বিশ্ব হিজাব দিবস আজ
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাকছুদুর রহমান ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০২:০৮:৪১ দুপুর
আজ বিশ্ব হিজাব দিবস।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালিত
হচ্ছে। ২০১২ সাল থেকে ১ ফেব্র“য়ারি ‘বিশ্ব হিজাব
দিবস’ হিসেবে পালনের পরিকল্পনা করেন
নিউইয়র্কের বাসিন্দা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাজমা খান।
তার নিজস্ব চিন্তা ও পরিকল্পনার ফল এ দিবস।
নাজমা খান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সর্বপ্রথম
হিজাব দিবস পালনের পক্ষে প্রচার চালান। এর
ধারাবাহিকতায় মুসলিম দেশগুলোতে দিবসটি পালনের
প্রচলন শুরু হয়। এ উপলক্ষে নিউইয়র্কের মূল
অনুষ্ঠান হবে সিটি হলে।
বিগত তিন বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে পালিত হচ্ছে
দিবসটি। ধর্মের প্রতি মানুষের পারস্পরিক
সহনশীলতা, শ্রদ্ধা ও হিজবা বা বোরকা পরিধান বৃদ্ধির
লক্ষে এ পরিকল্পনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।
হিজাবের ব্যাপারে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করে
শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠাই এর উদ্দেশ্য।
‘বেটার অ্যাওয়্যারনেস, গ্রেটার আন্ডার্স্ট্যান্ডিং,
পিসফুল ওয়ার্ল্ড’ (উন্নত সচেতনতা, ভালো
বোঝাপড়া ও শান্তিময় বিশ্ব) সেøাগানে উজ্জীবিত
হয়ে আজ বিশ্বের লাখ লাখ মুসলিম-অমুসলিম নারী
ইসলামের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হিজাব পরে রাস্তায়
মার্চ করবেন। পৃথিবীতে ইসলামকে
নেতিবাচকভাবে তুলে ধরার বিপক্ষে জনমত তৈরি এবং
মুসলমানদের ইসলামি জীবনাচারের প্রতি উদ্ধুদ্ধ
করতে এ দিবস বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
মুসলিম নারীদের হিজাব তথা পর্দা ফরজ। যা
কোরআন-হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণিত। হিজাব
শব্দটি আরবি। বাংলা হলো পর্দা। আভিধানিক অর্থ
আবরণ, আচ্ছাদন, অন্তরাল বা ঢেকে রাখা। ইসলামি
পরিভাষায় প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ প্রত্যেকের
জন্য নির্দিষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আচ্ছাদিত করা পর্দা বা
হিজাবের অন্তর্ভুক্ত। সাধারণ অর্থে পর্দা বলতে
বেগানা পুরুষ বা বেগানা নারী থেকে নিজের
মনমানসিকতা, চোখ, কান, জবানকে হেফাজত করে
যৌন জীবনকে পবিত্র রাখা বোঝায়।
ইসলামি অনুশাসনে প্রত্যেক নারী-পুরুষ সবার জন্য
পর্দা করা ফরজ। কেননা পর্দা অশ্লীলতা ও
বেহায়াপনার পথ বন্ধ করে সমাজকে কলুষমুক্ত
রাখে। পর্দা ব্যভিচারের পথ বন্ধ করে দেয়।
পক্ষান্তরে সমাজে পর্দা প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে
ব্যভিচার পথ খুলে যায়। অথচ আল্লাহতায়ালা বলেন,
তোমরা ব্যভিচারের ধারে-কাছেও যেও না।
কোরআনের অন্যত্র মহান আল্লাহতায়ালা আরও
বলেন, হে নবী! মোমিন পুরুষদের বলে দিন,
তারা যেন নিজেদের চোখকে বাঁচিয়ে চলে এবং
নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটা
তাদের জন্য উত্তম, যা তারা করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ
সে বিষয়ে পুরোপুরি অবহিত। -সূরা আন নূর : ৩০
কোরআনের অন্য আয়াতে আরও উল্লেখ করা
হয়েছে, আর হে নবী! মোমিন
স্ত্রীলোকদের বলুন, তারা যেন নিজেদের
চোখকে নিম্নগামী রাখে, নিজেদের
লজ্জাস্থানের হেফাজত করে ও নিজেদের
সাজসজ্জা না দেখায়; কেবল সেসব জিনিস ছাড়া যা
আপনা থেকে প্রকাশিত হয়ে পড়ে এবং
নিজেদের বুকের ওপর ওড়নার আঁচল ফেলে
রাখে। -সূরা আন নূর : ৩১
সূরা আরাফের ২৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা
বলেন, হে আদম সন্তান! আমি তোমাদের জন্য
পোশাক নাজিল করেছি যেন তোমাদের দেহের
লজ্জাস্থান ঢাকতে পার। এটা তোমাদের জন্য
দেহের আচ্ছাদন ও শোভাবর্ধনের উপায়,
সর্বোত্তম পোশাক হলো তাকওয়ার পোশাক।
পর্দায় থাকার সুবিধা সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন,
‘হে নবী! আপনার স্ত্রীরা, কন্যা এবং মোমিন
মহিলাদের বলে দিন, তারা যেন তাদের চাদরের
কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে নেয়, এতে
তাদের চিনতে পারা যায়। ফলে তাদের সহজে
উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম
দয়ালু’। -সূরা : আল আহজাব : ৫৯
চলমান পরিস্থিতিতে ধর্মীয় সম্প্রীতির ব্যাপারটিকে
আরও বেগবান করার অভিপ্রায়ে যারা মুসলমান নন,
তাদেরকেও এদিন হিজাব পরার আহ্বান জানানো
হয়েছে। দিবসটির প্রবক্তা নাজমা খান মনে করেন,
হিজাব নারীর মর্যাদার প্রতীক। তাই এ বিষয়ে
সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি কাজ করেন বলে
জানান।
বিশ্ব হিজাব দিবসে হিজাব প্রসঙ্গে মার্কিন
প্রেসিডেন্ট ওবামার উপদেষ্টা ড. ডালিয়া মুজাহিদের
বক্তব্যটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামি হিজাব ও শালীন
পোশাক পরিধান করার কারণে সাংবাদিকরা তাকে গভীর
বিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করেছিলো, আপনার বেশ-ভূষা ও
পোশাক পরিচ্ছদের মধ্যে আপনার উচ্চ শিক্ষা ও
জ্ঞানের গভীরতা প্রকাশ পাচ্ছে না। তাদের ধারণা
ছিলো, হিজাব অনগ্রসরতা, মূর্খতা ও সেকেলে
ধ্যান-ধারণার প্রতীক। উত্তরে তিনি বললেন, আদিম
যুগে মানুষ ছিল প্রায় নগ্ন। শিক্ষা ও জ্ঞান চর্চার
উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে পোশাক পরিধান করে
সভ্যতার উচ্চ শিখরে আরোহণ করতে থাকে। আমি
যে পোশাক পরিধান করেছি, তা শিক্ষা ও
চিন্তাশীলতায় উন্নতি ও সভ্যতার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ।
নগ্নতা ও উলঙ্গপনাই যদি উন্নত শিক্ষা ও সভ্যতার চিহ্ন
হতো, তাহলে বনের পশুরাই হতো পৃথিবীর
সবচেয়ে সুসভ্য ও সুশিক্ষিত।
সূত্রঃ শীর্ষ নিউজ
বিষয়: বিবিধ
১০৯৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সারা বছর বিকিনি পড়ে একদিনই হিজাব করে শরিয়তের টাচে থাকা আর কি ।
সারা সপ্তাহ নামাজের খবর নেই , শুধু শুক্রবারে জুম্মার নামাজ মান্জা মেরে পড়তে এসে নিজেকে খুব নামাজি হিসেবে জাহির করার মত।
মন্তব্য করতে লগইন করুন