৭.৫% ভ্যাট ও কিছু সরল কথা! =========================
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাকছুদুর রহমান ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১২:০৬:৫৮ দুপুর
প্রথমেই ৭.৫% ভ্যাট নিয়ে কিছু উল্লেখযোগ্য
উক্তিঃ
প্রধান মন্ত্রী: বিশ্বের কোথাও এতো কম
খরচে লেখাপড়া হয় না।
অর্থমন্ত্রী: ভ্যাট পত্যাহারের কোন সম্ভাবনা
নেই।--- যারা মাসে ৩০০০০ টাকা দিতে পারে তারা ৭.৫% ভ্যাটও দিতে পারবে।
শিক্ষামন্ত্রী: ভ্যাট যোগ করেছে
অর্থমন্ত্রালয়, আমাদের করার কিছুই নেই।
১
আমার জানার দরকার নেই বিশ্বের কোথায় কে কত
টাকায় পড়ছে, কারণ আমি এখনো দেশের শিক্ষাই
শেষ করতে পারিনি। তবে আমি এতোটুকু জানি
বিশ্বের কোথাও কোন একটিও শিক্ষার্থী ভ্যাট দিয়ে লেখাপড়া করে না।
শিক্ষাতো আমাদের মৌলিক অধিকার। দেশের প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষায় যখন লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী এ+ পেয়ে পাশ করে তখন তারা একৈ স্বপ্ন দেখে,
তাদের পরিবারও একটু স্বপ্নের বুনে। কিন্তু
ভর্তী পরীক্ষায় পরাজিতরা কী করবে, তাদের
স্বপ্নগুলো বাচিয়ে রাখতে তাদের পিতামাতা
দেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে
পাঠিয়ে দেয় নিজের সবটুকু উজার করে। তাদের সন্তানেরা পড়বে, কিছু শিখে একটি ভালো মানের চাকরি করে সংসারের হাল ধরবে এই ভেবে।
আমার পরিবারে মা অসুস্থ, আমরা সবাই স্বন্প দেখি আমি কিছু করব, নিজের হাল ধরব। তবেই না বাবা
মায়ের অপারেশনের জন্য তাকে ভারতে নিয়েযাবে। এমন অনেক স্বপ্নই থেমে যাবে,
ভেঙ্গে যাবে কিছু একান্ত চাওয়া।
২
মাল সাহেবকে আমার বরাবরই মাতাল মনে হয়, তিনি
নিজেকে যে কী ভাবেন তাই বুঝি না। আমাদের
রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় গেলেই দেশটাকে
নিজের সম্পত্তি ভাবে, কেউ মনে রাখে তাদের আমরা মাত্র বেতনভুক্ত কর্মচারী রূপে কিছুদিনের
জন্য নিয়োগ দিয়েছি।
আমি মাসে কতো টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেই সেই
হিসাব মাল সাহেবের না করলেও চলবে। দেশের
সবাই জানে টাকাই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার
প্রধান চালিকা শক্তি। একটি ছাত্রের যেমন ঢাকা
মেডিকেল, বুয়েট বা ঢাবি কে স্বপ্নে দেখে
তেমনি বেসরকারিতে ভর্তির ব্যাপারে কেন ব্রাক বা আহসানউল্লাহ, নর্থসাউথ কে বেছে নেয়না তা কি
মাল সাহেব জানেন?
কারণ আমার বাবার সেই পরিমান টাকা দেবার ক্ষমতা
নেই তাই চাইলেও স্বপ্ন দেখিনা এমন হাইক্লাসের।
তার চেয়ে কম টাকায় যেখানে পেরেছি ভর্তি
হয়েছি, শেখার চেষ্টা করছি যদি কিছু হয়ে যায়
আরকি।
৩
নাহিদ স্যার আপনাকে নিয়ে একদিন গর্ব করতান কারণ
আপনার হাত ধরেই শিক্ষা ব্যবস্থায় কিছু কার্যকরী
পরিবর্তন আসবে এমনই ভেবেছিলাম। কিন্তু আপনি
কী করলেন?
যখন প্রশ্নপত্র ফাস হলো তখন তা অস্বীকার
করলেন, তারপরও যখন আমরা কথা বলেছি ঠিক তখনই
প্রমাণ না দিতে পারলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন
বলে চুপ করিয়ে দিলেন, আর আপনাদের
বিবেকতো দড়জা-জানালাহীন সেখানে কিছুই গিয়ে
আঘাত দেবার কথা নয়।
আপনি শিক্ষামন্ত্রী, আপনার খাতের একটি অংশে
কেউ ভ্যাট দিয়ে গেল। আপনার সন্তানদের উপর
কেউ ভ্যাট চাপালো আর আপনি বললেন সেটা
অর্থমন্ত্রলয়ের বিষয়। তবে কী আপনি মালের
বা.... ছেড়ার কাজটাই করলেন?
গতকাল কিছু ছেলে জয় বাংলা বলে আন্দোলনরত
ছাত্রদের উপর হামলা করেছে। তারা হামলার পর
পুলিশের সাথেই দাড়িয়ে ছিল, কিন্তু বরাবরের
মতো কেউ গ্রেফতার হয়নি। বরং পুলিশ বলেছে
ছাত্ররা নিজেরাই মারামারি করেছে, তাই তারা চূপ ছিল।
মনে রাখবেন, চুপ করে আছি বলে ভাববেন না
আমরা কিছুই পারি না। এই ছাত্রগুলোর মাঝে বহু
ছেলে আছে যারা এখন বাসায় গিয়ে বাবার কৃষিকাজে
সাহায্য করে, এই হাত আর যাই হোক নরম নয়।
অস্ত্র নয় আমাদের এই হাতই গালে পড়লে ঢাকায়
দাতের দাক্তারের অভাব দেখা দিবে।
আর এই যে পুলিশ মহাশয়, কেন এমন করছেন?
আর কতোদিন এভাবে দাসত্ব করবেন, হয়
আপনাদের পোষাককে সন্মান করুন না হয় খুলে
ফেলে বাসায় যান। কী ভেবেছেন ভয় পেয়ে
এমন শান্ত, না। আমাদের মাঝেই অনেক ছাত্র
আছে যারা আপনাদেরই পরিবার থেকে এসেছে,
হয়তো আপনারই সন্তান কোন জায়গায় এমন
আন্দোলনে যুক্ত। আমরা কখনো চাইব না আপনারা
অস্ত্র চালান, কারণ তাতে হয়তো ১০টি জীবন
যেতে পারে কিন্তু মনে রাখবেন আমাদের
কেউ মারা গেলে আপনাদের কাউকে বাসায়
যেতে দেব না। ভুলে যাব আপনাদের সাথে আমারবাবা কাজ করে।
সরল কথা গুলো যে যতটুকু মনে রাখবেন,তার জন্য ততই মঙ্গল!
বিঃদ্রঃ আমি এখনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয়,তবুও বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে বড় ভাইদের পক্ষে বললাম!
বিষয়: বিবিধ
১৩১৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ..
মন্তব্য করতে লগইন করুন