সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস রমজান এবং বাস্তবতা!!!

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাকছুদুর রহমান ২৫ জুন, ২০১৫, ০১:১০:২৪ দুপুর

প্রতি বছর পৃথিবীর সব দেশে সংযম ও আত্মশুদ্ধির মহান বারতা নিয়ে আমাদের মাঝে আসে পবিত্র মাহে রমজান। সারা বছরের পাপ ও আত্মশুদ্ধির জন্য মহান আল্লাহর কাছে মাগফেরত কামনা করে ধর্মপ্রাণ মুসলমান। বিগত দিনের ভুলত্রুটি ও অন্যায়ের জন্য মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। কিন্তু আমাদের মাঝে আসা এই পবিত্র রমজান যেন হাজির হয় একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। রমজান আসলেই যেন এদেশের বাজারে আগুন লাগে। অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে সে আগুন আয়ত্ত্বে রাখার চেষ্টা করা হয়। মজুদদার-মুনাফাখোর-তোলাবাজদেও গ্রেফতার কর, দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া রুখো’ এই সকল শ্লোগান ধ্বনিত হয় সর্বত্র। প্রতিবছর রমজানের আগে এই মহড়ার পূনরাবৃত্তি ঘটলেও কোন এক অদৃশ্য শক্তির কাছে পরাজিত হয় সব চেষ্টা ও কলা কৌশল। মজুদার, মুনাফাখোর-তোলাবাজরা অঘোষিত আর পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে থাকেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ফলে সাধারণ জনগন প্রতি রমজানেই পুড়তে থাকে এক অদৃশ্য অনলে। মহান আল্লাহর দরবারে তার এবাদত বন্দেগী দ্বারা নিজের পাপ মোচন করতে পারলেও বাজারের আগুনে সে ঝলসাতে থাকে প্রতিনিয়ত। বিশ্বের আর সব মুসলিম দেশেই শুনেছি পবিত্র রমজান এলে জিনিষপত্রের মূল্য কমে, সকল জনগণের মাঝেই সংযম বাড়ে। এর উল্টো চিত্র দেখা যায় আমাদের দেশে। পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে মূল্যবৃদ্ধির জুয়া খেলা কেবলমাত্র আমাদের দেশেই সম্ভব। রমজান এলে আমাদের দেশে মানুষের মাঝে অসংযমতা বৃদ্ধি পায় আর সেই সুযোগে বৃদ্ধিপায় জিনিস পত্রের মূল্য। এর থেকে যেন কোন পরিত্রান নাই। অপর দিকে জনগণ এই মাসে বেহিসেবীর মত খরচ ও অপচয় করে ইফতারীতে। তারা ভুলে যান রমজান সংযমের মাস। সারাদিন অভুক্ত থেকে ইফতারী ও সেহরীতে বাহুল্য অতি আয়োজন ও অপচয় করার নাম সংযম বা রোজা নয়। প্রতিক্ষেত্রে সংযম প্রদর্শন করাই রমজানের আদর্শ।

উপসংহারে বলা যায় ত্বাকওয়া অর্জনের এ মুবারক মাসে মুমিনদের উপর অর্পিত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, সৃষ্টি হয়েছে পূণ্য অর্জনের বিশাল সুযোগ এবং প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে মহান চরিত্র অর্জনের সুন্দর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। মুমিনদের উপর এ মাসের অর্পিত দায়িত্ব পালন এবং সুবর্ণ সুযোগের সদ্ব্যবহার করে আজ সারা বিশ্বের মুসলিমদের উচিত চারিত্রিক অধ:পতন থেকে নিজেদের রক্ষা করা, নেতিয়ে পড়া চেতনাকে জাগ্রত করা এবং সকল প্রকার অনাহুত শক্তির বলয় থেকে মুক্ত হয়ে হক প্রতিষ্ঠার প্রতিজ্ঞাকে সুদৃঢ় করা, যাতে তারা রিসালাতের পবিত্র দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে এবং কুরআন নাযিলের এ মাসে কুরআনের মর্ম অনুধাবন করতে পারে, তা থেকে হিদায়াত লাভ করতে পারে এবং জীবেনের সর্বক্ষেত্রে একেই অনুসরণের একমাত্র মত ও পথ রূপে গ্রহণ করতে পারে। আসুন আমরা যার যার অবস্থান থেকে প্রকৃত সংযম প্রদর্শন করে প্রকৃত আত্মশুদ্ধি লাভে ব্রত হই। মহান আল্লাহ আমাদেরকে পবিত্র রামাদান মাসের সকল ফজিলত ও বরকত দান করুন এবং তার সকল আদেশ নির্দেশ মেনে তাকওয়া অর্জন নসিব করুন। আমিন-

বিষয়: বিবিধ

১৪০৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

327454
২৫ জুন ২০১৫ দুপুর ০২:০৪
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
২৫ জুন ২০১৫ বিকাল ০৪:০৩
269741
মোঃ মাকছুদুর রহমান লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ!!!
327501
২৫ জুন ২০১৫ রাত ১১:৫৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আমাদের মধ্যে যে রমজান আসল্ শিক্ষাটাই নাই। রমজান কে আমরা তাই বানিয়েছি ব্যাবসার মাস।
২৮ জুন ২০১৫ রাত ০১:৫৯
269998
মোঃ মাকছুদুর রহমান লিখেছেন : ঠিক বলেছেন, ধন্যবাদ!
327727
২৮ জুন ২০১৫ রাত ০১:৫৮
মোঃ মাকছুদুর রহমান লিখেছেন : ঠিক বলেছেন, ধন্যবাদ!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File