জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের আগস্ট মাসে প্রকাশিত 'মাসিক আত-তাহরীক' এর সেই ঐতিহাসিক ফৎওয়া

লিখেছেন লিখেছেন বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ ১২ নভেম্বর, ২০১৪, ০১:৫৩:০০ দুপুর

মাসিক ‘আত-তাহরীক’-এর ফৎওয়াঃ

‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ –এর মুখপাত্র মাসিক ‘আত তাহরীক’ আগস্ট’২০০০ সংখ্যায় নিয়মিত বিভাগ ‘প্রশ্নোত্তরে’ পরিষ্কার জবাব প্রদান করা হয়েছে জঙ্গিবাদ তথা স্বঘোষিত কথিত জিহাদীদের বিরুদ্ধে । যা বাংলাদেশে জঙ্গীবাদদের বিরুদ্ধে প্রথম কোন ইসলামিক দাওয়াতি সংগঠনের ফৎওয়া যা নিম্নরূপঃ

প্রশ্নঃ বর্তমানে বাংলাদেশে একটি দলের নাম শুনা যাচ্ছে, যাদের দাবী সশস্ত্র যুদ্ধ ছাড়া ইসলাম ক্বায়েম হবে না এবং এজন্য তারা গোপণে বিভিন্ন স্থানে ট্রেনিং দিচ্ছে বলে শুনা যাচ্ছে । আমরা আহলেহাদীছ আন্দোলন করি । আমরা কি ঐ দলে যোগ দিতে পারি ?

উত্তরঃ সশস্ত্র যুদ্ধ ছাড়া ইসলাম ক্বায়েম হবে না কথাটি ঠিক নয় । কারণ ইসলাম ক্বায়েমের মূল মাধ্যম হচ্ছে ‘দাওয়াত’ । যার দায়িত্ব সকল নবী পালন করেছেন এবং আমাদের নবী (ছাঃ) তাঁর জীবনের প্রথম ১৩ বছর তাই করেছেন । পরবর্তী মাদানী জীবনে তিনি সশস্ত্র যুদ্ধ করেন । যা একমাত্র অমুসলিমদের বিরুদ্ধে ছিল । তবুও তা ছিল প্রতিরক্ষামূলক কিংবা শান্তিচুক্তি ভঙ্গ অথবা ইসলামী দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করার কারণে । কোন পাপী মুসলমান বা জাহান্নামী ঘোষিত মুনাফিকের বিরুদ্ধে তাঁর কোন যুদ্ধ ছিল না । বরং মৌখিক কালেমার দারবীদারকে তিনি মুসলিম বলেই গণ্য করেন ।

(১)তিনি বলেন, ‘আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি যে পর্যন্ত না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল এবং ছালাত কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে । যখন এইরূপ করবে, আমার পক্ষ হতে তাদের জান-মাল নিরাপদ থাকবে । কিন্তু ইসলামের বিধান অনুযায়ী যদি কেহ দন্ড পাওয়ার উপযোগী কোন অপরাধ করে, (তবে জান ও মালের দন্ড হবে) । দুনিয়াতে তাদের মুখের ঘোষণা ও বাহ্যিক কার্যকালাপই গৃহিত হবে এবং তাদের (অন্তর সম্পর্কে) বিচারের ভার (আখেরাতে) আল্লাহর উপরই ন্যস্ত রইল’ (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/১২, ‘ঈমান’ অধ্যায়)

(২) ফাসেক্ব নেতাদের সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের উপর অনেক শাসক হবে, যাদের কোন কোন কাজ তোমরা ভাল মনে করবে, আর কোন কোন কাজ অন্যায় মনে করবে । যে ব্যক্তি সেই অন্যায় কাজকে অস্বীকার করবে (অর্থাৎ অন্যায় বলে ঘোষণা দিবে ও প্রতিবাদ করবে), সে দায়িত্ব মুক্ত হবে । যে ব্যক্তি তা অপছন্দ করবে(কিন্তু মুখে প্রতিবাদ করবে না), সে ব্যক্তি (মুনাফেকী থেকে) নিরাপত্তা লাভ করবে । কিন্তু যে ব্যক্তি শাসকের অন্যায় কাজে সন্তুষ্ট থাকবে ও তার অনুসরণ করবে । এ সময় ছাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা কি ঐসকল নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না? রাসূল (ছাঃ) বললেন, না । যতক্ষণ তারা ছালাত আদায় করে । না, যতক্ষণ তারা ছালাত আদায় করে’ ।(মুসলিম, মিশকাত হা/৩৬৭১, ‘ইমারত ও বিচার’ অধ্যায়)

উল্লেখিত সংক্ষিপ্ত বিবরণ দ্বারা স্পষ্টরূপে প্রমাণিত হয় যে, বাংলাদেশে মৌখিক ও আন্তরিক কালেমা পাঠকারী জনগণ ও নেতাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করা ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ হবে না । যদি কখনো দেশ কাফের রাস্ট্র দ্বারা আক্রান্ত হয়, তখন মুসলিম হিসাবে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের উপরে জিহাদ ‘ফরযে আয়েন’ হবে । বর্তমান অবস্থায় প্রশ্নে উল্লেখিত কোনরূপ জঙ্গী দলের সাথে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কোন স্তরের নেতা বা কর্মীর যোগদান করা বৈধ হবে না ।

উৎসঃ ভ্রান্তির বেড়াজ্বালে ইক্বামতে দ্বীন - শায়খ মুযাফফর বিন মহসিন, ৮০,৮১ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত ।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

এটাই ছিল ২০০০ সালের আগষ্ট মাসে দেওয়া মাসিক আতরীকে প্রকাশিত জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে একমাত্র ফৎওয়া । মাসিক আতরীকের ফৎওয়া কমিটি দারুল ইফতার একজন অন্যতম সম্মানিত সদস্য হলেন, বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘের সদ্য সাবেক সভাপতি এবং পিস টিভি বাংলার আলোচক শায়খ মুযাফফর বিন মহসিন । আমরা সরকারের কাছে আহ্ববান জানাই, শায়খ মুযাফফর বিন মহসিনের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার জন্য ।



বিষয়: বিবিধ

২০৮১ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

283567
১২ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:১৮
নেহায়েৎ লিখেছেন : আমাদের নবী (ছাঃ) তাঁর জীবনের প্রথম ১৩ বছর দাওয়াতী কাজ করেছেন । পরবর্তী মাদানী জীবনে তিনি সশস্ত্র যুদ্ধ করেন । যা একমাত্র অমুসলিমদের বিরুদ্ধে ছিল । তবুও তা ছিল প্রতিরক্ষামূলক কিংবা শান্তিচুক্তি ভঙ্গ অথবা ইসলামী দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করার কারণে । কোন পাপী মুসলমান বা জাহান্নামী ঘোষিত মুনাফিকের বিরুদ্ধে তাঁর কোন যুদ্ধ ছিল না । বরং মৌখিক কালেমার দারবীদারকে তিনি মুসলিম বলেই গণ্য করেন । (১)তিনি বলেন, ‘আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি যে পর্যন্ত না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল এবং ছালাত কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে ।
১২ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২১
226800
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : একমত
১২ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩০
226804
বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ লিখেছেন : হাদীছের খন্ডিত অংশকে কমেন্টে এনে অপব্যাখ্যা করার প্রবণতা নেক্কারজনক । আল্লাহ সঠিক দ্বীন বুঝার তাওফীক দান করুক, আমিন ।
১৩ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৪৬
226934
নেহায়েৎ লিখেছেন : যখন এইরূপ করবে, আমার পক্ষ হতে তাদের জান-মাল নিরাপদ থাকবে । কিন্তু ইসলামের বিধান অনুযায়ী যদি কেহ দন্ড পাওয়ার উপযোগী কোন অপরাধ করে, (তবে জান ও মালের দন্ড হবে) । দুনিয়াতে তাদের মুখের ঘোষণা ও বাহ্যিক কার্যকালাপই গৃহিত হবে এবং তাদের (অন্তর সম্পর্কে) বিচারের ভার (আখেরাতে) আল্লাহর উপরই ন্যস্ত রইল’ (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/১২, ‘ঈমান’ অধ্যায়)
283579
১২ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:১২
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : মাশাআল্লাহ - মুক্তি চাওয়ার বড় উত্তম তরিকা। কিছু বলার নেই।
১২ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৮
226787
পরবাসী লিখেছেন : আপনাদের বুড়া গুলো সর্বোচ্চ আদালতে ক্রিমিনাল প্রমানিত হওয়ার পরও উনারা নিস্পাপ ফুলের মত পবিত্র।

অন্যদিকে একজন ইসলাম প্রচারক শায়খের ব্যাপারে কিছু না জেনেই বলে দিলেন।

আপনারা ইসলামপন্থী বটে !!!!!!!
১২ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২২
226801
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : পরবাসী,
খুব বেশি জানেন মনে হচ্ছে। আপনার কথাতেই তা প্রমানিত হল।
১২ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৯
226807
বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ লিখেছেন : মুক্তি পাওয়ার তরিকা নয় । আমরা সালাফে সালেহীনদের আদর্শে বিশ্বাসী, চরমপন্থায় নয় । আর মুক্তি দেওয়ার মালিক তো আল্লাহ । আল্লাহ যেদিন মুক্তি দেবেন সেদিন কেউ ঠেকাতে পারবে না । সরকারকে এটা নসিয়ত করা মাত্র আর কিছু নয় । কারণ আমরা নেতৃত্ব পরিবর্তনে বিশ্বাসী নই বরং নীতির পরিবর্তন চাই ।
283598
১২ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৪
সুশীল লিখেছেন : মাইনাস
283646
১২ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৩
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : হাদীস সত্য উদ্দেশ্য খারাপ।
১২ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৪
226806
বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ লিখেছেন : হাদীছ সত্য , উদ্দেশ্যও ভাল । কারণ হাদীছের ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা হয়েছে সালাফে সালেহীনদের । কোন স্বঘোষিত মুজতাহিদ অথবা অনুবাদ পড়ে ফোতয়া দেওয়া মৌলবীদের মত নয় ।
১৩ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৫৬
226955
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : আহলে হাদীস নামধারীরা,
তোমরা যতই ত্বগুতের আস্তাভাজন হওয়ার চেষ্টা কর, তোমরা পূর্ণ আস্তা অর্জন করতে পারবে না, যতক্ষন না দ্বীনকে সম্পূর্ণ পরিত্যাগ কর। আল কোরআন। (যদিও দ্বীনের কিছু অংশ ত্যা করেছো)
283686
১২ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১০:১০
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : @বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ।
আহলেহাদীছ মানে সালাফী।
আপনি সালাফী হলে এখানে কেন।
আপনার তো ময়দানে থাকার কথা।
এক জন প্রকৃত সালাফীর লিংক দিলাম।
https://www.youtube.com/results?search_query=anajam+chodury
283687
১২ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১০:১০
১২ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৩৫
226862
বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ লিখেছেন : আপনি সালাফি আলেমদের চিনেন ? সালাফিদের মানহাজ কি জানেন ? যাকে সালাফি বলছেন, সে কোন ইসলামিক স্কলার নন । সে একজন তাকফিরি খারেজি, কবীরাহ গুনাহকারী মুসলিমদের সে অমুসলিম মনে করে । আশা করি আন্দাজে পাগলের প্রলাপ বকবেন না ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File