুলোর হাতে তুমি বন্দী হয়ে গেলে। হাজারো ধুম্রজালে বন্দী তোমাকে নিয়ে তাই আজ পুরো জাতির প্রশ্ন

ত্রিশ বছর পর্ওে আমি স্বাধীনতাটাকে খুজছি।

ধন্যববাদ শাহীন ভাই। দারুণ অনুভূতির সাথে আম্ওি নিজের কিছুটা জমা বেদনা উগলে দিয়ে গেলাম।
১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৩৫
238809
শাহীন কবির লিখেছেন : আপনাম সুন্দর মন্তব্য ও চমৎকার অনুভূতি প্রকাশের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার সাথী হতে পেরে খুব উৎসাহ অনুভব করছি।
295216
১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:২০
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : প্রবাসী মজুমদারের মত বড় মাপের ব্লগার শাহীন ভাইর তুমিতে আটকে গেছেন।
আমরাও আটকে গেছি অনেক আগেই।
আমার মনে হয় - এই তুমিকে জিজ্ঞেস করার সময় এসেছে - তুমি এখন কার?
ধন্যবাদ - আরো চাই।
১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৩৬
238811
শাহীন কবির লিখেছেন : আবারো দেখা হবে। দোয়া করবেন।
295218
১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:২২
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৩৭
238813
শাহীন কবির লিখেছেন : ভালো লাগার জন্যে মোবারকবাদ।
319160
১০ মে ২০১৫ সকাল ০৭:৩০
শেখের পোলা লিখেছেন : অবশেষে তিনি এলেন, তবে সমস্ত শরীরে নখের আঁচড়, আলুথালু চেহারা,সুন্দর মায়াময়ী শরীর খানা বিদ্ধস্থ, যেন কতদিনের অনাহার ক্লীষ্ট৷ এই মাত্র বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার দিয়ে বেরিয়ে এলে৷ কিন্তু তুমি আজও সে পৈশাচিক ধর্ষণ দৃশ্য ভুলতে পারনি,আজও যেন তুমি তাদের রক্ষীতা হয়েই রয়ে গেছ৷
319271
১০ মে ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:১৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : নিস্তব্ধতা হিরন্ময়!!!
319395
১১ মে ২০১৫ দুপুর ০৩:০৪
আফরা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।
320341
১৬ মে ২০১৫ দুপুর ০১:৫২
হতভাগা লিখেছেন :
২৩ জুলাই ২০১৫ রাত ০৪:৪৩
273446
শাহীন কবির লিখেছেন : আসলে কি তাই?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File