ইসলাম এর পূর্ব জাতিতে সাওম পালন বা রোজা রাখা
লিখেছেন লিখেছেন ছালসাবিল ২৪ জুন, ২০১৫, ০৮:৫৯:৪১ সকাল
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣﴾ [البقرة: ١٨٣]
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সাওম ফরয করা হয়েছে। যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৩]
এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, পূর্ববর্তী প্রত্যেক নবী ও প্রত্যেক জাতির মধ্যেই প্রচলিত ছিল ‘সাওম’ বা রোযা।
আদম আলাইহিস সালামের শরী‘আতে সাওম:
প্রথম নবী আদম আলাইহিস সালামের শরী‘আতে সিয়ামের বিধান দেওয়া হয়েছিল বলে তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ পাওয়া যায়। অবশ্য সেই সিয়ামের ধরণ ও প্রকৃতি কেমন ছিল তা আমাদের জানা নেই। এ বিষয়ে বাইবেল, কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীসের কিতাব একেবারে নিশ্চুপ। বলা হয়ে থাকে, পূর্ববর্তী প্রত্যেক নবীর শরী‘আতেই চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে সিয়ামের বিধান ছিল। এ সাওম আইয়্যামে বীদ বা শুভ্ররাত্রিগুলোর দিনের সাওম নামে খ্যাত।
নূহ আলাইহিস সালামের সাওম:
তাফসীরে ইবন কাসীরে এসেছে,
قَدْ كَانَ هَذَا فِي ابْتِدَاءِ الْإِسْلَامِ يَصُومُونَ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ، ثُمَّ نُسِخَ ذَلِكَ بِصَوْمِ شَهْرِ رَمَضَانَ، كَمَا سَيَأْتِي بَيَانُهُ. وَقَدْ رُوي أَنَّ الصِّيَامَ كَانَ أَوَّلًا كَمَا كَانَ عَلَيْهِ الْأُمَمُ قَبْلَنَا، مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ -عَنْ مُعَاذٍ، وَابْنِ مَسْعُودٍ، وَابْنِ عَبَّاسٍ، وَعَطَاءٍ، وَقَتَادَةَ، وَالضَّحَّاكِ بْنِ مُزَاحِمٍ. وَزَادَ: لَمْ يَزَلْ هَذَا مَشْرُوعًا مِنْ زَمَانِ نُوحٍ إِلَى أَنْ نَسَخ اللَّهُ ذَلِكَ بِصِيَامِ شَهْرِ رَمَضَانَ.
“প্রসিদ্ধ তাফসীরবিদ মু‘য়ায, আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ, ‘আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু, ‘আতা, কাতাদা ও দাহহাক রহ. বর্ণনা করেন, নূহ আলাইহিস সালাম হতে শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত প্রত্যেক নবীর যুগেই প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়ামের বিধান ছিল। পরবর্তীতে ইহা রমযানের সাওম দ্বারা রহিত হয়।
আব্দুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «صَامَ نُوحٌ الدَّهْرَ، إِلَّا يَوْمَ الْفِطْرِ وَيَوْمَ الْأَضْحَى»
“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, নূহ আলাইহিস সালাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন বাদে সারা বছর সাওম পালন করতেন।”
ইবরাহীম আলাইহিস সালামের সাওম:
মুসলিম মিল্লাতের পিতা সহিফাপ্রাপ্ত নবী ইবরাহীম আলাইহিস সালামের যুগে ৩০টি সাওম ছিল বলে কেউ কেউ লিখেছেন।
দাউদ আলাইহিস সালামের সাওম:
আসমানী কিতাব ‘যবুর’ প্রাপ্ত বিখ্যাত নবী দাউদ আলাইহিস সালামের যুগেও সাওমের প্রচলন ছিল।
আব্দুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« «صُمْ أَفْضَلَ الصِّيَامِ عِنْدَ اللهِ، صَوْمَ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلَام كَانَ يَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا»
“আল্লাহর কাছে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সাওম দাউদ আলাইহিস সালামের সাওম -তিনি এক দিন সাওম পালন করতেন এবং এক দিন বিনা সাওমে থাকতেন”।
মূসা আলাইহিস সালাম ও ইয়াহূদী ধর্মে সাওম:
ইয়াহূদীদের ওপর প্রতি শনিবার, বছরের মধ্যে মহররমের ১০ তারিখে আশুরার দিন এবং অন্যান্য সময় সাওম ফরয ছিল। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِينَةَ فَرَأَى اليَهُودَ تَصُومُ يَوْمَ عَاشُورَاءَ، فَقَالَ: مَا هَذَا؟ قَالُوا: هَذَا يَوْمٌ صَالِحٌ هَذَا يَوْمٌ نَجَّى اللَّهُ بَنِي إِسْرَائِيلَ مِنْ عَدُوِّهِمْ، فَصَامَهُ مُوسَى، قَالَ: فَأَنَا أَحَقُّ بِمُوسَى مِنْكُمْ، فَصَامَهُ، وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ»
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরত করে ইয়াহূদীদের আশুরার দিনে সাওম অবস্থায় পেলেন। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজকে তোমরা কিসের সাওম করছ?’ তারা বলল, ‘এটা সেই মহান দিন যেদিন আল্লাহ তা‘আলা মূসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর কওম বনী ইসরাইল ফির‘আউনের কবল থেকে মুক্ত করেছিলেন। ফলে শুকরিয়াস্বরূপ মূসা আলাইহিস সালাম ঐ দিনে সাওম রেখেছিলেন, তাই আমরা আজকে সাওম করছি।’ এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমি তোমাদের অপেক্ষা মূসা আলাইহিস সালামের অধিক নিকটবর্তী। এরপর তিনি এ দিন সাওম পালন করেন এবং সবাইকে সাওম রাখার নির্দেশ দেন”।
ঈসা আলাইহিস সালাম ও খ্রিস্টান ধর্মে সাওম:
আসমানী কিতাব ‘ইঞ্জিল’ প্রাপ্ত বিশিষ্ট নবী ‘ঈসা আলাইহিস সালামের যুগে সাওমের প্রমাণ পাওয়া যায়। ঈসা আলাইহিস সালামের অনুসারী সম্প্রদায় সাওম রাখতেন। বর্তমানে তাদের দু’ধরণের সাওম আছে।
প্রথম হলো, তাদের ফাদারের উপদেশে নির্দিষ্ট কয়েক দিন খাদ্য পানীয় থেকে বিরত থাকা আর ইফতার হবে নিরামিষ দিয়ে। মাছ, মাংস ও দুগ্ধজাত জিনিস খাওয়া যাবে না। যেমন, বড় দিনের সাওম, তাওবার সাওম যা ৫৫ দিন পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়। এমনিভাবে সপ্তাহে বুধ ও শুক্রবারে সাওম।
দ্বিতীয় ধরণের সাওম হলো খাদ্য থেকে বিরত থাকা, তবে মাছ ভক্ষণ করা যাবে। এ সাওমের মধ্যে ছোট সাওম বা জন্মদিনের সাওম, ইহা ৪৩ দিন দীর্ঘায়িত হয়, দূতগণের সাওম, মারিয়ামের সাওম ইত্যাদি। তবে তাদের ধর্মে কোনো সাওমই ফরয নয়; বরং কেউ ইচ্ছা করলে রাখতে পারে।
গ্রীক ও রোমানদের সাওম:
গ্রীস ও রোমানরা যুদ্ধের আগে সাওম রাখত যাতে ক্ষুধা ও কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। খ্রিস্টান পাদরীদের ও পারসিক অগ্নিপূজকদের এবং হিন্দু যোগী ইত্যাকার ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সাওমের বিধান ছিল।
জাহেলী যুগে সাবে‘ঈ সম্প্রদায়ের সাওম:
ইবন নাদিম তার ‘ফিহরাসাত’ কিতাবের নবম খণ্ডে উল্লেখ করেন, সাবে‘ঈ সম্প্রদায়ের লোকেরা (যারা গ্রহ-নক্ষত্র পূজা করে) ত্রিশ দিন সাওম পালন করত। আযার মাসের ৮দিন অতিবাহিত হলে এ সাওম শুরু হতো, কানুনে আউয়াল মাসে ৯টি, শাবাত মাসে ৭টি সাওম। এ সাত সাওম পালনের পরে তারা ঈদুল ফিতর উদযাপন করত। সাওম অবস্থায় তারা খাদ্য, পানীয় ও স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি থেকে বিরত থাকত।
হিন্দু ধর্মে সাওম বা উপবাস:
বেদের অনুসারী ভারতের হিন্দুদের মধ্যেও ব্রত অর্থাৎ উপবাস ছিল। প্রত্যেক হিন্দি মাসের ১১ তারিখে ব্রাহ্মণদের ওপর ‘একাদশীর’ উপবাস রয়েছে। এ হিসাবে তাদের উপবাস ২৪টি হয়। কোনো কোনো ব্রাহ্মণ কার্তিক মাসে প্রত্যেক সোমবার উপবাস করেন। কখনো হিন্দু যোগীরা ৪০ দিন পানাহার ত্যাগ করে চল্লিশে ব্রত পালন করেন। হিন্দু মেয়েরা তাদের স্বামীদের মঙ্গল কামনায় কার্তিক মাসের ১৮তম দিবসে ‘কারওয়া চাওত’ নামে উপবাস রাখে।
বৌদ্ধ ধর্মে সাওম বা উপবাস:
তারা তাদের চন্দ্রমাসের Upisata মাসে ১, ৯, ১৫ ও ২২ তারিখে ৪দিন উপবাস পালন করে। এছাড়া বৌদ্ধ গুরুরা দুপুরের খাবারের পর থেকে সব ধরণের খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকে। তারা এভাবে খাদ্য থেকে বিরত থেকে সংযম ও শারীরিক নিয়ন্ত্রণ করে।
মংগোলীরা প্রতি ১০দিন অন্তর ও যারাদাশতিরা প্রতি ৫দিন অন্তর সাওম পালন করত।
ইসলামে সাওম
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣﴾ [البقرة: ١٨٣]
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সাওম ফরয করা হয়েছে। যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৩]
ইসলামে সাওমের রয়েছে কতিপয় শর্ত ও বৈশিষ্ট্য। সুর্যোদয় থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত ইবাদাতের নিয়তে যাবতীয় পানাহার, স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার নাম সাওম। সাহরী খাওয়া ইসলামী শরী‘আতের সাওমের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ইসলামে রমযানের সাওম ফরয, অন্যান্য সাওম মুস্তাহাব, যেমন, ‘আরাফার সাওম, মহররমের সাওম, শবে বরাতের সাওম, প্রতি চন্দ্র মাসে ১৩, ১৪, ১৫ তারিখের সাওম ইত্যাদি।
তবে আমাদের সাওম ও অন্য ধর্মের বর্তমানের সাওমের মাঝে পার্থক্য আছে। এবং রসুল (সা) অন্যদের সাথে সাদৃশ্য করতে নিষেধ করেছেন,
আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু খেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«تَسَحَّرُوا فَإِنَّ فِي السَّحُورِ بَرَكَةً»
“তোমরা সাহরী খাও, কেননা সাহরীতে বরকত রয়েছে”।
‘আমর ইবনু ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«فَصْلُ مَا بَيْنَ صِيَامِنَا وَصِيَامِ أَهْلِ الْكِتَابِ، أَكْلَةُ السَّحَرِ»
“আমাদের ও আহলে কিতাবীদের সিয়ামের মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরী খাওয়া”।
সাহল ইবন সা‘দ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لاَ يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الفِطْرَ»
“লোকেরা যতদিন যাবৎ ওয়াক্ত হওয়া মাত্র ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে”।
আবু ‘আতিয়্যা রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«دَخَلْتُ أَنَا وَمَسْرُوقٌ، عَلَى عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، فَقَالَ لَهَا مَسْرُوقٌ: رَجُلَانِ مِنْ أَصْحَابِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كِلَاهُمَا لَا يَأْلُو عَنِ الْخَيْرِ، أَحَدُهُمَا يُعَجِّلُ الْمَغْرِبَ وَالْإِفْطَارَ، وَالْآخَرُ يُؤَخِّرُ الْمَغْرِبَ وَالْإِفْطَارَ، فَقَالَتْ: مَنْ يُعَجِّلُ الْمَغْرِبَ وَالْإِفْطَارَ؟ قَالَ: عَبْدُ اللهِ، فَقَالَتْ: هَكَذَا كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصْنَعُ»
“আমি ও মাসরুক রহ. ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার নিকট গেলাম। এরপর মাসরুক রহ. তাকে বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের মধ্যে দুই ব্যক্তি যারা কল্যাণজনক কাজে কোনো প্রকার অবহেলা প্রদর্শন করে না। তাঁদের একজন মাগরিব এবং ইফতারের মধ্যে ত্বরা করেন। আর অপর জন মাগরিব ও ইফতারে বিলম্ব করেন। তিনি (‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা) বললেন সে কোনো ব্যক্তি যে মাগরিব ও ইফতার ত্বরা করেন? তিনি বললেন, তিনি হলেন ‘আব্দুল্লাহ। ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করতেন।”
আর আমরা সতর্কতার জন্য সূর্য ডোবার ৩ মিনিট পরে ইফতার করি!! আশ্চর্য লাগে আমরা কোন পথে চলছি।
বিষয়: বিবিধ
১৭৫৮ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন