শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিন ষড়যন্ত্রের শিকার

লিখেছেন লিখেছেন বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ ১০ নভেম্বর, ২০১৪, ১০:৪১:০৮ রাত

যখন ই দেশের গণমাধ্যমগুলো সত্যটা প্রকাশ না করে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে হলুদ সাংবাদিকতা করে তখনই প্রয়োজন পড়ে বিকল্প মিডিয়ার । আর সেই বিকল্প মিডিয়া হচ্ছে ফেসবুক, টুইটার সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ।

এটা নতুন কিছু না । এর আগেও ঘটেছে । যখন ২০০৫ সালে আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর প্রফেসর ডঃ আসাদুল্লাহ আল গালিব কে গ্রেফতার করা হয়, তখন এই পেশাদার মিডিয়া তাকে প্রচার করে জঙ্গী হিসেবে । আর আইন শৃওঙ্খলা বাহিনী জঙ্গী সংগঠন জেমএবির বোমাবাজির দায় চাপিয়ে দেয় নিরাপরাধ ডঃ আসাদুল্লাহ আল গালিবের উপর । কিন্তু আল্লাহ তো সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক । তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলে ঠিকই তিনি নির্দোষ প্রমাণ হতে শুরু করেন , একের পর এক মামলা থেকে । অবশেষে ৩ বছর ৮ মাস ৯ দিন পর তিনি আল্লাহর রহমতে মুক্তি লাভ করেন । আর প্রমাণিত হয় বোমাজি করেছে জেমএবি, ঐ কুখ্যাত বাংলা ভাই, আব্দুর রহমানরা । আর ডঃ আসাদুল্লাহ আল গালিব নির্দোষ প্রমাণিত হন ।

এরপরে বাংলাদেশে এমন আরো ঘটনা ঘটে । তার মধ্যে একটি ঘটনা পরিমল জয়ধর কর্তৃক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ । আর ইলেক্ট্রিক মিডিয়াগুলো তখন ছিল চুপ । আর কিছু প্রিন্ট মিডিয়া স্কুল ছাত্রী কে ই দোষারোপ করার জন্য একের পর এক ঘটনা বিকৃতি করে লিখতে থাকে । তখন ই ঐ ফেসবুকে সত্য ঘটনাগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরে একটি ফেসবুক পেজ । আর চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় অসৎ সাংবাদিকদের মিথ্যাচার ।

আজকে আমরা তাই শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিনের ব্যাপারে মানুষকে জানাতেই এই পেজ খুলেছি । তার কর্মকান্ড সম্পর্কে জানাতেই এই প্রয়াস । সারা পৃথিবীর বাংলা ভাষা ভাষী মানুষ জানুন । জনগণ এর রক্ষক আইন শৃংখলা বাহিনী কিভাবে নিরাপরাধ মানুষকে হয়রানি করে ।

শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিন বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘের সদ্য সাবেক সভাপতি । আল-মারকাজুল ইসলাম আস-সালাফি , নওদাপাড়া রাজশাহী মাদ্রাসার শিক্ষক । হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের দারুল ইফতা’র সম্মানিত সদস্য এবং বিশ্ব নন্দিত ইসলামিক দাঈ ডাঃ জাকির নায়িক এর পিস টিভি বাংলার নিয়মিত একজন আলোচক ।

তিনি দেশ এবং দেশের বাইরে তিনি কুর’আন এবং সহীহ হাদিস ভিত্তিক ইসলাম প্রচারে সমাদৃত । তিনি সমাজের জাল-হাদিসের কুপ্রভাব, শির্ক-বিদা’আত এর কুপ্রভাব, সহীহ আমল, সহীহ আকিদা সম্পর্কে এবং ইসলামের নামে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে

দীর্ঘ দিন থেকে দেশে বিদেশে ব্যক্তব্য দিয়ে আসছেন । আর এইগুলো সম্পর্কেই তিনি রচনা করেছেন ৮/১০ টি বই ।

২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর তিনি মিছবাহ ফাউন্ডেশন ও আমারদেশ আয়োজিত প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় ৬ হাজার প্রবন্ধের মধ্যে তাঁর লেখা “ইসলাম ও মুসলমানদের চিরন্তন শত্রু চরমপন্থীদের থেকে সাবধান” ইসলামের নামে জঙ্গীবাদ এর বিরুদ্ধে লেখা এই প্রবন্ধ ১ম হয় । আর তিনি ঢাকা ওসমানী মিলনায়নে ৫০০ শতাধিক আলেম ও মুনীষীদের উপস্থিতিতে ক্রেষ্ট ও ২০,০০০ হাজার টাকায় পুরষ্কৃত হন ।

আর এখন ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়া আর প্রিন্ট মিডিয়াগুলোতে প্রচার করা হচ্ছে , তিনি নাকি জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নেতা !!!!!!!

যিনি সমাজের শির্ক-বিদা’আত এবং জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সাহসী কন্ঠ তাকে আজ জঙ্গী সংগঠনের সাথে জড়ানো হচ্ছে !!! আল্লাহ তা’আলা সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক তাই আল্লাহর কাছে এই মিথ্যাচারের বিচার দিলাম আমরা ।

চ্যানেল আই এর ইসলামী অনুষ্ঠানের ভাষ্যকার মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকি হত্যা মামলায় এখন তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে ২ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে । ডিবি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, শায়খ মুযাফফর বিন মহসিনের ব্যক্তব্যে নুরুল ইসলাম ফারুকির বিরুদ্ধাচরণ রয়েছে ।

মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকির কর্মকান্ডের বিরোধিতা করার মানে কি তাকে হত্যা করা প্রমাণ করে ???

শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিন কোন ব্যক্তব্যেই নুরুল ইসলাম ফারুকি কে হত্যা করতে বলেন নাই । তিনি নুরুল ইসলাম ফারুকির কর্মকান্ডের ভুলগুলো তুলে ধরে মানুষ কে সচেতন করতেন মাত্র । আর তিনি চাইতেনও নুরুল ইসলাম ফারুকিও সংশোধন হয়ে কবর-মাযার পূজা ছেড়ে সহীহ আকিদা গ্রহন করুক । কারণ যত যাই হোক, নুরুল ইসলাম ফারুকিও ছিলেন একজন ইসলামিক দাঈ, অজ্ঞতা বশত তিনি জীবনে কিছু ভুল করে গেছেন । কিন্তু শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিন কখনোই চাই নি তার সন্ত্রাসীদের হাতে মৃত্যু হোক । কারো কর্মকান্ড সম্পর্কে মন্তব্য করা যদি অপরাধ হয়, তবে স্বাধীন দেশে বাক-স্বাধীনতা ক্ষ্ণণ্ন হয় ।

আজকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে আর্দশগত পার্থক্যের কারণে শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিন এর খন্ডিত ব্যক্তব্য আমলে নিয়ে মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকি হত্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে । আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই ।

সরকারের কাছে আবেদন জানাই, আপনারা শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিনের লেখনীগুলো পড়েন, তাঁর ব্যক্তব্যগুলো সম্পূর্ণ শুনেন তারপরে বিচার করুন তিনি দোষী নাকি নির্দোষী ।

শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিন কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নন, তিনি ক্ষমতার জন্য সংগঠন করেন না । আর আহলে হাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ আহলে হাদীছ যুবসংঘ কোন রাজনৈতিক সংগঠন না । এটা দাওয়াতি সংগঠন । এই সংগঠন বাংলাদেশে কুর’আন এবং সহীহ হাদীছ ভিত্তিক ইসলাম প্রচার করে থাকে । সমাজের শির্ক-বিদা’আত দূরীকরণে, সহীহ আমল ও ইসলামের প্রসারে এবং সমাজে ইসলামের নামে জঙ্গীবাদ দূরীকরণে কাজ করে যাচ্ছে বছরের পর বছর ।

তারা মুসলিম শাসকের ভাল কাজগুলোর ব্যাপারে আনুগত্যে বিশ্বাসী এবং শাসকের ভুল হলে তাকে সঠিক পথ দেখানো জন্য উপদেশ দেয় । যেমনভাবে সালাফে সালেহীনগণ যুগে যুগে করে এসেছেন । সুতরাং শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিন কখনোই দেশ বিরোধী, হত্যাকান্ড এইসব কর্মকান্ডে জড়িত নন । প্রকৃত হত্যাকারীদের সন্ধান না পেয়ে, তাকে সন্দেহের উপরে ধরা হয়েছে এবং বিদা’আতী গোষ্ঠী তার ব্যক্তব্যের খন্ডিত অংশ পেশ করে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে ফাসিয়েছে ।

শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিনের লিখিত কিছু বইঃ

১। ভ্রান্তির বেড়াজ্বালে ইকামতে দ্বীন । (জঙ্গীবাদ এবং ভ্রান্ত আকিদার বিপক্ষে লিখিত তার অন্যন্য বই)

২। জ্বাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এর ছালাত ।

৩। আহলে হাদীছদের সংগ্রামী চেতনা ।

৪। জ্বাল ও যঈফ হাদীছ বর্জনের মূলনীতি ।

৫। শরীঈ মানদন্ডে মুনাজাত ।

৬। ছহীহ হাদীছের কষ্টিপাথরে ঈদের তাকবীর ।

৭। নির্বাচিত হাদীছ ।

৮। অনুবাদ গ্রন্থঃ মিশাকা’তে বর্ণিত জাল ও যঈফ হাদীছ – মূল আল্লামা নাসিরুদ্দিন আলবানী (রহঃ)।

যারা যারা আমাদের এই লেখাটি পড়েছেন সকলেই এই নিরাপরাধ তরুণ শায়খ মুযাফফর বিন মহসিনের মহসিনের মুক্তি জন্য আল্লাহ কাছে দু’আ করুন । তাহাজ্জু্ত সালাতে, কুনূত্বে নাযেলার মাধ্যমে, যে কোন সময় আল্লাহর কাছে দু’আ করুন । কারণ মাজলুমদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে দু’আ । সহীহ হাদিস থেকে বর্ণিতঃ তিন শ্রেণীর লোকের দু’আ কখনো বৃথা যায় না, তাঁর মধ্যে এক শ্রেনী হচ্ছে , মাযলূমের দু’আ । (আবু দাঊদ হা/১৫৩৬; মিশকাত হা/২২৫০ সনদ হাসান) ।

আল্লাহ তুমি শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিনকে হেফাজত কর এবং মুক্তি দান কর । তুমি কাউকে কিছু দিলে তা আটকে রাখার কেউ নেই , তুমি কাউকে আটকে রাখলে তাঁকে মুক্ত করার কেউ নেই । তাই ইয়া রহমানুর রহীম তোমার মাজলূম বান্দা শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিন কে মুক্ত করে আবার দ্বীন প্রচারের ময়দানে ফিরিয়ে দাও, আমিন ।



বিষয়: বিবিধ

৫০০৭ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

283057
১১ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১২:১৬
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন :


আমি অত্যন্ত দু:খ ভরাক্রান্ত হৃদয়ে সৌদি রাজতন্ত্রের সমর্থক ওহাবী বা লামাযহাবী বা রাফাদানি (বাংলাদেশে তারা নিজেদের আহলে হাদিস বা সালাফী বলে পরিচয় দেন )ভাইদের বলছি : দয়া করে আপনারা ভিন্ন মত ও পথকে সামান্য হলেও শ্রদ্ধা করুন ও অন্তর্ঘাতমূলক তৎপড়তা হতে বিরত থাকুন ।

আমার আপনাদের ব্যাপারে আর কিছু বলার নেই ।
১১ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:০৮
226409
আমজনতার কথা লিখেছেন : একজন বেয়াদব অন্যদের আদব শেখার নসিহত করে! সেলুকাস!!Surprised Surprised
283068
১১ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০১:১৯
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : সত্য কি সেটা আসলে জানা জরুরি জানিনা কে কোথায় অপরাধী.... অপরাধী না হলে যেন তিনি মুক্তি লাভ করেন।
283091
১১ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০২:২৬
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : শায়খ মুযাফফর বিন মহসিন প্রকৃত সালাফী
নয়। সে ফেইক সালাফী। প্রকৃত সালাফী
হলে, ইরাক এবং সীরিয়াতে থাকতো।
283101
১১ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:১৪
বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ লিখেছেন : @মনসুর আহামেদ, আপনি কয়েকটা সালাফি আলেমদের নাম বলেন তো ???সালাফি মানহাজ কি জানেন ???

রাজতন্ত্র হারাম কোন কিতাবে পেয়েছেন ? তিনি কোন সংঘাত মূলক কিছু করেন নাই , উনি শুধু কুর'আন এবং সহীহ হাদীছ থেকে ইসলামের বাণী প্রচার করতেন@মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম

@নুর আয়শা আব্দুর রহিম, জাযাকাল্লাহু খইর । আপনি নিরাপরাধ মানুষের মুক্তি চান, জেনে ভালো লাগলো ।
১১ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৪৮
226406
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : ইনসাফ বিরোধী সব কিছু ইসলামে হারাম। রাজতন্ত্র ইনসাফ বিরোধী-এজন্য এটি অবশ্যই হারাম।

তবে আমি মহসিন সাহেব এর মুক্তি দাবি করছি। কারণ এটি হয়রানিমূলক। আর ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ইসলামবিরোধীদের সাথে সুর মিলিয়ে জঙ্গি বলায় তার নিন্দা ও করছি।
১১ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:০৬
226408
আমজনতার কথা লিখেছেন : ফখরুল একজন চরম বেয়াদব, গোঁড়া ও মাজারপুজারী। তাকে মুসলমান হিসেবে গণ্য করার কোন কারণ আছে বলে আমি মনে করি না।
283138
১১ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৭:১৩
কাহাফ লিখেছেন :

একজন দ্বীনের দায়ী হিসেবে উনার মুক্তি কামনা করছি!
তবে-বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্ব ইসলাম কে বিভক্তকারী এই সব 'সালাফী-ওয়াহাবী-আহলে হাদীছ'ইত্যাদি ফেরকা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখায় উনার প্রতি নিন্দা জানাই!
মহান আল্লাহ আমাদের কে ভেদাভেদ পরিহার পুর্বক ইসলামের এক কাতারে শামিল করুন,আমিন!
283157
১১ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:২৯
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : ছোটখাট ফেরকাগুলি যত্ন করে নিজেদের সাথে রেখে মৌলিক বিষয়ে সব ইসলামি দলের ঐক্যবদ্ধ হওয়া সময়ের দাবি। আলেম সমাজ বিছিন্ন তাকলে এই ভাবে মাইর খেতে থাকবে।


আপনার সাথে একমত "মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে আর্দশগত পার্থক্যের কারণে শায়খ মুযাফফর বিন মহসিন এর খন্ডিত ব্যক্তব্য আমলে নিয়ে মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকি হত্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে । আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই ।" এবং তাঁর মুক্তি চাই

জাযাকাল্লাহ খায়ের

283276
১১ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:১৮
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : ইসলামদ্রোহী হলে দেশপ্রেমিক, আর ইসলামপন্থি হলে দেশদ্রোহী। তবে সববিষযে আল্লাহই তাআলাই সর্বজান্তা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File