ইসলামী আন্দোলন খুলনা বিভাগীয় মহাসমাবেশ
লিখেছেন লিখেছেন ইসলামের তলোয়ার ১৫ নভেম্বর, ২০১৪, ১২:৪৮:০৯ রাত
১৪ নভেম্বর’১৪ (শুক্রবার) ইসলামী আন্দোলন খুলনা বিভাগের উদ্যোগে ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বরে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়
ইসলামের উপর আঘাত হেনে আওয়ামী সরকারের শেষ রক্ষা হবে না -পীর সাহেব চরমোনাই
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, আওয়ামীলীগ সরকার সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস উঠিয়ে দিয়ে তদস্থলে ধর্মনিরোপেক্ষতাবাদ স্থাপন করে। মুসলমানদেরকে ধর্মহীন করার ব্যবস্থা করেছে। যেটা আমরা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারি না। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই এবং অনতিবিলম্বে সংবিধানে সংশোধনী এনে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ জোট সরকারের আমলেই সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ বেশ কিছু নাস্তিক-মুরতাদরা আসফালন করে যাচ্ছে। তাদের ব্যাপারে বর্তমান সরকার তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। আজকের এই বিভাগীয় মহাসমাবেশ থেকে দাবী জানাচ্ছি অতি সত্তর সংবিধানের মধ্যে নাস্তিক মুরতাদদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ শাস্তির আইন পাশ ও নাস্তিক আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। নাস্তিকদের ব্যাপারে আইন পাশের জন্য প্রয়োজনে গণভোটের ব্যবস্থা করা হোক। মুসলমানরা নাস্তিকদের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্যই রায় দিবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। ভোট কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই, জুলুম নির্যাতন চালিয়ে প্রহসণের নির্বাচন করে এবং ইসলামের উপর আঘাত হেনে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। সরকার বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংশ করে দিয়েছে। দেশের মানুষ আর এ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তারা জানে ক্ষমতা থেকে নামলে জনগণ তাদেরকে ইতিহাসের আস্তাকূড়ে নিক্ষেপ করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী বলেন ঘুষ দেওয়া-নেওয়া নাকি অপরাধ নয়। এ সরকার দুর্নীতির বৈধতা দিয়েছে। দুদক দুর্নীতি মুক্তির সার্টিফিকেট বিতরণ করছে। দুদক এখন দুর্নীতির আখড়া। পদ্মা সেতুর দুর্নীতি বিচার চলছে বিদেশে আর দুদক আসামীদের দায় মুক্তি দিয়েছে। শেখ হাসিনার ভাষায় এই দুর্নীতিবাজরা দেশ প্রেমিক। ৩৮ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে তারা। ব্যাংক গুলো দেউলিয়া হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, মুরতাদ লতিফ সিদ্দিকীর বিচারের দাবীতে গত ২০ অক্টোবর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগরের মিছিলে হামলা ও নেতা কর্মীদের গ্রেফতার করেছে। এতে প্রমাণিত হয় এই সরকার লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষের সরকার। দেশ এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাস, দূর্নীতি ও কায়েমী স্বার্থবাদ প্রতিহত করে সমাজের সর্বক্ষেত্রে খোদা ভীরু নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে খোদাভীরুতা না থাকায় সর্বত্র দুর্নীতিবাজরা রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটে পুটে খাচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ইসলামের সুমহান আর্দশে সবাইকে ফিরে আসতে হবে। আসুন দল-মত নির্বিশেষে সকলে মিলে বাংলার জমিনে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ি।
সংবিধানের মূল নীতিতে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পূনঃস্থাপন, মুরতাদ লতিফ সিদ্দিকীর নাগরিকত্ব বাতিলসহ সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত, আল্লাহ ও রাসুল সা.-এর দুশমন নাস্তিক মুরতাদদের শাস্তির আইন পাশ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, সু-শাসন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাস-দূর্নীতির মুলোৎপাটন, সকল বন্ধ মিল-কারখানা চালু, দ্রব্যমূল্যের উদ্ধগতি রোধ, আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতির প্রতিবাদ, সারা দেশে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য বন্ধের দাবী, দফায় দফায় জ্বালানী তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং দেশের স্থায়ী শান্তি, মানবতার সার্বিক মুক্তি ও সমৃদ্ধশালী কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের নিমিত্বে এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবীতে শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) খুলনার ঐতিহাসিক ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বরে বাদ জুমআ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর খুলনা বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ হাফেজ মাও. আব্দুল আউয়াল বলেন, স্বাধীনতার ৪৩ বছরে এদেশের জনগণ আজও সেই কাঙ্খিত মুক্তি ও শান্তির মুখ দেখে নাই। কারণ স্বাধীনতার পর থেকে যারা এ পর্যন্ত এদেশে ক্ষমতার মসনদে আছে এবং ছিল তারা দূর্নীতির মাধ্যমে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত রয়েছে।
অধ্যক্ষ মাও. ইউনুছ আহমাদ বলেন, দেশের এই কান্তিকালে ইসলাম, দেশ ও জনগণের সার্বিক শান্তি ও মুক্তির জন্য ইসলামী শাসনতন্ত্রের বিকল্প নেই। তাই এদেশে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের অন্যতম বৃহৎ ইসলামী দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশবাসীকে সাথে নিয়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। পীর সাহেব চরমোনাই-এর নেতৃত্বে হাতপাখা মার্কার প্রতি সমর্থন বাড়িয়ে সকলকে ইসলামের পতাকাতলে আসার আহ্বান জানান এবং নেতাকর্মীদের আরো দক্ষতার সাথে সাংগঠনিক ভাবে শক্তি অর্জন করার নির্দেশনা দেন।
শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, এদেশে বেশির ভাগ মানুষ শ্রমজীবি কিন্তু তাদের শ্রমের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং তাদের ন্যায্য দাবী পূরণ করা হয় না। খুলনার শিল্প নগরী আজ মৃতনগরীতে পরিণত হয়েছে। বন্ধ সকল মিল কলকারখানা অনতিবিলম্বে চালু করা এবং শ্রমিকদের গায়ের ঘাম শোকানোর আগে তাদের মজুরী প্রদান এবং ইসলামী শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠা করার জন্য শ্রমিকদেরকে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের পতাকা তলে সমবেত হয়ে শ্রমিকদের দাবী আদায়ের জন্য ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নে দূর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
ইশা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহা. আরিফুল ইসলাম বলেন, দেশব্যাপী ছাত্রলীগের তান্ডবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আজ অচালবস্থা। তাদের অনৈতিক কার্যকলাপে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মন্ডলী লাঞ্চিত। ভর্তি বাণিজ্য, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, যা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ছাত্র লীগের উদ্দেশ্যে বলেন লিখিত পরীক্ষাটা ভাল করে দাও, ভাইবা আমরা দেখবো। এতে করে যোগ্য মেধাবীরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। তার এই বক্তব্যের আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ইশা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের নামে মিথ্যা মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
আরো বক্তব্য রাখেন সহকারী মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাদের, কেন্দ্রীয় সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা মোঃ নেছার উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও ঢাকা মহানগর সভাপতি অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাওঃ লোকমান হোসেন জাফরী। কেন্দ্রীয় কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম নগর সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ জান্নাতুল ইসলাম, সৌদী আরব শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মাহমুদ খান, ঢাকা মহানগর প্রচার সম্পাদক এইচ এম সাইফুল ইসলাম এবং খুলনা জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
তারিখ: ১৪/১১/২০১৪ ইং
Website: http://www.islamiandolanbd.org
Email:
Facebook: http://www.facebook.com/iab87
http://www.facebook.com/votinhatpakha
Twitter: http://www.twitter.com/islamiandolanbd
Youtube: http://www.youtube.com/islamiandolanbd
বিষয়: বিবিধ
২২৪৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন