ধর্ম পার্থক্য
লিখেছেন লিখেছেন একলা আগুন্তক ২৫ নভেম্বর, ২০১৪, ১১:৩৩:১২ রাত
★ইসলাম ও ইহুদি ধর্মের কিছু সাদৃশ্য★
সাধারণত মুসলমানরা ইহুদিদের
দেখতে পারে না। ইহুদিরাও সাধারণত
মুসলমানদের দেখতে পারে না। তবে ইসলাম ও
ইহুদি ধর্মে পার্থক্য যেমন আছে,
তেমনি বেশ কিছু ক্ষেত্রে সাদৃশ্যও
আছে।
১.
মুসলমান ও
ইহুদিরা একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী।
সৃষ্টিকর্তা এক এবং তাঁর কোন শরীক
নেই।
২.
মুসলমান ও ইহুদিদের মতে, তাদের জাতির
পিতা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) / আব্রাহাম।
সমগ্র মানব জাতির পিতা হযরত আদম (আঃ) /
অ্যাডাম।
৩.
মুসলমানরা প্রতিদিন পাঁচ বার (ভোরে ,
দুপুরে , বিকেলে , সন্ধ্যায় ও রাতে)
নামাজ আদায় করে। ইহুদিরা প্রতিদিন
তিন বার (ভোরে, দুপুরে ও রাতে)
প্রার্থনা করে।
৪.
এই দুই ধর্মেই প্রার্থনার জন্য
কিবলা (দিক) আছে। মুসলমানদের
কিবলা মক্কার কাবা ও ইহুদিদের
কিবলা (দিক) জেরুজালেমের
প্রার্থনা স্থান।
৫.
মুসলমানদের জীবনে একবার হজ্জ্ব
করতে হয় মক্কায়। ইহুদিদের বছরে তিনবার
তীর্থ যাত্রা করতে হয় জেরুজালেমে।
৬.
মুসলমান ও ইহুদি পুরুষদের
খতনা (circumcision) করতে হয়।
৭.
দাড়ি রাখতে বলা আছে দুই ধর্মেই।
দাড়ি কাটা দুই ধর্মের
দৃষ্টিতে গুনাহ / পাপ।
৮.
সম্পদ দান করা দুই ধর্মেই অবশ্যপালনীয়
বিষয়। মুসলমানরা নিজের সম্পদের
একটি অংশ যাকাত হিসেবে দেয়।
ইহুদিরা তাদের সম্পদের একটি অংশ
প্রতি বছর চ্যারিটি হিসেবে দেয়।
৯.
মুসলমানরা কোনো ব্যাক্তিকে দেখলে
সালাম দেয়।
ইহুদিরা কোনো ব্যাক্তিকে দেখলে
সালোম / শালোম বলে। দুই শব্দের অর্থই -
শান্তি।
১০.
দুই ধর্মেই বিশেষ আইন রয়েছে।
মুসলমানদের জন্য শরীয়াহ আইন। ইহুদীদের
জন্য হালাখা আইন। এই দুই আইনেরই শাস্তির
বিধান কঠোর। জেনা (বিয়ে বহির্ভূত
শারীরিক সম্পর্ক) করা এই আইন
অনুসারে মারাত্মক অপরাধ।
জেনা করলে মুসলমানদের শরীয়াহ আইন
মোতাবেক ১০০ বেত্রাঘাত। ইহুদীদের
হালাখা আইন মোতাবেক পাথর
ছুড়ে মারা।
১১.
ইসলাম ধর্ম মতে, শুক্রবার সপ্তাহের
পবিত্র দিন ও বিশেষ ইবাদতের দিন -
জুম্মা। ইহুদি ধর্ম মতে শুক্রবার
সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত
সপ্তাহের পবিত্র সময় ও বিশেষ
প্রার্থনার সময়।
১২.
দুই ধর্মেই নির্দিষ্ট খাবারের
অনুমতি আছে। মুসলমানদের জন্য হালাল
খাবার। ইহুদিদের জন্য কোশার খাবার। দুই
ধর্ম মতেই পশুর রক্ত ও শুকরের মাংস
কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। একজন মুসলমান
ইহুদিদের কোশার খাবার খেতে পারবে।
একজন ইহুদী মুসলমানদের হালাল খাবার
খেতে পারবে। তবে মুসলমানদের জন্য
কোশারের মধ্যে অ্যালকোহল খাওয়ার
অনুমতি নেই কারন যে কোনো ধরনের
অ্যালকোহল মুসলমানদের জন্য হারাম।
১৩.
পশু জবাইয়ের নিয়ম দুই ধর্মেই প্রায়
এক ধরনের। মুসলমানেরা প্রতিটি পশু
জবাইয়ের আগে আল্লাহর নাম স্মরণ করে।
ইহুদিরা শুধু একবার প্রভুর নাম স্মরণ
করে একসাথে সব পশু জবাই করে।
১৪.
মেয়েদের ক্ষেত্রে দুই ধর্মেই মাথায়
কাপড় দেয়ার বিধান আছে, তবে ইসলাম
ধর্মে মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলেই
মাথায় কাপড় দেয়ার বিধান আছে। আর
ইহুদি ধর্মে মেয়ে বিয়ে করলে মাথায়
কাপড় বাধার বিধান আছে। নারী ও
পুরুষের জন্য শালীন কাপড় পরার বিধান
দুই ধর্মে আছে।
১৫.
পুরুষের টুপি পড়ার বিধান দুই ধর্মেই
আছে।
১৬.
ইবাদত/প্রার্থনার অংশ হিসেবে সারাদিন
পানাহার থেকে বিরত থাকার বিধান দুই
ধর্মেই আছে। মুসলমানদের রমজান মাসের
প্রতিদিন রোযা রাখা ফরজ আর ইহুদিদের
বছরে পাঁচটি বিশেষ দিনে পানাহার
থেকে বিরত থাকা অবশ্য পালনীয়।
১৭.
সন্তান জন্ম নিলে মুসলমানদের
অনেকে বাচ্চার কানের কাছে আযান
দেয়া হয়। ইহুদিরা অনেকে বাচ্চার
কানের কাছে শিমা দেয়।
১৮.
দুই ধর্মেই সুদ নিষিদ্ধ।
১৯.
ধর্মীয় দিনপঞ্জিকায় মাস নতুন চাঁদ
দেখে ঠিক করা হয় দুই ধর্মেই।
২০.
সন্তানের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে রাখার
সময় ছাগল বা ভেড়া জবাই দেয়া দুই
ধর্মেরই বিধান।
২১.
দুই ধর্ম মতেই জেরুজালেম হচ্ছে পবিত্র
নগরী। মুসলিমদের জন্য
মক্কা হচ্ছে সবচেয়ে পবিত্র নগরী তারপর
মদীনা তারপর জেরুজালেম। ইহুদিদের
জন্য জেরুজালেম সবচেয়ে পবিত্র নগরী।
আগে মুসলিমদের
কিবলা জেরুজালেমে ছিলো।
পরে আল্লাহর নির্দেশে মক্কা নগরীর
কাবা হয় মুসলিমদের কিবলা।
২২.
কোরআন অনুসারে, অমুসলিমদের
মধ্যে একমাত্র ইহুদি-নাছারা জাতির
নারীর সাথে মুসলিম পুরুষের বিয়ের
অনুমতি আছে। আলেম ওলামাদের মতে এই
বিয়ে জায়েজ হবে তবে তা মাকরুহ/
পছন্দনীয় কাজ না। এই ধরনের
বিয়ে করলে শর্ত হলো সন্তান মুসলিম
হতে হবে।
২৩.
ইহুদি পুরুষরা প্রার্থনা করার সময়
মাথায় টুপি পরে। ইহুদিদের টুপির
সাথে মুসলমানদের টুপির মিল আছে।
২৪.
ইহুদি বিবাহিত মহিলাদের মাথায় কাপড়
দিয়ে চুল ঢেকে রাখা ও লম্বা কাপড়
পরা বাধ্যতামূলক। মুসলমান
যে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের
(বিবাহিত , অবিবাহিত) মাথায় কাপড়
দেয়া বাধ্যতামূলক ও শরীর
ঢেকে রাখতে লম্বা কাপড় পড়ার বিধান
আছে।
বিষয়: বিবিধ
১৩৭৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এটা ঠিক সব ধর্ম কিন্তু আগে এক ধর্ম ছিল।।।
ধর্মের মূল বিষয় প্রায় একরকমই! পরিবর্তন-পরিবর্ধনের কারনে বর্তমানে অন্যান্ন ধর্ম একেবারেই অগ্রনযোগ্য-বাতিল হয়ে গেছে!
ধর্মের মূল বিষয় প্রায় একরকমই! পরিবর্তন-পরিবর্ধনের কারনে বর্তমানে অন্যান্ন ধর্ম একেবারেই অগ্রনযোগ্য-বাতিল হয়ে গেছে!
মন্তব্য করতে লগইন করুন