হযরত উমর (রাঃ) শাসন আমল

লিখেছেন লিখেছেন মোমিন হোসেন ২৪ জানুয়ারি, ২০১৫, ১১:০৩:২৮ সকাল

একদিন ২ জন লোক এক

বালককে টেনে ধরে নিয়ে আসল

তাঁর

দরবারে । উমর (রাঃ) তাদের

কাছে জানতে চাইলেন যে,

'ব্যাপার

কি, কেন

তোমরা একে এভাবে টেনে এনেছ?'

তারা বলল 'এই বালক আমাদের

পিতাকে হত্যা করেছে ।

উমর (রাঃ) বালকটিকে বললেন

'তুমি কি সত্যিই তাদের

পিতাকে হত্যা করেছ ?

বালকটি বলল,

হ্যা আমি হত্যা করেছি তবে তা ছিল

দূর্ঘটনাবশত, আমার উট তাদের

বাগানে ঢুকে পড়েছিল

তা দেখে তাদের

পিতা একটি পাথর

ছুড়ে মারল,যা উটের

চোখে লাগে ।

আমি দেখতে পাই যে উটটি খুবই কষ্ট

পাচ্ছিল।

যা দেখে আমি রাগান্বিত

হই এবং একটি পাথর নিয়ে তার

দিকে মারি, পাথরটি তার

মাথায়

লাগে এবং সে মারা যায় ।'

উমর (রাঃ) ২ ভাইকে বলেলন

'তোমরা কি এ

বালককে ক্ষমা করবে ?'

তারা বলল, 'না, আমরা তার মৃত্যূদন্ড

চাই

।'

উমর (রাঃ) বালকটির

কাছে জানতে চাইলেন 'তোমার

কি কোন শেষ ইচ্ছা আছে?

বালকটি বলল

'আমারআব্বা মারা যাওয়ার সময়

আমার

ছোট ভাইয়ের জন্য কিছুসম্পদ

রেখে যান, যা আমি এক যায়গায়

লুকিয়ে রেখেছি । আমি তিন দিন

সময়

চাই, যেন আমি সেই জিনিস

গুলো আমার

ভাইকে দিয়ে আসতে পারি ।

আমার

কথা বিশ্বাস করুন ।'

উমর রাঃ বললেন

'আমি তোমাকে বিশ্বাস

করতে পারি যদি তুমি এক জন

জামিন

জোগাড় করতে পার

যে নিশ্চয়তা দেবে যে তুমি ফিরে আসবে ?

বালকটি দরবারের

চারদিকে তাকাল

এত মানুষের মধ্যে কেউই তার

জামিন

হলনা। সবাই নিচের

দিকে তাকিয়ে রইল। হঠাত

দরবারের

পেছন থেকে একটি হাত উঠল।

কার হাত ছিল এটি? প্রখ্যাত

সাহাবী আবু যর গিফারী (রাঃ) ,

তিনি বললেন 'আমি তার জামিন

হব।

চিন্তা করুন জামিন মানে হল,

যদি বালকটি ফিরে না আসে তবে আবু

যর গিফারী রাঃ এর শিরচ্ছেদ

করা হবে। সুতরাং,

বালকটিকে ছেড়ে দেওয়া হল ।

এক দিন গেল, দ্বিতীয় দিনেও

বালকটি আসল না, তৃতীয়

দিনে ২ভাই

আবু যর গিফারী (রাঃ) এর

কাছে গেল

। আবু যর (রাঃ) বললেন

'আমি মাগরিব

পর্যন্ত অপেক্ষা করব' মাগরিবের

কিছুক্ষণ আগে আবু যর

গিফারী (রাঃ)

দরবারের দিকে রওনা হলেন ।

মদিনার

লেকজন তাঁর পেছন পেছন

যেতে লাগল

। সবাই দেখতে চায় কি ঘটে।

আবু যর (রাঃ) একটি বালকের ভুলের

কারণে আজ জীবন দিচ্ছেন । হঠাত্

আজানের কিছুক্ষণ

আগে বালকটি দৌড়ে আসল ।

লোকেরা সবাই অবাক হল ।

হযরত উমর (রাঃ) বললেন

'হে বালকতুমি কেন ফিরে এসেছ?

আমিতো তোমার পিছনে কোন

লোক

পাঠাইনি । কোন

জিনিসটা তোমাকে ফিরিয়ে আনল?'

বালকটি বলল 'আমি চাই না যে,

কেউ

বলুক একজন মুসলিম কথা দিয়েছিন

কিন্তু

সে তা রাখে নি তাই

আমি ফিরে এসেছি।'

উমর (রাঃ) আবু যর (রাঃ) কে বললেন

'হে আবু যর তুমি কেন এই বালকের

জামিন হলে?' আবু যর (রাঃ) বললেন

'আমি দেখলাম একজন মুসলমানের

সাহায্য প্রয়োজন, আমি চাই

না যে,

কেউ বলুক একজন মুসলমানের সাহায্য

প্রয়োজন ছিল কিন্তু কোন মুসলমান

তাকে সাহায্য করেনি।'

এ কথা শুনে দুই ভাই বলল 'আমরাও চাই

না যে কেউ বলুক একজন মুসলমান

ক্ষমা চেয়েছিল কিন্তু অন্য মুসলমান

তাকে ক্ষমা করেনি।' তারপর

বালকটি মুক্তি পেল ।

বিষয়: বিবিধ

১৩৭০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

301507
২৪ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ১২:১১
দ্য স্লেভ লিখেছেন : এভাবে এক জনের স্থলে অন্যজনের জামিন থাকার ব্যাপারটি শরীয়াহ সম্মত না হলে বুঝতে হবে,এটি নিছক একটি উপদেশমূলক গল্প। অনেক গল্প প্রখ্যাত মনীষীদের নামে প্রচলিত আছে
301511
২৪ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫
সজল আহমেদ লিখেছেন : এই সত্য গল্পটা আসলে মুসলমান মুসলমানের প্রতি ভ্রাতৃত্ববন্দনের এবং ওয়াদা রক্ষার শিক্ষা দেয় ।
পোস্ট প্লাস এবং প্রিয়তে...
301528
২৪ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:২৫
মোতাহারুল ইসলাম লিখেছেন : পিলাচ।
301538
২৪ জানুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৫:১৫
মোঃজুলফিকার আলী লিখেছেন : সত্যি! মুসলমানের প্রতি অপর মুসলিমের সহানুভূতি দেখে শিক্ষা নেয়া উচিত। ধন্যবাদ সুন্দর দৃষ্টান্তমূলক কাহিনী উপস্থাপন করার জন্য।
301546
২৪ জানুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২১
মনসুর লিখেছেন : মাশাআল্লাহ, সুন্দর লিখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, জাজাকাল্লাহু খাইরান। শুভেচ্ছান্তে ধন্যবাদ।

আহ, ইসলামের শিক্ষা কতই না সুন্দর।

মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File