‘ইসলাম’ উদারতার ধর্ম, সংকীর্ণতার নয়।

লিখেছেন লিখেছেন তাহেরা ফারুকি ২২ মে, ২০১৬, ০১:১২:৩৮ দুপুর

পরিচিত আপা এক বাসায় গেলেন রোজার মাসে কি করনীয় সেই সম্পর্কে দুটি কথা বলার জন্য। কাজের মেয়েটি এসে জানায় –খালাম্মা কোরআন পড়ছে এখন আসতে পারবেন না। আপনারা চাইলে বসতে পারেন। কিছুই না বলে ফিরে এলেও দিন দুই পর আবার গেলেন ঐ বাসায়। মহিলাকে ডেকে বিনয়ের সাথে তিনি বললেন— আপা কোরআন কি অর্থ সহকারে পড়েন? ভদ্রমহিলার উত্তর ছিল না। আপা তখন বললেন –আপনি কোরআন পড়ছিলেন তাতে আল্লাহ যেমন খুশী হয়েছিলেন মেহমানের সাথে কথা বলাতে কিন্তু আল্লাহ খুশী হতেন, যদি অর্থ বুঝে পড়তেন তবে বুঝতেন সে সময়ে আপনার করনীয় কি ছিল। ভদ্রমহিলা বুঝে শুনে কথা দিলেন এমন আর হবেনা আর তিনি অর্থসহ বুঝে কোরআন পড়বেন।

আধেক পৃথিবী আনিল ঈমান যে উদারতা গুনে

শিখিনি আমরা সেই উদারতা কেবল গেলাম শুনে...

কোরআন –হাদিসে কেবল গেলাম শুনে...............।

(কাজী নজরুল ইসলাম)

আমরা যারা ইসলাম মানি বা হর -হামেশা দ্বিনের দায়ী বলে আখ্যায়িত করি, কেউ কেউ আবার নিজেদের অমুক সদস্য, তমুক জায়গার সেক্রেটারি ইত্যাদি বলে পরিচয় দিয়ে থাকি। এই কথাগুলি কি শুধুই পরিচয় দেবার জন্য নাকি যিনি বা যারা বেহেশতের প্রতিনিধি দল হয়ে ধুলার পৃথিবিতে এই গুরুদায়িত্ব পান তাদের কি জানা আছে এই বিশেষণ পাবার পর করনীয় কি?

অনেক দ্বীনের দায়ীকে বলতে শুনেছি --আমরা ইসলাম মেনে চলি তাই উনারা আমাদের পছন্দ করেন না! এটা একটা ভণ্ডামীপুর্ণ কথা। আরবের অন্ধকারচ্ছান্ন যুগে নবীজি যখন আবির্ভূত হয়েছিলেন সেই সময়ে অসভ্য- বর্বর আরবজাতিও নবীজিকে আল-আমিন উপাধি দিয়েছিল। তারা এতো অসভ্য হবার পরও মিথ্যা কথা বলতো না। আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অস্তিত্ব নিয়ে কথা উঠলে চুপ থাকা শ্রেয় মনে করতো।

আমরা কি করছি? নিজেদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে, ব্যার্থতা ঢাকতে রক্তের সম্পর্কের নিকট আত্মীয়দের সাথে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা দুরের কথা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কাছে মুরব্বীদের অসম্মান করতে হাতে- কলমে শিক্ষা দিতে সদা সচেষ্ট আছি। তাদের বানাচ্ছি মুরব্বীদের প্রতিদ্বন্দ্বী।

‘ইসলাম’ উদারতার ধর্ম, সংকীর্ণতার স্থান ইসলামে নেই। আমি -আপনি যখন ইসলামকে সঠিক ভাবে মেনে চলতে চাইবো তখন এই কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে আমি সঠিক পথে আছি তাতে গর্ব বা অহংকারের কিছু নাই, আল্লাহর বড় দয়া তিনি আমাদের সঠিক পথে চলার মত বিবেক দিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ্‌।

অন্যকে দেখানোর জন্য ইসলাম নয় নিজেকে গড়ার জন্যই ইসলামকে আঁকড়ে ধরি জীবন চলার পথে। তাতেই মিলবে এপার-ওপাররের কল্যাণ, মুক্তি ও স্বস্তি।

বিষয়: বিবিধ

১১৩২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

369805
২২ মে ২০১৬ দুপুর ০১:৩৮
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : মাশাআল্লাহ আপু খুবই অসাধারণ একটা লেখা লিখেছেন নামাজের আগে এমন একটা লেখা সত্যি মনকে পুলোকিত করবে। জাঝাক আল্লাহ আপু
369818
২২ মে ২০১৬ দুপুর ০৩:৪৩
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, দারুন লাগলো আপনার পোষ্ট।
তবে একটি কথাঃ
পরিচিত আপা এক বাসায় গেলেন রোজার মাসে কি করনীয় সেই সম্পর্কে দুটি কথা বলার জন্য।

পরিচিত আপুর সাথে কি তার কোন মাহরাম পুরুষ গিয়েছিল? নাকি পরের বাসায় একাই গিয়েছিল?

ধন্যবাদ

রাগ করবেন না, জানার জন্য বলেছি।


369831
২২ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:২৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ধন্যবাদ শিক্ষনিয় পোষ্টটির জন্য। ইসলাম এর জন্য কথা বললে সবাই ই সন্মান করে কিন্তু ইসলামি শাসন এর কথা বললে বাধা দেয় ও ঘৃনা করে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File