আমাদের ক্রসফায়ার হিরো: মৃত ওসি সালাহউদ্দিন।
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাকছুদুর রহমান ০৩ জুলাই, ২০১৬, ১১:৩০:৫৮ সকাল
ঘটনাটি ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর ভোরবেলা বাসার সামনে থেকে মিরপুর থানার ওসি
সালাহউদ্দিন তার সন্ত্রাসীবাহিনী নিয়ে আমাকে এবং আমার
এক ছোট ভাই (যার নাম Arif) কে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে
গেল। সত্যি কথা বলতে আমার ভিতরে একটুও ভয় কাজ
করছিল না, কারণ মাঝেমধ্যেই পুলিশের এররকম হয়রানির শিকার
হতাম।
থানায় নিয়ে নিয়মমাফিক প্রথমে হাজতে ঢুকাল আমাদের।
কিছুক্ষণ বাদে আমার সেই হ্যাংলা-পাতলা ভাইটাকে
সালাহউদ্দিনের রুমে নিয়ে যাওয়া জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে।
কিন্তু এ কি !!! এটা কি ধরণের জিজ্ঞাসাবাদ??? শুধু আর্তচিৎকার
আর আর্তচিৎকার, তখন ও বুঝিনি কি হচ্ছে ওসি সাহেবের
রুমে।
২০ মিনিট পর আমাকেও ৪-৫ জন পুলিশ এসে হাতে হাতকড়া
পড়িয়ে এমন সতর্কভাবে ওসি সাহেবের রুম পর্যন্ত নিল
যেন আমি একজন আন্তর্জাতিক মাফিয়া। এরপর আমাকে ওসি
সালাহউদ্দিনের সামনে দাড় করাল। কোন কথাবার্তা জিজ্ঞাসা না
করেই চিৎকার করে গৌতম নামের এক পুলিশকে ডেকে
বলল, "গৌতম, শুয়োরের বাচ্চার হাত গুলা খুইল্লা পিছমোড়া
কইরা বান"। কথামত আমার হাতদু'টো পিছমোড়া করে বাঁধা হল,
আরেক জন এসে পা বাঁধল, এরপর আরেকজন এসে গামছা
দিয়ে আমার চোখদু'টাও বাঁধল। তারপর সম্মানিত ওসি সাহেব
আমাকে পিছন থেকে প্রচন্ড জোরে ধাক্কা মেরে
ফেলে দিল। এরপর.......
২ ইঞ্চি মোটা একটা লাঠি দিয়ে প্রচন্ড জোরে এমন
জোরে পিটাতে শুরু করল যেন আমি একটা বল আর তিনি
শহীদ আফ্রিদী, প্রত্যেকটা বল তাকে ছক্কা মারতেই
হবে। ছক্কা হাকাচ্ছে আর একটা কথাই বলছে,"বেশী না,
২০ টা পোলারে ধরাই দে"। প্রত্যোত্তরে আমি বলেই
যাচ্ছি, "স্যার আমি সত্যিই কাওকে চিনি না"। আর সেইকি গালি-
গালাজ !!! কোন মানুষ সত্যিই যদি মায়ের ঔরশে জন্মে
থাকে তাহলে এভাবে গালি-গালাজ করতে পারে না।
এরপর ২-৩টা পুলিশকে বলল, "মাদারচো***র হাতের সবডি
আঙ্গুল ভাঙ"। যেই আঙ্গুল দিয়ে আমি লিখি,পরীক্ষা দিই
সেই আঙ্গুল নাকি ভেঙে ফেলবে!!! এত কিছুর পর ও
বাবার মূখ টা চোখের সামনে ভেসে আসল। তাহলে
আমার বাবার স্বপ্ন কি কখনোই বাস্তবে রুপ নেবে না, তার
ছেলে কি কখনোই আর ইন্জিনিয়ার হতে পারবে না !!! নাহ,
আমি এটা হতে দিব না। যাই হোক ওসির নির্দেশমত ওরা
অনেক চেষ্টা করল আমার আঙ্গুল ভাঙতে, কিন্তু পারল না।
গল্পটা যদি এখানেই শেষ হতো, তাহলে হয়তোবা ওসি
সালাহউদ্দিন একটা আতংকের নাম হতো না। এরপর যোগ হল
হল নির্যাতনের আরেক মাত্রা।
কোথা থেকে যেন ভোল্টমিটারের মত একটা যন্ত্র
নিয়ে আসল যার দুই প্রান্ত দিয়ে দু'টি তার বের হয়েছে,
আর তার দু'টির মাথায় দু'টো ক্লিপের মত কি যেন। মনটা এক
অজানা আতংকে কেপে উঠল। ক্লিপ দু'টো আমার কানে
পড়িয়ে দিয়েই মিটারের কাঁটাটি ঘুরাল। আমি এক বিকট চিৎকার
দিলাম, এভাবে ৫-৬ সেকেন্ড রেখে বন্ধ করে দিল।
আবার কাঁটা ঘুরাল, এবার মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে গেল,
তারপর আর কিছু জানি না।
পরদিন কতগুলো বোমা, লাঠিসোটা আরো হাবিজাবি কি কি
দেখিয়ে মামলা দিয়ে দিল। তারপর তো ৬ মাস জেল
খেটে বের হলাম।
.
এভাবে তিনি গুলি করে কত মায়ের ছেলের পাঁ পঙ্গু
করেছে, কত ভাইয়ের হাত হাতুড়ী দিয়ে পিটিয়ে অচল
করেছে, কত যুবকের যৌবনের যৌনতাকে চিরজীবনের
জন্য নষ্ট করে দিয়েছে তা হয়তো বা শুধু আল্লাহই গুনে
রেখেছেন।
.
যাই হোক আজকে খবরের কাগজে, নিউজ চ্যানেলগুলায়
দেখলাম সেই দুর্ধর্ষ সালাহউদ্দিনের বিভিন্ন কুকীর্তির কথা
উঠে এসেছে। জানি তবুও তার কিছুই হবে না, হয়তোবা
আরো প্রমোশন হবে। তাই কারো কাছে আজ বিচার চাই
না।
.
আর হ্যা, শোন সালাহউদ্দীন, তুমি হয়তোবা প্রতিদিন নানা
অপকর্ম করে পার পেয়ে পেয়ে রাতের আঁধারে
নারীদের নিয়ে খুশীতে মদ গিলে মাস্তি করছ আর
চিয়ার্স চিয়ার্স করে লাফাচ্ছ।
কিন্তু একদিন যখন আমার মার মত কোন মা সবচেয়ে বড়
বিচারকের কাছে চিৎকার করে বলবে, "আমার
ছেলেতো ভার্সিটিতে যাচ্ছিল, কিন্তু এই পিশাচটা আমার
ছেলেকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে পঙ্গু করে
চিরজীবনের জন্য ভার্সিটিতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল"
তখন সালা্হউদ্দীনকে কোন ক্ষমতাধরটা বাঁচাবে???
কোন মা হয়তো এভাবে বিচার দিবে, "আমি দুনিয়াতে
কারো কাছে কিছু বলিনি, শুধু প্রতিটি নামাজের পর তোমার
কাছে কেঁদেছিলাম, আমি আজকে এর বিচার চাই" তখন
আল্লাহ কিভাবে সমস্ত বিচারকের বিচারক হয়ে তোমাকে
ক্ষমা করবে, বলতো সালাহউদ্দীন???
ভোরবেলা বাসার সামনে থেকে মিরপুর থানার ওসি
সালাহউদ্দিন তার সন্ত্রাসীবাহিনী নিয়ে আমাকে এবং আমার
এক ছোট ভাই (যার নাম Arif) কে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে
গেল। সত্যি কথা বলতে আমার ভিতরে একটুও ভয় কাজ
করছিল না, কারণ মাঝেমধ্যেই পুলিশের এররকম হয়রানির শিকার
হতাম।
থানায় নিয়ে নিয়মমাফিক প্রথমে হাজতে ঢুকাল আমাদের।
কিছুক্ষণ বাদে আমার সেই হ্যাংলা-পাতলা ভাইটাকে
সালাহউদ্দিনের রুমে নিয়ে যাওয়া জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে।
কিন্তু এ কি !!! এটা কি ধরণের জিজ্ঞাসাবাদ??? শুধু আর্তচিৎকার
আর আর্তচিৎকার, তখন ও বুঝিনি কি হচ্ছে ওসি সাহেবের
রুমে।
২০ মিনিট পর আমাকেও ৪-৫ জন পুলিশ এসে হাতে হাতকড়া
পড়িয়ে এমন সতর্কভাবে ওসি সাহেবের রুম পর্যন্ত নিল
যেন আমি একজন আন্তর্জাতিক মাফিয়া। এরপর আমাকে ওসি
সালাহউদ্দিনের সামনে দাড় করাল। কোন কথাবার্তা জিজ্ঞাসা না
করেই চিৎকার করে গৌতম নামের এক পুলিশকে ডেকে
বলল, "গৌতম, শুয়োরের বাচ্চার হাত গুলা খুইল্লা পিছমোড়া
কইরা বান"। কথামত আমার হাতদু'টো পিছমোড়া করে বাঁধা হল,
আরেক জন এসে পা বাঁধল, এরপর আরেকজন এসে গামছা
দিয়ে আমার চোখদু'টাও বাঁধল। তারপর সম্মানিত ওসি সাহেব
আমাকে পিছন থেকে প্রচন্ড জোরে ধাক্কা মেরে
ফেলে দিল। এরপর.......
২ ইঞ্চি মোটা একটা লাঠি দিয়ে প্রচন্ড জোরে এমন
জোরে পিটাতে শুরু করল যেন আমি একটা বল আর তিনি
শহীদ আফ্রিদী, প্রত্যেকটা বল তাকে ছক্কা মারতেই
হবে। ছক্কা হাকাচ্ছে আর একটা কথাই বলছে,"বেশী না,
২০ টা পোলারে ধরাই দে"। প্রত্যোত্তরে আমি বলেই
যাচ্ছি, "স্যার আমি সত্যিই কাওকে চিনি না"। আর সেইকি গালি-
গালাজ !!! কোন মানুষ সত্যিই যদি মায়ের ঔরশে জন্মে
থাকে তাহলে এভাবে গালি-গালাজ করতে পারে না।
এরপর ২-৩টা পুলিশকে বলল, "মাদারচো***র হাতের সবডি
আঙ্গুল ভাঙ"। যেই আঙ্গুল দিয়ে আমি লিখি,পরীক্ষা দিই
সেই আঙ্গুল নাকি ভেঙে ফেলবে!!! এত কিছুর পর ও
বাবার মূখ টা চোখের সামনে ভেসে আসল। তাহলে
আমার বাবার স্বপ্ন কি কখনোই বাস্তবে রুপ নেবে না, তার
ছেলে কি কখনোই আর ইন্জিনিয়ার হতে পারবে না !!! নাহ,
আমি এটা হতে দিব না। যাই হোক ওসির নির্দেশমত ওরা
অনেক চেষ্টা করল আমার আঙ্গুল ভাঙতে, কিন্তু পারল না।
গল্পটা যদি এখানেই শেষ হতো, তাহলে হয়তোবা ওসি
সালাহউদ্দিন একটা আতংকের নাম হতো না। এরপর যোগ হল
হল নির্যাতনের আরেক মাত্রা।
কোথা থেকে যেন ভোল্টমিটারের মত একটা যন্ত্র
নিয়ে আসল যার দুই প্রান্ত দিয়ে দু'টি তার বের হয়েছে,
আর তার দু'টির মাথায় দু'টো ক্লিপের মত কি যেন। মনটা এক
অজানা আতংকে কেপে উঠল। ক্লিপ দু'টো আমার কানে
পড়িয়ে দিয়েই মিটারের কাঁটাটি ঘুরাল। আমি এক বিকট চিৎকার
দিলাম, এভাবে ৫-৬ সেকেন্ড রেখে বন্ধ করে দিল।
আবার কাঁটা ঘুরাল, এবার মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে গেল,
তারপর আর কিছু জানি না।
পরদিন কতগুলো বোমা, লাঠিসোটা আরো হাবিজাবি কি কি
দেখিয়ে মামলা দিয়ে দিল। তারপর তো ৬ মাস জেল
খেটে বের হলাম।
.
এভাবে তিনি গুলি করে কত মায়ের ছেলের পাঁ পঙ্গু
করেছে, কত ভাইয়ের হাত হাতুড়ী দিয়ে পিটিয়ে অচল
করেছে, কত যুবকের যৌবনের যৌনতাকে চিরজীবনের
জন্য নষ্ট করে দিয়েছে তা হয়তো বা শুধু আল্লাহই গুনে
রেখেছেন।
.
যাই হোক আজকে খবরের কাগজে, নিউজ চ্যানেলগুলায়
দেখলাম সেই দুর্ধর্ষ সালাহউদ্দিনের বিভিন্ন কুকীর্তির কথা
উঠে এসেছে। জানি তবুও তার কিছুই হবে না, হয়তোবা
আরো প্রমোশন হবে। তাই কারো কাছে আজ বিচার চাই
না।
.
আর হ্যা, শোন সালাহউদ্দীন, তুমি হয়তোবা প্রতিদিন নানা
অপকর্ম করে পার পেয়ে পেয়ে রাতের আঁধারে
নারীদের নিয়ে খুশীতে মদ গিলে মাস্তি করছ আর
চিয়ার্স চিয়ার্স করে লাফাচ্ছ।
কিন্তু একদিন যখন আমার মার মত কোন মা সবচেয়ে বড়
বিচারকের কাছে চিৎকার করে বলবে, "আমার
ছেলেতো ভার্সিটিতে যাচ্ছিল, কিন্তু এই পিশাচটা আমার
ছেলেকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে পঙ্গু করে
চিরজীবনের জন্য ভার্সিটিতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল"
তখন সালা্হউদ্দীনকে কোন ক্ষমতাধরটা বাঁচাবে???
কোন মা হয়তো এভাবে বিচার দিবে, "আমি দুনিয়াতে
কারো কাছে কিছু বলিনি, শুধু প্রতিটি নামাজের পর তোমার
কাছে কেঁদেছিলাম, আমি আজকে এর বিচার চাই" তখন
আল্লাহ কিভাবে সমস্ত বিচারকের বিচারক হয়ে তোমাকে
ক্ষমা করবে, বলতো সালাহউদ্দীন???
বিষয়: বিবিধ
১৩৯৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আহ! জালিম সকল পুলিশ সদস্যরা যদি একটু মৃত্যুর কথা ভাবতো!
মন্তব্য করতে লগইন করুন