দক্ষিন অঞ্চলে উজাড় হচ্ছে সবুজ বেষ্টনি নিশানবাড়িয়া গইয়ামতলা জঙ্গলের সুন্দরী গাছের পিচ বিক্রি হয় ছয়শত টাকায়

লিখেছেন লিখেছেন কারিমা সামিয়া ১০ নভেম্বর, ২০১৪, ০৮:১১:৪৯ রাত

প্রলয়ংকারী ঘুর্নিঝড় সিডর আইলা ও মহাসেনের তান্ডব থেকে রক্ষাকারী সবুজ বেষ্টনি দক্ষিন অঞ্চলের প্রকৃতিক লিলাভূমী নিশানবাড়িয়ার গইয়াম তলা জঙ্গলের সুন্দরী গাছ বনকর্মকর্তাদের জোগ সাজসে অবাধে বিক্রি হচ্ছে। বরগুনা তালতলী উপজেলার বন বিভাগের নিশানবাড়িয়া বনের গাছ উজার করা হচ্ছে।কিছু বনবিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের জোগসাজসে ও স্থানীয় প্রভাবশালী দালালদের মাধ্যমে বন উজাড় করে নিজেদের পকেট ভাড়ি করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ ও সরেজমিনে দেখা গেছে।বন উজাড়ে স্থানীয়রা বাধাঁদিলে তাদেরকে বন আইনে মামলা দেয়ার হুমকিসহ বিভিন্ন মামলায় জড়ানোর ভয় দেখাচ্ছেন অসাধু বন কর্মকর্তারা। বন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করার জন্য চোরাকারবাড়িদের তথ্য দেয়া ও জড়িত বন কর্মকর্তাদের নাম উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে জানানোর কারনে স্থানীয় সচেতন বাসিন্দা কালাম মিরের বিরুদ্ধে একটি সাধারন ডায়েরী করেন অসাধু বিট কর্মকর্তা কামাল হোসেন।কালাম মিরা জানান, স্থানীয় জেলেরা বনের ভিতর মাছ ধরেন তাদের মাধ্যমে চোরা কারবাড়িদের অবস্থান বিট কর্মকর্তাকে বললে তিনি সময় ক্ষেপন করে অভিযানে যান যাতে পাচার কারিরা চলে যেতে পারে।এসব যদি হয় সরকারি কাজে বাধা তাহলে সরকারি কাজে সাহায্য হয় কি করলে এমনটি প্রশ্ন কালাম মিরের ।সাংবাদিকদের সাথে তিনি এসময় আরো বলেন,চোরা কারবাড়িদের অবস্থান আমি বিভিন্ন সময় তালতলী বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা ও পটুয়াখালী বনবিভাগের ডিউফোকে বলার পর মহিপুরের নিজামপুরে কয়েক দফায় মহিপুর বন কর্মকর্তারা গাছ জব্দ করেন।যার কারনে অসৎ এ কর্মকর্তার মুখোশ খুলে যাওয়ায় তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা সহ বিভিন্ন স্বরযন্ত্রের চেষ্টা করছে আর এ জন্যই তিনি আমার বিরুদ্ধে তালতলী থানায় মিথ্যা ডায়েরী করেন যার নং-১০৩ তাং ৩/১১/১৪ ইং।স্থানীয় ও বনের ভিতর অবস্থানরত জেলেদের সূত্রে জানাগেছে, পাচঁপিচ সুন্দরী গাছে একছেট যা চোরা কারবাড়িদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে ছয়শত টাকায়। এসব গাছ বিক্রি করছেন বনবিভাগের নিশানবাড়িয়া বিটকর্মকর্তা কামাল হোসেন ও বনরক্ষি মিজানুর রহমান (বিএম) ।চোরা কারবাড়িদের স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে গাছ বিক্রির টাকা লেনদেন করা হয় বলে জানা গেছে।সপ্তাহে যত গাছ পাচার করা হয় তার টাকা কালেকশন করা হয় প্রতি বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী জেলার মহিপুর বাজারে বসে। আর এ সব টাকা কালেকশন করছেন নিশানবাড়িয়ার বনরক্ষি মিজানুর রহমান (বিএম) ও তার ভাই মহিপুর বন বিভাগের বনরক্ষি নুরুল ইসলাম (বিএম)। সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে,তালতলীর নিশানবাড়িয়া সংরক্ষিত বন থেকে বন রক্ষিদের প্রত্যক্ষ জোগ সাজসে প্রতিদিন হাজার হাজার পিচ সুন্দরী গাছ কেটে পাচার করা হচ্ছে।নিশানবাড়িয়ার বন থেকে গাছ কেটে ছোট ছোট নৌকায় করে প্রথমে নেয়াহয় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নিজামপুর গ্রামের পার্শবর্তি খালের মধ্যে সুবিধামত সময় ঐখান থেকে দেশের বিভিন্ন যায়গায় সুন্দরী গাছ পাচার করা হয় বলে একটি নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা যায়। চোরা কারবাড়ির সাথে জরিত মহিপুরের নিজামপুর গ্রামের জয়নাল গাজীর পুত্র মহিউদ্দিন (২২) জানান, বনদস্যু হিসেবে পরিচিত পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলাধিন নিজামপুর গ্রামের নুরমোহাম্মাদ হাওলাদারের পুত্র শামসুল হক ও একই গ্রামের শেরজন মৃধার পুত্র আশ্রাফ মৃধা এসব অপকর্ম করছেন । তিনি এ সময় বলেন,প্রতি পাচঁপিচ গাছে একছেট হয় প্রতিছেট এর জন্য বনরক্ষিদেরকে দিতে হয় ছয়শত টাকা।বনের ভিতর পর্যটন স্পট গইয়াম তলায় যিনি ডিউটিরত থাকেন তার কাছে বলে ভোর রাতে চোরা কারবাড়িরা বনের ভিতর ঢুকে গাছ কাটে ওখান থেকে বাহির হয় সন্ধার পর ঐ সময় আবার ওখানে ডিউটিরত বন রক্ষিকে গাছ দেখিয়ে বের হয়ে যান বনদস্যুরা।চোরা কারবাড়িরা গইয়াম তলার খাল ও ফেচুয়ার খাল দিয়া এসব গাছ ট্রলার ও বড় নৌকা যোগে মহিপুর কলাপাড়া ও পটুয়াখালী পাচার করছেন।বনবিভাগের কর্মকর্তাদের জোগসাজসে এসব গাছ পাচার করা হচ্ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী জেলেরা জানান।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলে জানান,নিশানবাড়িয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সিদ্দিক মেম্বার ও জলিল মিরার মাধ্যমে অসৎ বন কর্মকর্তারা হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।জেলেরা এ সময় আরো বলেন,সিদ্দিক মেম্বার ফরেষ্টারদের ম্যানেজ করেন বিটঅফিসারের সাথে তার গভির সম্পর্ক রয়েছে।আগে মেম্বারি করে পরিবার চালাত আর এখন বন উজাড় করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে জানান,স্থানীয় বাসিন্দা কালাম মির।

তবে এসব কথা অস্বিকার করেন সাবেক এই মেম্বার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বনতো আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। নিশানবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানান,প্রতিদিন মহিপুরের ঐ পারের নিজামপুর গ্রামের নুরমোহাম্মাদ হাওলাদারের পুত্র শামসুল হক ও একই গ্রামের শেরজন মৃধার পুত্র আশ্রাফ মৃধা তার সাঙ্গপাঙ্গ দিয়া নিশানবাড়িয়ার সংরক্ষিত বন থেকে হাজার হাজার পিচ সুন্দরী গাছ কেটে পাচার করছেন।

এ ব্যাপারে নিশানবাড়িয়া বিট কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন,কিছু অসাধু ব্যাক্তিরা বন থেকে সুন্দরী গাছ কাটছে তবে এ চক্রটি ধরতে আমাদের অভিযান বাড়ানো হয়েছে। তালতলী বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো.আ.জলিল বলেন,বন রক্ষাত্রে আমাদের জনবল সহ অনেক সমস্যা রয়েছে এ কারনেই বন দস্যুদের ধরতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে পটুয়াখালী উপকূলীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) মিহির কান্তি দো বলেন,উপকূলীয় বন রক্ষাত্রে যে পরিমান জনবলের প্রয়োজন তা আমাদের যথেষ্ট নয়। এ কারনেই চোরা কারবাড়িরা গাছ কাটতে পারে, তবে এ কাজে যদি অফিসের কেহ জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেব।

বিষয়: বিবিধ

৯০৯ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

283039
১০ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৫৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এই গাছগুলি মানুষের জিবন রক্ষা করে। আমরা কতটা নিন্মে নেমে গেছি যে উপকূলিয় বেষ্টনির গাছ ধ্বংস করছি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File