মা! তোমার জন্য আবার দিবস লাগে নাকি?! =============================
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ মাকছুদুর রহমান ১০ মে, ২০১৫, ০৮:০৫:০৫ সকাল
✍✍✍এমনিতেই এই জাতির মরা দিবস,আর জ্যান্ত দিবসের অভাব নাই!
তার উপর আবার বিজাতীয়দের সভ্যতার ফ্যাক্টরি থেকে আমদানি করা হয় হরেকরকম দিবস!
বছরজুড়ে সারা বিশ্বে নানা রকমের দিবস
পালন করা হয়। ছোট বেলায় এতো এতো দিবস
পালনের হিড়িক পড়তো কিনা মনে পড়ে না।
যতোই বড় হচ্ছি ততোই যেনো বাড়ছে দিবসের
বিস্তৃতি। একদিন বন্ধু দিবস তো পরের দিন
ভালোবাসা দিবস! বৃহস্পতিবার শিক্ষক দিবস
তো শুক্রবারে চলে আসে বাবা দিবস!
☞আমিতো শংকিত,কবে আবার এইসব আবাল দিবস, গরু দিবসের জন্য এই গরিব দেশে একটা "দিবস বাস্তবায়ন মন্ত্রণালয়"এর প্রয়োজন হয়ে পড়ে!
এই যে এতো এতো দিবস এগুলোর উদ্দেশ্য কী
আসলে? আদৌ কোনো উদ্দেশ্য আছে তো!
নাকি অযথাই এক ধরনের ঘোরের মধ্যে ডুবে
থাকা? আমার নিজের কাছে এইসব দিবস-
টিবস খুবই বিরক্তিকর একটি বিষয়।
এইসব আজাইরা দিবস-টিবসের প্রয়োজন আমাদের আছে বলে মনে হয়না!
এটাতো তাদের জন্য প্রয়োজন,
⇨যারা কুকর্ম ঢাকাদিতে ফ্লাশ বাটনের সাহায্যে
সন্তানদের সোজা টয়লেটের পাইপলাইনে
পাঠিয়ে দেয়া হয়!
⇨যারা স্মার্টনেস ধরে রাখার জন্য আপন সন্তানকে বঞ্চিত কিরে মাতৃদুগ্ধ থেকে!
⇨যারা আপন সন্তানকে হুইল চেয়ারে রেখে কুকুরের বাচ্চাটা কোলে তুলে নেয়!
অতঃপর তাদের সেই সন্তান গুলো সময়ের ভেবোধানে বৃদ্ধ মাতাপিতার সেবা করার ভয়ে দিয়ে আসে বৃদ্ধাশ্রমে!!
ঐ সব কথিত আধুনিক সভ্যতার দাবীদার পাশ্চাত্য রাষ্ট্র গুলোতে এন দিবস,তেন দিবসের প্রয়োজন থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের দেশে নয়!
ভালোবাসার জন্য আবার দিবস লাগে নাকি!
☆ভালোবাসা তো প্রতিদিনের। তা সে
ভালোবাসা প্রিয়সীর জন্য হোক বা ছোট
ভাইটার জন্য হোক। আমার কাছে
ভালোবাসার বিস্তৃতি পুরো জীবনজুড়ে।
জীবনের প্রতিটি মূহূর্তে।
আজকাল যে ভালোবাসা দিবস পালন করা (!)
হয়, তাকে আমার কাছে শুধুমাত্র আদিখ্যেতা
লাগে। আমার কাছে ভালোবাসা দিবস
পালনের নামে যা কিছু করা হয়, সেগুলোকে
লাগে সস্তা ন্যাকামি। কখনো কখনো ‘ডিজুস
জেনারশেনের’ ভালোবাসা আমার কাছে
শুধুমাত্র বেহায়াপনা মনে হয়। আফসোস লাগে
তাদের ভালোবাসা প্রকাশের ভাবনা ও
উপায় দেখে।
✮একইভাবে স্কুলে একসাথে দশটা বছর পড়ে
আসার পর নতুন করে বন্ধুকে বন্ধু ভাবার জন্য
আমার দিবস লাগে না। মন খারাপ হলে
এমনিই আমি বন্ধুর কাঁধে হাত রেখে একটা
বিষন্ন বিকেল কাটিয়ে দিতে পারি। তা
বিকেলটা বন্ধু দিবসে আসুক বা না আসুক।
স্কুল বন্ধুকে তথাকথিত বন্ধু দিবসে কোনো
গিফট দিতে ইচ্ছে করে না আমার। আমি
কর্পোরেট জোয়ারে ভেসে যেতে চাই না
প্রিয় বন্ধুর সাথে। প্রিয় শিক্ষকের সাথে
আমার সম্পর্কটা দৃঢ় থাকে একটা ফোন কলে।
বা একবার দেখা হয়ে গেলে আমি যে লম্বা
করে সালাম দেই, তাতেই জানি শিক্ষকের
চোখটা ছলছল করে উঠে। আমাকে কাছে
ডেকে যে তিনি বলে দেন, কী রে খবর কি
তোর? এটিই আমার কাছে প্রিয় শিক্ষকের
সাথে সম্পর্ক। এর জন্য শিক্ষক দিবসে গিফট
কিনতে যেতে হয় না আমার। শিক্ষকের
দেওয়া শিক্ষাটা মেনে চলাই শিক্ষকের
জন্য আমার সেরা গিফট।
✎দিবস পালনের কর্পোরেট ভাবনা থেকে
বাবাকেও দূরে রাখতে চাই। আমার প্রতিটি
নিঃশ্বাসেই তো বাবা মিশে থাকেন। সেই
বাবাকে আবার কিভাবে পালন করবো! বাবা
তো রক্তের প্রতিটি কণিকায় মিশে থাকা
শ্রদ্ধার নাম। বিশেষ দিনে সেই শ্রদ্ধাকে
আমি আলাদাভাবে কিভাবে কী করবো!
আমার হাসি পায়!
❂মা দিবস বলেও একটা দিবসের আমদানি হয়েছে।
আমার তো কবে কিভাবে এই আমদানি; আমার
তা জানতে ইচ্ছে করে না। কেনোই বা ইচ্ছে
করবে! মা’র জন্য আমার কোনো দিবস লাগে
না। দিবস পালনের এই ভিনদেশি রীতিতে
আমার কোনো বিকার নেই। থাকাও উচিত না।
আমি যেদিন থেকে সব কিছু বুঝতে শিখেছি, সেই দিন থেকেই আমি আমার মা'কে প্রতিটি মূহূর্তেই ভালোবাসি!
কোনো স্পেশাল দিন কিংবা মূহূর্তের জন্য নয়,আমরা পরস্পর পরস্পরকে ভালোবাসি জীবনের প্রতিটি মূহুর্তে!
বিষয়: বিবিধ
১২১২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এসব গ্রহনের ফলাফলও তাই ভাল হয় না ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন