শুধু কি আলবানী রহিমাহুল্লার হাদিস তাহকিকে ভুল হত এবং তিনি মত পরিবর্তন করতেন?
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাক ১২ নভেম্বর, ২০১৪, ০৯:১৬:৩৪ সকাল
একদল মানুষ আলবানি রহঃ এর বিরোধিতায় নিজের বিবেক বুদ্ধি সব হারিয়ে ফেলেছে। তাদের দাবী ফকিহ গণ ভুলের কারণে হোক বা অন্য কারণে হোক নিজের ফতোয়া চেঞ্জ করতেন। কিন্তু আলবানী রহঃ ব্যাতীত অন্য মুহাদ্দিসগণ হাদিস সহিহ জঈফের ক্ষেত্রে নিজের মত পরিবর্তন করতেন না। এর মাধ্যমেই তারা প্রমাণ করতে চায় যে, আলবানী রহঃ মুহাদ্দিস ছিলেন না, তার হাদিস তাহকিক করা উচিৎ হয়নি তিনি সকালে এক কথা বলেণ সন্ধ্যাতে এক কথা বলেন।
আমরা তাদেরকে বলতে চাই নিচের দলীল গুলো মনযোগ দিয়ে পড়ুন এবং দেখুন শুধু কি আলবানী রহঃ এই দোষে অভিযুক্ত ? যদি প্রমাণ হয়ে যায় যে, সব মুহাদ্দিস এই দোষে অভিযুক্ত তাহলে কি আপনি বলবেন যে, তারাও মুহাদ্দিস ছিলেন না। নাউযুবিল্লাহ। আল্লাহকে ভয় করুন!!! আল্লাহকে ভয় করুন!!!
১-ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল রহঃ থেকে ইমাম তিরমিজি সানাদ সহ বর্ণনা করেছেন যে, আব্দুল্লাহ বিন উকাইম বর্ণিত রাসুল ছাঃ এর হাদিস তোমরা মরা পশুর চামড়া ও স্নায়ু থেকে উপকার হাসিল করনা। এই হাদিসকে আগে ইমাম আহমাদ সহিহ মনে করতেন কিন্তু তার মৃত্যুর দুই মাস আগে তার নিকট এই হাদিসের অন্য সানাদ পৌঁছে, যাতে এই হাদিসের ইজতিরাব বা বিশৃঙ্খলা প্রমাণিত হয় এবং তিনি এই হাদিসকে ছেড়ে দেন। দেখুন!!!! সুনানে তিরমিজি হা/১৭২৯।
২-আবু হাতেম রহঃ বলেন আমি ছাগল জান্নাতের চতুষ্পদ জন্তু এই হাদিসকে আগে হাসান মনে করতাম কিন্তু পরবর্তীতে এই হাদিসের ত্রুটি আমার নিকট স্পষ্ট হয়ে যায়। দেখুন ইলালে ইবনে আবি হাতিম, হা/ ৩৮০।
অনুরূপ আরেকটি হাদিসের ক্ষেত্রেও তিনি মত চেঞ্জ করেছেন। দেখুন !! ইলালু ইবনে আবি হাতিম, হা/ ১২২৫।
৩- হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ
১- রাসুল ছাঃ বলেন মসজিদে হাদ্দ জারী করা হবেনা। আসকালানী রহঃ এই হাদিসকে বুলুগুল মারামে(হা/২৫৮) জঈফ বলেছেন এবং তালখিসুল হাবিরে(হা/১৮০০) বলেছেন এই সনদে কোনও সমস্যা নাই।
২- আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন কুরআনের একটি আয়াত তথা তাদের মধ্যে একদল লোক আছে যারা পবিত্র থাকতে পছন্দ করে, এই আয়াতটি আহলে কুবাদের লক্ষ্য করে নাজিল হয়েছে কেননা তারা ইস্তিঞ্জা করে পানি ব্যবহার করত। আসকালানি রহঃ এই হাদিসকে তালখিসুল হাবিরে(হা/১৫১) বলেছেন জঈফ এবং ফাতহুল বারীতে বলেছেন সহিহ।(৭/২৪৫)
এগুলো শুধু হালকা উদাহরণ পেশ করলাম। আলবানী রহঃ বই নিয়ে যেভাবে গবেষণা করা হয়েছে তাদেরও লিখিত বই নিয়ে যদি এই ভাবে গবেষণা করা যায় তাহলে আল্লাহ ভাল জানে তাদের এই রকম মতপরিবর্তনের সংখ্যা কত হতে পারে। আর মুহাদ্দিস গণ যে, মত পরিবর্তন করতেন এই বিষয়ে ইমাম জাহাবীর একটি কথাই মিথ্যুক দাবীদারদের মুখে কালিমা লেপনের জন্য যথেষ্ট তিনি তার আল মুকিযা কিতাবে দ্বিধা হীণ চিত্তে ঘোষণা করেছেন
فكم من حديث تردد فيه الحفاظ هل هو حسن أو ضعيف أو صحيح بل الحافظ الواحد يتغير اجتهاده في الحديث الواحد فيوماً يصفه بالصحة ويوماً يصفه بالحسن ولربما استضعفه
আর কত হাদিস আছে যেগুলোর তাহকিকে হাফেজে হাদিসগণ দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভুগেছেন যে, এই হাদিসটি সহিহ না হাসান না জঈফ? এমনকি একজন হাফেজই একটি হাদিসের তাহকিকে তার ইজতিহাদে পরিবর্তন ঘটায় । ফলত আজকে বলে এই হাদিস সহিহ আবার কালকে বলে হাসান আবার কখনো বলে জঈফ।
দেখুন!!! আল মুকিজা, ইমাম জাহাবী, পৃষ্ঠাঃ ২৮।
সত্য সমাগত আর মিথ্যা বিতাড়িত আর মিথ্যা তো বিতাড়িত হওয়ার জন্যই এসেছে।
বিষয়: বিবিধ
১২৭৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আসলেই তাই
মন্তব্য করতে লগইন করুন