বিপদ কখনো বোলে আসে না!
লিখেছেন লিখেছেন ছালসাবিল ০৪ মে, ২০১৫, ১২:৩৯:০১ দুপুর
এক কৃষক আর তাঁর স্ত্রী ছোট একটি গ্রামে থাকতেন।
ছোট সেই বাড়িতে একটি ইঁদুর ছিল। একদিন ইঁদুরটি খাটের নিচে তাকিয়ে দেখল - কৃষক আর তাঁর স্ত্রী মিলে একটি ইঁদুর মারার কল ফাঁদ হিসেবে পেতেছে। ছোট ইঁদুর দ্রুত বাড়ির বাইরে বের হয়ে এলো। সামনে পড়ল কৃষকের মুরগী।
ইঁদুর হাঁপাতে হাঁপাতে খবর দিল মুরগীকে, "বাড়ির ভেতরে ফাঁদ হিসেবে একটি ইঁদুর মারার কল বসানো হয়েছে।"
মুরগী খুব একটা পাত্তা দিল না এই খবর, "আসলে এই খবরে আমার খুব একটা আগ্রহ নেই কারণ ফাঁদ আমার জন্য না। যাই হোক, তুমি একটু সাবধানে থেকো।"
বাধ্য হয়ে বেচারা ইঁদুর সামনে এগিয়ে গেল, খুঁজে পেল কৃষকের ছাগলটিকে। উত্তেজিত ইঁদুর সেই একই ভয়ের কথা জানালো, "বাড়ির ভেতরে ফাঁদ হিসেবে একটি ইঁদুর মারার কল বসানো হয়েছে। কিছু একটা করো দয়া করে।"
ছাগলও বিরক্ত হলো এমন ইস্যুতে। ছোট ইঁদুরকে বুঝানোর চেষ্টা করলো ছাগল, "দেখো, ওই ফাঁদ আসলে আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আমি কেন ইঁদুর মারার কল বসানো'র কারণে চিন্তিত হবো? আমার আসলে কিছুই করার নেই এই বিষয়ে।"
নিরুপায় ইঁদুর শেষ আশ্রয় হিসেবে ছুটে গেল কৃষকের গরুর কাছে। হন্তদন্ত ইঁদুর নিজের ভয়ের কথা জানালো গরুকে, ""বাড়ির ভেতরে ফাঁদ হিসেবে একটি ইঁদুর মারার কল বসানো হয়েছে। দয়া করে কিছু করো।"
যথারীতি ইঁদুরের অনুরোধ কানে তুলল না গরু। মুখে কৃত্রিম সহানুভূতি ফুটিয়ে তুলল ইঁদুরের জন্য, "হুমম। খুবই চিন্তার কথা তোমার জন্য। কিন্তু আমার জন্য তো এই খবরে ভয়ের কিছুই দেখছি না।"
কারো কাছ থেকে কোন সাহায্য না পেয়ে ব্যর্থ মনে ঘরে ফেরত এলো ইঁদুর। ইঁদুর মারার কল থেকে যতটা সম্ভব দুরে থাকতে হবে আমাকে, ভাবলো সে।
পরদিন গভীর রাতে হঠাত শব্দ করে উঠলো ইঁদুর মারার কলটি। জেগেই ছিল কৃষক। ইঁদুর মারা পড়েছে ভেবে অন্ধকারেই কলটি হাত দিয়ে টেনে আনতে চাইল কৃষক। বেচারা দেখতে পায় নি - ইঁদুরের বদলে আসলে বিষধর এক সাপের লেজ আটকা পড়েছিল সেই কলে। আহত সাপ সাথে সাথে ছোঁবল বসিয়ে দিল কৃষকের হাতে!
প্রতিবেশীরা ধরাধরি করে সে' রাতেই কৃষককে হাসপাতালে নিয়ে গেল। প্রাণে বেঁচে গেল কৃষক। দু'দিন পরে বাড়ি ফিরলেও খুব দুর্বল বোধ করতে লাগলো সে। 'স্বামীর ভালো-মন্দ কিছু খাওয়া উচিত' - এই ভেবে নিজেদের মুরগীটি জবাই করে স্বামীর জন্য স্যুপ বানালো কৃষকের স্ত্রী।
পরদিন কিছুটা সুস্থ বোধ করলো কৃষক। ডাক্তার বাবু এসে দেখে গেল তাঁকে। যাবার সময় কৃষকের স্ত্রীকে জানিয়ে গেল, ছাগলের মাংস সাপে কাটা রোগীর সেরে উঠতে অনেক সাহায্য করে।
নিমেষেই জবাই হয়ে গেল ছাগলটি।
এদিকে আত্মীয়-স্বজনরা খবর পেয়ে সবাই ছুটে এলো কৃষককে দেখতে। পুরো বাড়ি ভর্তি মেহমান। পরবর্তী শুক্রবারে কৃষকের সেরে ওঠা উপলক্ষে আত্মীয়স্বজনদের উপস্থিতিতেই বিশাল খানাপিনার আয়োজন হলো।
এবারে খাঁড়া পড়ল গরুর গলায়।
আর এইদিকে - চৌকাঠের উপরে বসে এই কয়দিনের যাবতীয় ঘটনা চুপচাপ দেখে গেল ছোট সেই ইঁদুর!
পাদটিকাঃ
আমার আজকের সমস্যাই হয়তো আগামীকাল আপনার সমস্যা হয়ে উঠতে পারে। কারো সমস্যাকেই তুচ্ছ মনে করার কারণ নেই।ঘরের চার কোনার যে কোন এক কোনা ধ্বসে পড়লেই পুরো ঘর ভেঙে পড়া সময়ের ব্যাপার মাত্র!
বিষয়: বিবিধ
১৮১৪ বার পঠিত, ৪৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সাবলীল বর্ণনায় উপস্হিত গল্পে চমৎকার শিক্ষণীয় রয়েছে!!
কত জন আমরা শিক্ষা নেই???
মনে হয় আমার ঈমান মজবত না ।
ধন্যবাদ ছোট ভাইয়া সুন্দর গল্প শেয়ারের জন্য ।
পাত্র (বর) পেলে আমাদেরকে দাওয়াত দিয়ে জানাতে ভুলবেন না
তবে ইন্দুর মারা জরুরি। না হলে অনেক ক্ষতির কারন হবে!!
তবে ছালসাবিল নাম নিয়ে দুআ করবেন না এটা তো নিক নেম তবে নাম বলা যাবে না
গল্পটা মনে হচ্ছে বি এন পি 'র রাজনীতির সাথে মিলে যাচ্ছে।
ধন্যবাদ ভাইয়া
জাজাকাল্লাহু খায়রান। বাংলায় আমি খুব বেশি ভালো না। বাংলা ২য় পত্রে আমি কোন রখম পাশ করেছি হেডমাস্টার স্যারের মাইর আজও ভুুলিনি
“বেদব্যাসের” এর মানে বুঝি নি ভাইয়া
জাযাকাল্লাহ খায়রান
বাহ! দুষ্টোর শিরোমনি ছালসাবিল তো চমৎকার শিক্ষা সম্বলিত গল্প পোস্ট করলো! মাশা আল্লাহ!
শুকরিয়া শেয়ার করার জন্য!
আপপপপি, অনেনননক ব্লেসড লাগছে নিজকেে
এবার মনে হয় ইদুরের পালা!!
পছন্দ হয়েছে আপপপি আপনার কি এরকম বিড়াল সত্যি আছে আমাকে একটি দিবেন
ভালইতো গল্পে গল্পে শিক্ষা .........
আমরা তো নিজেরা বিপদে পরেও পাত্তা দিচ্ছি না অন্যের আর ক দোষ !!!!!!!!!!!!
গুনগুন শেষ, এখন গান গাইছে.......
মন্তব্য করতে লগইন করুন