!!বন্দুক যুদ্ধে বেচে যাওয়া কাতেবুর!!
লিখেছেন লিখেছেন একটি সকাল ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৯:৩৬:৩৯ সকাল
মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্ম গ্রহন করা সহজ সরল নিষ্পাপ ছেলে কাতেবুর, সারা পাড়া মাতিয়ে রাখতো, মহল্লার প্রতিটি মা চাইত তার ছেলে যেন কাতেবুরের মতো হয়। আজানের ধ্বনি শুনলেই মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে। মাঝে মধ্যে ইমাম না থাকলে মুরব্বিদের অনুরোধে সে নিজেই নামাজ পড়ায়। প্রতিদিন মাগরিবের নামাজ শেষে পাড়ায় কোন না কোন ছেলের বাসায় গিয়ে পড়া লেখার খোজ খবর নেয়। এমন কি ঐ বাসাতে নাস্তা সেরে বাসায় এসে পড়তে বসে, খুব কম শুক্রবার ছিল যে, পাড়ার কোন না কোন বাসায় তার দাওয়াত থাকতো না। ছোট বড় সকলে তাকে সমাদর করত। এক কথায় পুরা গ্রাম মাতিয়ে রাখতো।
কাজ শেষে যখন তার পিতা দোকানে মাঝে মধ্যে বসতো তখন সকলের প্রশংসা তার পিতা অবচেতন মনে চোখ ভিজিয়ে ফেলতো, লুঙ্গি দিয়ে গোপনে চোখ মুছে বাড়ি চলে আসতো আর দোয়া করতো হে আল্লাহ আমার কাতেবুর কে তুমি কবুল করো।
শিক্ষক, গুরুজনের স্মমান দেখাতে তার জুড়ি নেই, কোখন মিথ্যা বলেছে, ফাকি দিয়েছে কারো গাছে আম পেড়েছে এমন রেকর্ড কোথাও নাই, নেই স্কুলে কিম্বা স্থানীয় বাজারে। সকলে এক ডাকে কাতেবুর নামে চেনে, একটি গোলাপ যেন সারা পাড়ায় সোরভ ছড়ায়।
কাতেবুর সবে মাত্র একাদশ শ্রেনীর ছাত্র, বয়স মাত্র ১৭, একে একে অনেক গুলো ভাই বোন কাতেবুর সবার ছোট।
সে দিন কাতেবুরের বাসার পাশদিয়ে যাচ্ছি, হটাৎ চোখে পড়লো সারা পাড়ার শিশু, কিশোর আবাল বৃদ্ধ সকলে কাতেবুরের বাসায় ভিড় করেছে, উচ্চ শব্দে কান্না কাটির শব্দ কানে ভেসে এলো, ছোট্ট একটা শিশু এসে কাদতে কাদতে বলল “কাতেবুর ভাইয়া নাকি বন্দুক যুদ্ধে মারা গেছে, আপনি বলেন কাতেবুর ভাইয়া বন্দুক কি চিনে”??? আমি স্তব্ধ, নির্বাগ, শরিলের সমস্ত রক্ত যেন মুখে এসে ফেটে পড়তে চাইলো, কাউকে কিছু বলতে পারলাম না “এমন রাজনীতি কেন আসে যে বন্দুক যুদ্ধে কাতেবুর মারা যায়” এর পর আমি আর বলতে পারব না.................।
শুধু মনে হল “হে জমিন কাতেবুরের প্রতিটি রক্তকনিকার জবাব তমাকে দিতে হবে”।
হে আল্লাহ তোমার কি কাতেবুর কেই পছন্দ হল?? তা হবে না কেন?? তোমার ফুলদানি তো তাজা গোলাপ দিয়ে –ই সাজাতে চাও ।
তুমি যদি কাতেবুর কে পাপী মিথ্যাবাদি অত্যাচারী মনে কর তাহলে তার চেয়ে অধিক পাপী মিথ্যাবাদি আর অত্যাচারী এ সমাজে রয়েছে তুমি তাদের কে কেন বাচিয়ে রেখেছো।???????
যুদ্ধ শেষ হল শান্তি এলো , ঘরে ঘরে আলো জ্বলল কিন্তু কাতেবুরের ঘর অন্ধকারী রইল। কাতেবুর বেচে রইল প্রতিটি ঘরের পড়ার টেবিলে টেবিলে।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খুনিদের এখন দিন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন