চিঠি রেখে গেলাম,পড়ে নিয়
লিখেছেন লিখেছেন নারী ১৫ এপ্রিল, ২০১৫, ০১:৪১:৫৫ দুপুর
কবরের সামনে দাড়ানো একটি কিশরী।দূর থেকে অনেকক্ষন ধরে লক্ষ্য করছে একটি লোক।কবরস্থানের প্রথম দিকের কবরগুলোর মধ্যেই একটি কবর।কবরের পাশে একটা কাগজ রেখে দ্রুত চলে গেল।লোকটি মেয়েটিকে ডাক দিতে নিয়েও ডাক দেয়নি।আগ্রহ নিয়ে কবরটির সামনে গেল।সাহিদা আক্তার নামের কবরের পাশে একটি চিঠি।লোকটি চিঠিটা হাতে নিল।উপরে লিখা ‘চিঠি রেখে গেলাম পড়ে নিয়’
আম্মু,
তোমাকে কখনও সালাম করেছি কিনা জানিনা।তবুও সালাম নিয়।কেমন আছো তা আর জিজ্ঞেস করলাম না।মাটির নিচে চাপা পড়ে আর কেমনই থাকবে?রুহটা ভালো আছে আমি ভাবি।আমি কেমন আছি তা কি দেখতে পাও?হয়ত পাও না।তোমাকে অনেক কথা বলব।তাই চিঠিটা লিখলাম।আল্লার ফোন নাম্বার তো কেউ জানেনা।জানলে ফোন দিয়ে বলতাম আমি আম্মুর সাথে কথা বলব।আম্মুকে দেওয়া যাবে?......আচ্ছা তোমার ওখানে একা একা থাকতে ভালো লাগে?আমার না এখানে থাকতে একদমই ভালো লাগেনা।সবাই জানি কেমন করে আমার সাথে,কেমন জানি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি।নতুন আমাকে সারাদিন খারাপ কথা বলে।আমাকে মারেও।মারার পর একবার কাছে ডাকেনা।সরি বলেনা।তুমিও তো আমাকে মারতে।তোমার মারা আর উনার মারার কারন মিলেনা।তুমি তো আমাকে পরে সরি বলতে।তুমি আমাকে চুল বাধা শিখাওনি কেন?নতুন আম্মু আমাকে চুল বেধে দেয়না।এখন আমি নিজে নিজে চুল বাধি।তুমি আমাকে নিজ হাতে খাওয়া শিখাওনি কেন?তিন ঘন্টা ধরেও আমি খেতে পারিনা।তুমি জানো আমি নানুর বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম।ওখানেও সবাই কেমন জানি করে।আচ্ছা আমি ভাত চাইলে মামি এত বকে কেন?আগে তো মামি নিজেই ভাত এনে খাইয়ে দিত।আমি আবারও বাসায় চলে এসেছিলাম।যেখানে যাই সবাই কেন চলে যেতে বলে?আমার তো কোনো বাসা নেই।আমি থাকব কই?আমার কোথাও থাকতে ভালো লাগেনা।ওরা তো এমন ছিল না।ওরা আমাকে এত ঘৃণা করে কেন?আমি কি ওদের কোনো ক্ষতি করেছি?জানো আব্বু আম্মু আমাকে কোথাও ঘুরতে নেয়না।তালা দিয়ে চলে যায়।আচ্ছা তুমি কেন চলে গেলে?যাওয়ার আগে একবারও আমার কথা মনে পরেনি?একাই বা কেন গেলে?আমাকেও নিয়ে যেতে?তুমি তো আমাকে কখনও একা রেখে কথাও যেতে না?এখন কেন গেলে?তুমি কি আবার ফিরে আসতে পারবে না?ওরা আমাকে এত কিছু করল তুমি ওদের কিছু বলবেনা?হয় ফিরে আশো নাহয় আমায় নিয়ে যাও।আমিও চলে যাব।
তোমাকে কেউ যদি চিঠিটা পৌছে দিতে পারত।অনেক খুশি হতাম।
ইতি,
তোমার কন্যা
এক ফোটা পানি তো চিঠিতে পড়ল।লোকটি পরিচয় জানার জন্য কবরের সিরিয়াল ন্বামার আর নাম রেকর্ড খাতায় দেখতে গেল।ঐ একটা কবরে সাহিদা আক্তার নামে অনেক জনকেই দাফন করা হয়েছে।বের করতে পারল না।
কে এই চিঠিটার প্রাপক?লোকটির ইচ্ছে করছে এখনই যদি মেয়েটার চিঠিটা তাকে দিয়ে আসতে পারতাম......
বিষয়: বিবিধ
১৬৭৯ বার পঠিত, ২৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মা মরলে আপন বাপ তখন সৎ বাপ হয়ে যায়।
ভাল থাকবেন।
নিজে যন্ত্রণা পেলেই বুঝে যন্ত্রণা কি
মা হারালেই বুঝে মা কি জিনিস।
আমরা মানুষ আমরা সবাই সুখী হতে চাই। বিশ্বাস করি, এই জীবনটা আমার আমি যেভাবে চাই সেভাবেই আমি আমার জীবন সাজাব, সেভাবেই চলব। আমরা ভেবে বসি আমি নিজেই নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রক। কিন্তু আমরা যেভাবে সব কিছু পেতে চাই, যেভাবে চিন্তা করি সেভাবে সবকিছু হয়না। হটাৎ করে কোন দুর্ঘটনা ঘটে যায়, খুব কাছের কাউকে হারিয়ে ফেলি যাকে হারানোর কথা ছিলনা_ আমরা বুঝতে পারিনা, খুঁজে বের করতে পারিনা এই দূর্ঘটনা আর এই হারানোর কারণ কি? কেন এমন হয়ে গেল? এমন তো হবার কথা মোটেও ছিলনা!!! আমরা হতাশ হই।
আসল কারণ হল, আমরা ভুলে যাই আমরা মানুষ। আজ আমি দুনিয়ার মাটিতে দাড়িয়ে অথচ একটা সময় আমি কিছুই ছিলাম না, আবার একটা সময় থাকবোওনা। আমরা ভুলে যাই আল্লাহ বলে একজনের অস্তিত্ব আছে, তিনি সবসময় বিরাজমান। ভুলে যাই তিনিই আমাদের স্রষ্টা, তিনিই আমাদের দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন এবং তিনিই লিখে রেখেছেন. "আমাদের জীবনে কি কি ঘটবে??" আমরা এটাকে কখনো মেনে নিতে পারিনা যে, " আমাদের ভাগ্য অন্য কেউ লিখে রেখেছে, ভাল-মন্দ সব কিছুই যা হচ্ছে প্রত্যেকটি আল্লাহ ঘটাচ্ছেন, আল্লাহর পক্ষ থেকেই সব কিছু হচ্ছে।" কিন্তু তিনিই সবকিছুর নিয়ন্ত্রক আর এটিই সত্যি।
তাই আপনি যখন নিজেই নিজের নিয়ন্ত্রক ভেবে বসেন তখনই আল্লাহ পরিস্হিতিটা দুর্ঘটনায় পরিণত করেন যেন মানুষ বুঝতে পারে," সে মানুষ, ভাগ্য নিয়ন্ত্রক না।" কারণ আল্লাহ চান তার দিকে মানুষ ফীরে যাক। অথচ ঠিক এই মুহূ্র্তটাতে এসে দাড়াতেই অধিকাংশ মানুষ সবসময়ই ভাগ্যের দোষ দেয়, আল্লাহকে দোষারোপ করে থাকে অথচ আপনি সবসময়ই দেখবেন আপনার চাইতে কেউ না কেউ অনেক বেশি পরিমাণে বিপদগ্রস্হ। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তার জায়গায় আপনাকেও রাখতে পারতেন। কিন্তু আপনি তার থেকে কম বিপদগ্রস্হ। এটাই সত্য। দুনিয়াটা পরীক্ষার জায়গা চিরস্হায়ী জায়গা না। অনেক কথা বলে ফেললাম। একদম মন খারাপ করবেননা। https://www.youtube.com/watch?feature=player_detailpage&v=5pyZkY93B2A
https://www.youtube.com/watch?feature=player_detailpage&v=Pcl-pHePCTQ
এই ২টি ভিডিও আপনার জন্য। দেখবেন আশা করি মন হালকা হয়ে যাবে। আপনার মত আমারও এমন কিছু পারিবারিক সমস্যা আছে যার জন্য আমারও অনেক চোখের পানি পরেছে। ভাল থাকবেন।
আমি কখনই কষ্টে তাকে ভুলিনা।আর ভাবিও না যে আমি নিজের ভাগ্য নিয়ন্ত্রক।কেউ নিজেকে দুখি বললে আমি তাকে তার চেয়েও খারাপ আছে যারা তার উদাহারন দেই।আর সব সময় একটি আয়াত মনে করি। সবার আগে এই আয়াতটাই আমি তাদের দেই।আমার সবচেয়ে প্রিয় একটি আয়াত-
"নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অনেকের ভয়,ক্ষুদা,জানমাল ও শ্রমের ফল বিনষ্ট করে অর্থাৎ বিপদ-আপদ দিয়ে পরীক্ষা করব।তবে এ বিপদের মধ্যে যারা ধৈর্য্যধারণ করে তাদের সুসংবাদ দাও।"(সূরা বাকারা:১৫৫)
তাছাড়া অতিত কেউ ভুলে থাকতে পারেনা।এগুলুর মধ্যেই সুখে বেঁচে থাকতে হয়।
কাহিনিটা কাল্পনিক এবং তখনকার অনুভুতি মাত্র।
কষ্ট দেওয়ার জন্য দুঃখিত
আলহামদুল্লিলাহ। ভাল লাগলো।
ভালো থাকবেন ধন্যবাদ।
কি শুধু আপনার "নারী" নামই ইউস করবো
ভাই শুধু নারী লিখলে কেউ বুঝবে না।নারীর ব্লগ থেকে নিয়েছেন সেটাই বলছি।
চলবে না আপু
তারপর আমার নানী বেচে আছে তো
মন্তব্য করতে লগইন করুন