পরিবারে এবং দাওয়া দেওয়ার আল্লাহর শ্রেষ্ট মূলনীতি(ভিডিও সাবটাইটেলসহ)(ইমাম আবু হানিফা(র)এর জীবনী থেকে শিক্ষা)
লিখেছেন লিখেছেন নুমান আলী খান কালেকশন বাংলা ২৭ মার্চ, ২০১৫, ০৯:৪১:৩৫ সকাল
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ইমাম আবু হানিফা (রঃ)’র একটি মজার ঘটনা বলি শুনুন। জানেন তো ইমাম হানিফা কে। তার সময়কার একজন অসাধারন ফকিহ, লোকেরা তাঁর কাছে সবসময় আসতো ফতওার জন্য। একদা তাঁর মায়ের মনে একটি প্রশ্ন আসে। তাকে (ইমাম আবু হানিফাকে) জিজ্ঞাসা করলে, তিনি তাঁর মাকে সেই প্রশ্নের উত্তর দেন। তাঁর মা ইমাম আবু হানিফার কথা উড়িয়ে দেন। আপনার মা আপনার সাথে এটা করতেই পারেন, তাই না? তাঁর মা সিদ্ধান্ত নিলেন আরেকজনকে জিজ্ঞাসা করবেন। যাকে তিঁনি জিজ্ঞাসা করতে চাচ্ছিলেন, সেই ব্যক্তিটি দাঈ’ ছিলেন, আলেম ছিলেন না। তিনি মানুষকে দ্বীনের ব্যাপারে স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন, তাক্কওয়ার ব্যাপারে বলতে পারেন, তবে তিনি ইসলামিক ফিকহ বা শরিয়া’র ব্যাপারে জানেন না। তো, ইমাম আবু হানিফার মা সেই ব্যক্তিকে উনার প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন। সেই ব্যক্তিটি ইমাম আবু হানিফার মাকে বললেন যে তিনি একটি গবেষণা করে তারপর উত্তর দেবেন। সেই দাঈ’ কার দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়ান? ইমাম আবু হানিফার! ইমাম কে জানান যে তাঁর মাতা উনার কাছে এসেছিলেন একটি প্রশ্ন নিয়ে। ইমাম আবু হানিফা (সেই প্রশ্নের) উত্তর তো দিয়ে দিলেন, তবে মানা করে দিলেন বলতে যে ইমাম আবু হানিফা বলে দিয়েছেন। হা হা।
মাঝে মাঝে আপনার পরিবারে এমন লোকজন থাকবে যারা আপনার কথা শুনতে অনিচ্ছুক। হতে পারে আপনি দ্বীনের অনেক কাছাকাছি চলে এসেছেন। তবে (হয়তো) তারা দ্বীনের এতো নিকটবর্তী নয়। ব্যাপারটি আপনাকে উত্তেজিত করে। পরিবারের কেউ হিজাব পরিধান না করাতে আপনি রাগান্বিত হন। পরিবারের কিছু তরুনের সালাত আদায় না করা আপনাকে ক্রোধান্বিত করে তোলে।
আপনি তাদের উপর চড়াও হন। না! তাদের প্রতি রাগ পোষণ করবেন না, তাদের সা্থে শান্তিপূর্ণ ভাবে কথা বলুন। নম্রতার সহিত কথা বলুন। আপনার রুষ্টতা তাদেরকে দ্বীন থেকে আরও দূরে সরিয়ে নিবে, দ্বীনের কাছে আনবে না। আপনার অন্তর নরম করুন তাদের জন্য যারা এখনও সেই লেভেল এ পৌঁছায় নি। আপনি নিজেই তো পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতেন না। এমন একটি সময় ছিল যখন আপনি এরকম ছিলেন না। কেউ যদি রাগান্বিত কণ্ঠে আপনার সাথে কথা বলত, আপনি কি নামাজ পড়তে যেতেন, না কি আরও দূরে চলে যেতেন? সেই ব্যাপারে চিন্তা করুন না! চিন্তা করুন! আল্লাহ্ আপনার কলব কে কোমল করেছেন। এখন আপনি অপেক্ষা করুন যতক্ষণ না আল্লাহ্ তাদের অন্তরকে নরম না করেন। এবং আপনাকে সবার সাথে নম্র হতে হবে।
আমি লোকদের মনে করিয়ে দেই যে আল্লাহ্ আজ্জা ওয়া জাল মুসা (আঃ) কে বলেছেন ফেরাউনের সাথে ভাল ব্যবহার করতে। সৎ ব্যবহার করতে ফেরাউনের সাথে!
ফেরাউন মুসা (আঃ) কে হত্যা করার চেষ্টা চালিয়েছিল যখন মুসা (আঃ) কেবল মাত্র শিশু! ফেরাউন প্রতি বছর হাজার হাজার শিশুকে হত্যা করত! সে নিজেকে খোদা দাবি করেছিল! ফেরাউনকে ঘৃণা করার যে কত কারন রয়েছে! এবং আল্লাহ্ বলেন, তার সাথে নম্রভাবে কথা বল।
যদি ফেরাউনের সাথে ভাল ব্যবহার করতে হয়, তবে কিরুপ ব্যবহার করা উচিৎ আপনার স্ত্রীর সাথে? আপনার স্বামীর সাথে? আপনার সন্তানদের সাথে? আপনার মামাতো/চাচাতো ভাই-বোনদের সাথে? আপনার ভাই, আঙ্কেলের সাথে? এরা আমাদেরকে রাগান্বিত করেন। এরাই। পরিবার আমাদের কে রাগান্বিত করে। আমি জানি। ভাইবোনেরা আপনাকে রাগিয়ে দেয়। এরাই কিন্তু আমাদের সবচাইতে নম্র আচরনের/প্রতিক্রিয়ার দাবিদার/প্রাপ্য। তাদের সাথে আচরনে আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে।
প্রয়োজনীয় লিংকসমূহ----------------------------
ফেইসবুক - https://www.facebook.com/NAKBangla
ইউটিউবঃ YouTube.com/NAKBangla
আর্টিকেলঃ FB.com/NAKBangla/notes
অডিওঃ soundcloud.com/NAKBangla
ভিমিওঃ vimeo.com/NAKBangla
অন্যান্যঃ
উস্তাদ নুমান আলী খানের ইংরেজী লেকচারসমূহঃYouTube.com/NAKcollection
উস্তাদ নুমান আলী খানের তাফসীরের অনুপ্রেরণায় বাংলায় সাইটঃ quranerkotha.com
বিষয়: বিবিধ
১৩৭৬ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন